প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে তৈরি হলো ভ্যানিলা আইসক্রিম!

|

ছবি: সংগৃহীত

এই প্রথম প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে তৈরি হলো কোনো খাদ্যদ্রব্য। যুক্তরাজ্যের এক গবেষণাগারে প্লাস্টিক প্রক্রিয়াজাত করে তৈরি হয়েছে ভ্যানিলা আইসক্রিম। উদ্যোক্তারা বলছেন, এটি খাওয়া কতোটা নিরাপদ, তা নিশ্চিত হতে আরও গবেষণা প্রয়োজন। তবে তাদের আশা, অদূর ভবিষ্যতে প্লাস্টিক থেকে তৈরি খাবার গ্রহণ করবে মানুষ। এতে একদিকে দূর হবে প্লাস্টিক দূষণ নিয়ে দুশ্চিন্তা। আরেকদিকে সমাধান মিলবে খাদ্য সংকটেরও।

আর পাঁচটি সাধারণ আইসক্রিমের মতো নয় এটি। চকলেট কিংবা দুধ নয়, বিশেষ এই আইসক্রিম তৈরি হয়েছে প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে। গবেষকরা বলছেন, প্রথম আইসক্রিম তো বটেই, প্লাস্টিক প্রক্রিয়াজাত করে তৈরি পৃথিবীর প্রথম খাদ্যদ্রব্য এটি।

যুক্তরাজ্যের ল্যাবে দীর্ঘ পরীক্ষা-নিরীক্ষায় এ আইসক্রিম তৈরি হয়েছে মূলত প্লাস্টিকের প্রধান উপাদান পলিমারের চরিত্র পরিবর্তন করে। ব্যাক্টেরিয়া ও এনজাইমের বিপাকীয় শক্তিকে ব্যবহার করে পলিমারকে ভেঙে তৈরি করা হয়েছে ভ্যানিলিন। যা আইসক্রিমটিকে ভ্যানিলার স্বাদ দেয়।

উদ্যোক্তা এলেনোরা অরটোলানি বলেন, কিছু নির্দিষ্ট এনজাইম আছে, যারা নির্দিষ্ট ধরণের বিক্রিয়া করে। যখন এসবের মাঝে সংযোগ তৈরি করা হয়, তখন আপনি এতো এতো কেমিক্যাল পাবেন যে অবাক হয়ে যাবেন। তেমনই কিছু ব্যাকটেরিয়া আর এনজাইম ব্যবহার করা হয়েছে এ আইসক্রিম তৈরিতে।

তবে প্লাস্টিক বর্জ্য থেকে তৈরি আইসক্রিম মানুষের খাওয়ার জন্য কতোটা উপযোগী, তা নিশ্চিত নন উদ্যোক্তারা। বলছেন, আরও গবেষণা প্রয়োজন। অরটোলানি বলেন, পলিমারকে পুরোপুরি ভেঙে আইসক্রিমটি তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে প্লাস্টিকের ছিটেফোঁটাও আর অবশিষ্ট নেই। তবে অন্য যে কোনো খাদ্য উপাদানের মতো এটিকেও নিয়ন্ত্রক প্রক্রিয়া এবং খাদ্যের মান প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যেতে হবে।

নিরাপদ প্রমাণিত হবে এই প্রক্রিয়াজাত খাবার, তা নিয়ে আশাবাদী গবেষকরা। যা প্লাস্টিক দূষণ ও খাদ্য সংকট মোকাবেলায় সহায়তা করবে আগামীর পৃথিবীকে। এ প্রসঙ্গে উদ্যোক্তা অরটোলানি বলেন, প্লাস্টিক দূষণ বর্তমান বিশ্বের একটি বড় সমস্যা। একইসাথে ভয়ংকর খাদ্য সংকটেও ভুগছে পৃথিবীর বহু দেশ। আমরা যে খাদ্য ব্যবস্থায় বাস করছি, তা পুনর্বিবেচনা করার সময় এসেছে। এর বিকল্প তৈরির সরঞ্জামও রয়েছে আমাদের কাছে। আশা করি, খাদ্যের ভবিষ্যত এবং প্লাস্টিক দূষণ সংকট সম্পর্কে একটি উত্তপ্ত বিতর্ক শুরু করবে আমার এ উদ্ভাবন।

অব্শ্য প্লাস্টিক থেকে খাদ্য তৈরির বিষয়টি নিয়ে সতর্ক প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছেন অনেকে। তাদের অভিযোগ, এ গবেষণার মাধ্যমে প্লাস্টিক খেতে উৎসাহিত করা হচ্ছে।

/এএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply