নরসিংদীতে হাসপাতালে চিকিৎসকদের ওপর রোগীর স্বজনদের হামলার ঘটনা বাড়ছে। ভুল চিকিৎসার অভিযোগ তুলে এসব হামলা করা হয়। সংকটের মাঝেই ২৪ ঘন্টা সেবা দিয়ে যাচ্ছেন চিকিৎসকরা।
এক সিসিটিভির ফুটেজে দেখা যায়, গত মে মাসে নরসিংদী জেলা সদর হাসপাতালের সহকারি সার্জনকে লাঞ্ছিত করে রোগীর স্বজনরা। জানা যায়, হৃদরোগে আক্রান্ত বৃদ্ধাকে হাসপাতালে নেয়া হলে তাকে রাজধানীতে পাঠানোর পরামর্শ দেন সহকারি সার্জন। কিছুক্ষণ পর রোগীর মৃত্যু ঘটলে হাসপাতালে এসে সহকারী সার্জনের ওপর নির্যাতন চালায় রোগীর ক্ষুব্ধ স্বজন। একই মাসে রোগীর স্বজনদের হামলার শিকার হন হাসপাতালের আরএমও।
নরসিংদী জেলা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার মাহমুদুল কবীর বাশার বলেন, গাছ থেকে পড়ে যাওয়া রোগীকে আমরা চিকিৎসা করেছি। পুলিশ কেস করবে বলে পরে মেডিকেল সার্টিফিকেট দাবি করে সেই রোগী। এটা নিয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। পরে ডাক্তারদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে যায় তারা। হাসপাতালটির সেই সহকারি সার্জন বিএম আব্দুল্লাহ আল সিয়াম জানান, রোগীকে দ্রুত ঢাকায় নিয়ে যেতে বলি আমরা। বারবার বলি। তারা ঢাকায় না নিয়ে মারমুখী হয়ে যায়।
প্রতিদিনই সদরসহ বিভিন্ন এলাকার মানুষ আসেন এই হাসপাতালে। নানা সংকটেও তাদের সেবা দেন চিকিৎসকরা। তবু মাঝেমধ্যে হামলার শিকার হন তারা। এতে চরম নিরাপত্তাহীনতায় চিকিৎসক সমাজ। হাসপাতালটির মেডিকেল অফিসার শামীমা নাসরিন বলেন, এটা শুধু ডাক্তারদেরই দায়িত্ব নয়। রোগী এবং প্রশাসনকেও দায়িত্বশীল হতে হবে। আরেক মেডিকেল অফিসার বিপাশা মাশুকের বক্তব্য, মাঝেমাঝে ডাক্তার আর রোগী মুখোমুখি অবস্থানে থাকে। কেউ যদি আমাদের ওপর মারমুখী হতে যায়, আটকাবে কে তাকে?
এ বছর সদর হাসপাতালের চারজন চিকিৎসকের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। এলাকাবাসীর দাবি, চিকিৎসকদের ওপর এমন হামলার পেছনে স্থানীয় প্রভাবশালীরা দায়ী। এমন অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান পুলিশ কর্মকর্তা। সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবুল কাশেম ভূইয়া জানান, প্রত্যেকটি ঘটনায় দ্রুততম সময়ের মধ্যে যথাযথ আইনগত পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। হাসপাতালে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাসও দিয়েছেন তিনি।
উল্লেখ্য, নরসিংদী জেলা সদর হাসপাতালে ১৪ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক ও ১০৮ জন নার্স কর্মরত রয়েছেন।
/এএম
Leave a reply