৪টি ধারা অজামিনযোগ্য রেখে আলোচিত সাইবার নিরাপত্তা বিল পাস

|

বহুল আলোচিত সাইবার নিরাপত্তা বিল ২০২৩ এর অনুমোদন দিয়েছে সংসদ। বুধবার (১৩ সেপ্টেম্বর) বিকেলে সংসদে বিলটি উপস্থাপন করেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক। এ সময় বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা এই আইনের কয়েকটি ধারার বিরোধিতা করেন। তবে কন্ঠভোটে পাস হয় বিলটি।

নতুন করে আনা এই বিলের বিভিন্ন দিক নিয়ে সমালোচনা করে বিরোধী দলের সংসদ সদস্যরা বলেন, সাইবার নিরাপত্তার বিষয়টি অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। তবে এর কিছু ধারা নিয়ে আপত্তি করেন তারা।

জাতীয় পার্টি থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার শামীম হায়দার পাটোয়ারী বলেন, এটা আপাতত দৃষ্টিতে সংবিধান বিরোধী। আপাতত দৃষ্টিতে বাক-স্বাধীনতার পরিপন্থী।

দলটির আরেক সংসদ সদস্য ও মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু বলেন, এটা যেহেতু আলোচিত আইন, এজন্য জনমত যাচাই করতে প্রস্তাব করছি।

জবাবে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী বলেন, জনগণের সুরক্ষার জন্য ডিজিটাল সিকিউরিটি অ্যাক্ট ২০১৮ করেছিল সরকার। আগের আইনটি রহিত করে সময়ের প্রয়োজনে নতুন আইন করা হচ্ছে। সাইবার নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেই বিলটি আনা হয়েছে। আমরা যেগুলোকে যৌক্তিক মনে করেছি, সেগুলো মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ করেছেন।

এরপর, জনমত যাচাইবাছাই কমিটিতে বিলটি পাঠানোর জন্য বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের প্রস্তাব কণ্ঠভোটে নাকচ হয়। পরে আইনের কয়েকটি ধারায় সংশোধনীর প্রস্তাব দেন তারা। বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনের কিছু ধারা মুক্ত ও স্বাধীন সাংবাদিকতাকে হুমকিতে ফেলতে পারে।

জবাবে তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বলেন, ১৭, ১৯, ২৭ ও ৩৩— এই চারটি ধারা শুধু অজামিনযোগ্য; বাকি সব ধারা জামিনযোগ্য। যাতে করে এই আইনের ফলে কোনো সাংবাদিক, সাহিত্যিক, কোনো সাধারণ জনগণ তাদের লেখা বা অন্য কোথাও ভীতিকর অবস্থায় না পড়েন।

তিনি জানান, নতুন আইন অনুযায়ী পুলিশ পরিদর্শকের নিচে কেউ সাইবার নিরাপত্তা আইনের তদন্ত করতে পারবেন না। মিথ্যা অভিযোগ প্রমাণিত হলে তার বিরুদ্ধে শাস্তির বিধান থাকছে। মানহানির ক্ষেত্রে থাকছে ২৫ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান। এরপর পাশ হয় সাইবার নিরাপত্তা বিল ২০২৩।

প্রসঙ্গত, গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পরিকাঠামোতে বে-আইনি প্রবেশ (ধারা-১৭), কম্পিউটার ও কম্পিউটার সিস্টেমে ইত্যাদির ক্ষতিসাধন (ধারা-১৯), সাইবার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড সংগঠনের অপরাধ (ধারা-২৭) এবং হ্যাকিং-সংক্রান্ত অপরাধ (ধারা-৩৩) এ ধারাগুলো অজামিনযোগ্য রাখা হয়েছে।

বুধবারের সংসদ অধিবেশনে এছাড়াও পাশ হয়েছে জাতীয় সংসদ (সংরক্ষিত মহিলা আসন) নির্বাচন সংশোধন বিল ২০২৩। সর্বস্মতিক্রমে পাশ হয় জাতীয় পরিচয় পত্র বিল ২০২৩-ও। এর ফলে জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) নিবন্ধন সেবা নির্বাচন কমিশন (ইসি) থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে যাবে।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply