কুড়িগ্রাম করেসপন্ডেন্ট:
হারিয়ে যাওয়ার দুই যুগের বেশি সময় পর পরিবারের কাছে ফিরলেন মাইদুল। তিনি কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার গোপালপুর সরকারটারী গ্রামের আব্দুস সামাদের ছেলে। গতকাল শনিবার (১৬ সেপ্টেম্বর) মাইদুল ফিরলেও তার আরেক ভাই মতিয়ার এখনও নিখোঁজ।
২৫ বছর আগের কথা, পারিবারিক কলহে ভেঙে যায় আব্দুস সামাদ ও বানেছা বেগমের সংসার। পরে দুই সন্তানকে নিয়ে ঢাকায় পাড়ি জমান বানেছা বেগম। বিয়ের করে সংসার পাতেন পুনরায়। তবে সেই সংসারে জায়গা হয়নি, তার দুই সন্তান মাইদুল ও মতিয়ারের। তাদের ঠাঁই হয় অন্যের বাড়িতে। সেখান থেকে কৌশলে পালিয়ে যায় দুই ভাই। বয়সে তখন তারা শিশু-ই। তারপর থেকেই নিখোঁজ এই দুই ভাই।
জানা গেছে, হারিয়ে যাওয়ার পর মাইদুল বিভিন্ন মাধ্যমে গাইবান্ধায় এসে পৌঁছেন। সেখানে একজনের বাড়িতে আশ্রয় নেন। পরে বড় হয়ে বিয়েও করলেন, তার ঘরে স্ত্রীসহ দুই সন্তান রয়েছে। তাদের নিয়েই এবার পিতার কাছে ফিরলেন মাইদুল। ঢাকার আপন ঠিকানা নামের সংগঠনের সহায়তায় তার সন্ধান পাওয়া যায়।
এতো বছর পর জন্মস্থানে ফিরে আপ্লুত মাইদুল। আর হারানো ছেলেকে ফিরে পাওয়ার আনন্দে তাকে সংবর্ধনাও দেন তার বাবা সামাদ। মাইদুলকে পেয়ে উচ্ছ্বসিত তার স্বজন ও প্রতিবেশীরা। তাকে এক নজর দেখতে অনেকে ভিড় জমাচ্ছেন বাড়ির আঙিনায়।
বাড়ি ফেরার প্রসঙ্গে মাইদুল বলেন, কখনও ভাবিনি বাড়িতে ফিরতে পারবো। আমার জীবনটা সিনেমার চেয়েও বেশি… আমি ফিরতে পেরেছি, আমার ভাই এখনও ফিরতে পারেনি। আশা করছি তাকেও ফিরে পাবো। দুই ভাই একসঙ্গে গলায় ধরে আবার শিশুকালের মতো চলতে পারবো।
তার বাবা আব্দুস সামাদ বলেন, ছোট ছেলে মাইদুল ফিরে এসেছে। মতিয়ারকে এখনও পাইনি। সে-ও একদিন ফিরে আসবে বিশ্বাস করি। একজনকে পেয়েই অনেক খুশি আমি।
মাইদুলের স্ত্রী জানান, তার স্বামী ও দুই সন্তান খু্বই আনন্দিত বাড়িতে ফিরতে পারায়। মাইদুল সবসময় তার পরিবারের খোঁজ করতো। এতদিন পর ফিরতে পেরেছে, এটা সত্যিই আনন্দের। সন্তানরাও তার দাদা বাড়ি পেয়েছে।
এদিকে, মাইদুলের পরিবার যদি চায়, তাহলে সামাজিক বেষ্টনীর আওতায় অর্ন্তভুক্তসহ সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে স্থানীয় প্রশাসন। এ বিষয়ে নাগেশ্বরী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাউছার আহাম্মেদ বলেছেন, তার পরিবার যদি আমাদের কাছে আবেদন করে তাহলে যাচাইবাচাই করে সরকারি বিভিন্ন কর্মসূচির আওতায় তাকে সহায়তা করা হবে।
/এনকে/এমএন
Leave a reply