এলএলবি পরীক্ষায় রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) কর্তৃপক্ষের অবহেলায় অকৃতকার্য হয়েছিলেন যশোরের মুক্তিযোদ্ধা মুন্সী মহিউদ্দীন আহমেদ। তাকে ১৮ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। এই রায়ে ৩৮ বছর ধরে চলা আইনি লড়াইয়ের অবশেষে সুরাহা হলো।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত যশোরের শহিদ মশিউর রহমান কলেজ থেকে ১৯৮৫ সালে এলএলবি ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নেন মুক্তিযোদ্ধা মুন্সী মহিউদ্দীন। ফলাফলে এক বিষয়ে এক নম্বরের জন্য তাকে অকৃতকার্য দেখানো হয়। এরপর ওই ফলাফল চ্যালেঞ্জ করে খাতা পুনঃনীরিক্ষণের জন্য আবেদন করেন তিনি।
আদালতের হস্তক্ষেপে ১৭ বছর পর ২০০১ সালে সংশোধিত ফল ঘোষণা হয়। হাতে পান সার্টিফিকেট। এরই মাঝে চলে গেছে তার জীবনের সোনালি সময়। পরে এ ঘটনার ক্ষতিপূরণ চেয়ে আইনি লড়াই চালিয়েছেন তিনি। চার দশক ধরে চলা আইনী লড়াইয়ে অবশেষে ১৮ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণের রায় দেন উচ্চ আদালত।
মুন্সী মহিউদ্দীন আহমেদ একজন মুক্তিযোদ্ধা। স্বাধীন দেশে মেহনতি মানুষের জন্য আইনী সহায়তা দেয়ার স্বপ্ন দেখেছিলেন তিনি। কিন্তু, জীবনের শেষ পর্বে এসে যখন লড়াইয়ে জিতলেন, তখন তিনি বিছানায় শায়িত। ২০১০ সাল থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে মোট পাঁচবার ব্রেইন স্ট্রোক করেন এই মুক্তিযোদ্ধা। কয়েক দফা ব্রেইন স্ট্রোকে তিনি পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয়ে পড়েন। ক্ষতিপূরণের দাবি নিয়ে বিভিন্ন সময় রাবি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও রাবি কর্তৃপক্ষ তাকে কিছুই জানায়নি। এতোদিন বাবার নির্দেশে হাল না ছেড়ে আইনি লড়াইটা চালিয়ে গেছেন তার ছেলে।
মুন্সী মহিউদ্দীনের ছেলে আসিফ শাহরিয়ার সৌম্য বলেন, আমার বাবা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। তিনি পক্ষাঘাতগ্রস্ত। সব মিলিয়ে একটা কঠিন সময় পার করছি। আশা করছি, রাবি কর্তৃপক্ষ রায় মেনে নিয়ে নির্দেশনা বাস্তবায়ন করবে। তার বাবার সুস্থতা কামনায় দেশবাসীর কাছে দোয়া চান তার সন্তান।
/এএম
Leave a reply