আখাউড়া প্রতিনিধি:
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া কেল্লা বাবার মাজার এলাকায় চলন্ত ট্রেনের ধাক্কা ও প্রাণ বাঁচাতে রেল সেতু থেকে নদীতে লাফিয়ে পড়ে ৪ জনের প্রাণহানির ঘটনায় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে রেলওয়ে ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ।
আগামী ৭ কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত সম্পন্ন করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে। বিভাগীয় রেলওয়ে ব্যবস্থাপক (ঢাকা) মো. শফিকুর রহমান চার সদস্যদের এ কমিটি গঠন করেন।
রেলওয়ে সূত্র জানায়, রেল সেতুতে ঘটনার তদন্তে আখাউড়া সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী (রেলওয়ে) মেহেদী হাসান আহমেদ তারেককে কমিটির আহবায়ক করা হয়েছে। কমিটিতে রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর ঢাকা বিভাগীয় অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডেন্ট মো. ফিরোজ আহমেদসহ একজন চিকিৎসা কর্মকর্তা এবং একজন সহকারী বাণিজ্যিক কর্মকর্তাকে কমিটির সদস্য রাখা হয়েছে। কমিটিকে ৭ দিনের মধ্যে তদন্ত কাজ সম্পন্ন করে ডিআরএম (ঢাকা) বরাবরে প্রতিবেদন দাখিল করার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
খবর নিয়ে জানা গেছে, আখাউড়ায় খরমপুরের প্রখ্যাত আউলিয়া শাহ্ ছৈয়দ আহাম্মদ গেছুদারাজ (রহ.) শাহ্পীর কেল্লা বাবার মাজারে ওরস শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট)। সপ্তাহব্যাপী ওরস এবং মাসব্যাপী মেলাকে কেন্দ্র করে লাখো ভক্ত-আশেকানের সমাগম ঘটেছে মাজার এলাকায়। ওরসে আগত আশেকানরা মাজারের পশ্চিম পাশের রেলসেতুর ওপর দিয়ে পারাপার হচ্ছিলেন।
একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানান, ওইদিন সিলেট থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী আন্তঃনগর পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেনটি বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ৯টার দিকে খরমপুর মাজারের পশ্চিম পাশে রেল সেতু অতিক্রম করে। এ সময় সেতু দিয়ে মাজারে আগত ভক্তরা ট্রেন দেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। এ সময় চলন্ত ট্রেনের ধাক্কা ও অনেকেই প্রাণ বাঁচাতে তিতাস নদীতে ঝাঁপিয়ে পড়েন।
খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিস, নৌ-পুলিশ ও রেলওয়ে পুলিশ পৃথকভাবে উদ্ধার অভিযান চালায়। অভিযানে ওই দিন রাতেই ২ জন এবং পরদিন (শুক্রবার) সকালে ও দুপুরে নদী থেকে আরও দুই জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন, নরসিংদী জেলার মাধবদি থানার নোয়াকান্দি গ্রামের মৃত গাজী মিয়ার ছেলে শুকুর মিয়া (৬০), একই জেলার পলাশ উপজেলার মোতালেব মিয়ার ছেলে মোজাম্মেল (৩৫), নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াই হাজার উপজেলার চিলকান্দি গ্রামের তমিজ উদ্দিন ভূঁইয়ার ছেলে মতি ভূইয়া (৫৫) এবং অন্যজন নোয়াখালী জেলার চৌমুহনীর বাসিন্দা বলে রেলওয়ে পুলিশ নিশ্চিত করেছেন।
জানতে চাইলে আখাউড়া সহকারী নির্বাহী প্রকৌশলী (রেলওয়ে) মেহেদী হাসান আহমেদ তারেক সাংবাদিকদের বলেন, দুর্ঘনার দিনই ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। শনিবার দুপুরে আমরা তদন্ত কার্যক্রম শুরু করছি।
তিনি আরও বলেন, কেল্লা বাবার মাজার শরীফের ওরস উপলক্ষে যেহেতু লাখো ভক্ত -আশেকানে সমাগম হয় সেজন্য এসএসওয়ে/আখাউড়া ট্রেন চালককে মাজার এলাকায় হর্ন বাজিয়ে দেখে শুনে ধীরে ট্রেন চালানোর জন্য ওরসের আগের দিনই নির্দেশনার প্রদান করা হয়েছিল। কেল্লা বাবার মাজারে সাত দিনব্যাপী বাৎসরিক ওরস মোবারকে আগামী ১৪ আগস্ট রাত ১২টা ১ মিনিটে অনুষ্ঠিত হবে বিশেষ মোনাজাত। তাছাড়া ১৬ আগস্ট বুধবার পর্যন্ত সপ্তাহব্যাপী ওরস এবং মাসব্যাপী মেলা চলবে বলে মাজার কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছেন।
/আরআইএম
Leave a reply