স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, গাজীপুর:
হুমায়ূন আহমেদ কিংবা তার অবর্তমানে যারা উত্তরাধিকারী আছেন, তাদের সাথে কোনো ধরনের যোগাযোগ কিংবা চুক্তিপত্র ছাড়াই একদম অনৈতিকভাবে ইউটিউব এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মে তার সৃষ্টি নাটকগুলো প্রচারিত হচ্ছে। এমন অভিযোগ করেছেন নন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন।
বুধবার (১৯ জুলাই) সকালে সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন, দোয়া ও কোরান তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে পালন করা হয়েছে নন্দিত কথা সাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের ১১তম প্রয়াণ দিবস। সেখানেই এসব অভিযোগ করেন শাওন। গাজীপুরে হুমায়ূন আহমেদের গড়া নুহাশ পল্লীতে স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন ও তার দুই সন্তান নিনিত হুমায়ূন, নিশাত হুমায়ূনসহ অসংখ্য ভক্ত কবরে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। সকাল থেকেই কোরানখানিতে অংশ নেন স্থানীয় মাদরাসার ছাত্ররা। হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্টি করা নানা চরিত্র ধারণ করে ভক্ত অনুরাগীরা নুহাশ পল্লীতে আসতে থাকেন এবং শ্রদ্ধার সাথে হুমায়ূন আহমেদকে স্মরণ করে সমাধিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান।
লেখকের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে প্রয়াত লেখকের স্ত্রী মেহের আফরোজ শাওন হুমায়ুনের স্বপ্ন এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় পুনর্ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, দুই ছোট সন্তান অকালে পিতৃস্নেহ থেকে বঞ্চিত হয়েছে এই ব্যাপারটি ভীষণ কষ্টতাড়িত করে বেড়ায় এখনও। হুমায়ূন আহমেদ কত বড় মাপের একজন লেখক, পরিচালক ও গীতিকার ছিলেন, কত বড় মাপের সৃষ্টিশীল সত্তা ছিলেন, তার শূন্যতা তার অনুপস্থিতিতেই অনুধাবন করা যায়।
ওটিটি প্ল্যাটফর্মে হুমায়ুন আহমেদের পরিবারের অনুমতি ছাড়াই বিভিন্ন নাটক ও সিনেমা প্রদর্শন করা হচ্ছে। এই ব্যাপারটি বন্ধের দাবি জানান তিনি। বলেন, বিভিন্ন ওটিটি প্ল্যাটফর্ম ও ইউটিউব চ্যানেলে কোনো প্রকারের চুক্তিপত্র ছাড়াই হুমায়ূন আহমেদের নাটকগুলো প্রচারিত হচ্ছে। হুমায়ূন আহমেদের সাথেও তাদের কোনো চুক্তি ছিল না। উনার অবর্তমানে যারা উত্তরাধিকারী আছেন, তাদের সাথে কোনো ধরনের যোগাযোগ কিংবা চুক্তিপত্র ছাড়া একদম অনৈতিকভাবে ইউটিউব এবং ওটিটি প্ল্যাটফর্মে এসব প্রচারিত হচ্ছে। আমি নাম বলবো না, নামগুলো বললে হয়তো উনারাই লজ্জা পাবেন। বাংলাদেশের একদম সামনের সারির ওটিটি চ্যানেলগুলোতে উনার সৃষ্টি করা নাটকগুলো চালানো হচ্ছে কোনো ধরনের চুক্তিপত্র ও অনুমতি ছাড়া। আমার ধারণা, এটা যে হতে পারে না তা একজন সাধারণ মানুষও জানেন। এটা জানার জন্য আইনের লোক হতে হয় না। এটা খুবই দুঃখজনক। অভিযোগের কথা যদি বলতেই হয়, আমি অভিযোগ করেছি। সেই অভিযোগের কোনো জবাব এখনও পাইনি।
১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার কুতুবপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন নন্দিত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদ। তার বাবা ফয়েজুর রহমান ও মা আয়েশা ফয়েজ। ২০১২ সালে ১৯ জুলাই মরণ ব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে তিনি নিউইয়র্কের একটি হাসপাতালে মারা যান। পরে প্রয়াত লেখককে তার নিজ হাতে গড়ে তোলা গাজীপুরে নুহাশ পল্লীতে সমাহিত করা হয়।
উপন্যাস, ছোটগল্প, নাটক, চলচ্চিত্র ও গানসহ সৃজনশীলতার প্রায় প্রতিটি শাখায় তার সৃষ্টি স্মরণীয় হয়ে রয়েছে বাঙালির হৃদয়ে। গাজীপুরের নুহাশ পল্লীতে প্রতি বছর শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করা হয় এই দিনটিকে।
আরও পড়ুন: হুমায়ূন আহমেদ ছাড়া ১১ বর্ষা
/এম ই
Leave a reply