স্বপ্ন ছিল সেমিফাইনাল, ফাইনাল হয়ে শিরোপা পুনরুদ্ধারের। আর হলো কি! টানা দুই ম্যাচ জয়ের পর নেপালের কাছে এভাবে হার! সাফ জয়ের স্বপ্নভঙ্গ। উড়তে থাকা বাংলাদেশের হঠাৎ কেন এমন হাল? সেই উত্তর খোঁজার চেষ্টা করেছেন এহ্তেসাম সবুজ।
১. কারিয়াস ভূত:
নেপাল-বাংলাদেশের এই ম্যাচটি অনেকেই রিয়াল-লিভাপুলের চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালের সঙ্গে মিলিয়ে নিয়েছেন। অন্তত, গোলরক্ষক সোহেলের পারফরম্যান্সের কারণে তুলনাটি উড়িয়ে দেয়া যাচ্ছে না। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেই ফাইনালে কারিয়াসের এক ভুলে ১ যুগ পর শিরোপা জেতা হয়নি লিভারপুলের। আর বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে সোহেলের একই রকম ভুলে ৯ বছর পর সাফের সেমিতে খেলা হলো না বাংলাদেশের। চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেই ম্যাচের পর মাঠে কান্নায় লুটিয়ে পড়ে তাৎক্ষণিকভাবে দর্শক আর ক্লাবের কাছে হাত জোড় করে ক্ষমা চেয়েছেন কারিয়াস। পরে অনুসন্ধানে জানা যায় তার এমন ভুলের পেছনে ছিল তার ব্রেইনফ্রেড। আর সোহেলের সমস্যাটা কোথায় ছিল? হয়তো অভ্যাসটাই তার কাল হয়ে দাড়িয়েছে। কেননা শ্রীলঙ্কা বিপক্ষে সবশেষ প্রীতি ম্যাচসহ এমন ভুল বারবারই করে যাচ্ছেন এই গোলরক্ষক। ফ্লায়িং বলে দুর্বলতা আর একের পর বাজে ফিস্ট দলে তার অন্তর্ভুক্তিকেই প্রশ্নের মুখে ফেলে দিয়েছে।
২. মন্থর গতির ফুটবল:
নেপালের বিপক্ষে পুরো ম্যাচে চোখে পড়ার মতো একটিও কাউন্টার অ্যাটাকে যেতে দেখা যায়নি বাংলাদেশকে। অথচ, নেপালের দ্বিতীয় গোলটি এসেছে চমৎকার এক কাউন্টার অ্যাটাক থেকে। প্রথম গোল খাওয়ার পর বাংলাদেশের জন্য যখন ম্যাচটি বাঁচা মরার লড়াই তখন যেকোনো দলই আক্রমণের পসরা সাজিয়ে বসে। লম্বা পাসে বল রাখতে চায় প্রতিপক্ষের ঘরে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত একই ধাঁচে ছোট ছোট পাসে খেলা শেষ করেছে বাংলাদেশ। তুলনায় অনেক বেশি গতিশীল ফুটবল খেলেছে নেপাল।
৩. ব্যর্থ ফরোয়ার্ড লাইন:
যারা গোল করেন তারা মূলত দুই ধরনের হয়। এক সুযোগ সন্ধানী, পজিশন নিয়ে দাঁড়িয়ে থেকে বল পেলেই গোল করে যারা। অনেকটা ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর মতো। আরেকটা দল আছে, লিওনেল মেসির মতো, বলটাকে একটু পেছন থেকে নিয়ে এসে একটু কারুকাজ করে গোল দেয় যারা। বাংলাদেশি ফরোয়ার্ডদের কোন শ্রেণিতে ফেলবেন? গ্রুপ পর্বের ৩ ম্যাচে মাত্র একটি গোল ফরোয়ার্ডদের, পাকিস্তানের বিপক্ষে তা করেছেন মাহবুবুর রহমান সুফিল। ৩ ম্যাচে ২ জয় পেলেও বাংলাদেশ গোল করেছে মোটে ৩টি। আক্রমণভাগের নির্লিপ্ততায় মাঠে কোনো নিয়মিত স্ট্রাইকার আছে কিনা সেটি নিয়েই সংশয় তৈরি হয়।
প্রত্যাশা, এই হারের ব্যবচ্ছেদ করে সেখান থেকেই এগিয়ে যাওয়ার কর্মপরিকল্পনা দাঁড় করাবে বাংলাদেশ। পাশাপাশি, ঘরোয়া লিগে দেশি স্ট্রাইকারদের তৈরি হওয়ার মতো সুযোগ তৈরি করবে বাফুফে।
যমুনা অনলাইন: এএস/টিএফ
Leave a reply