স্থানীয় জনসাধারণ ও পরিবেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেই রূপপুর প্রকল্প তৈরি হয়েছে বলে দাবি করছে সরকার। প্রকল্প পরিচালক বলছেন, সর্বোচ্চ দুর্ঘটনা হলেও তেজস্ক্রিয়তা প্রকল্প এলাকার বাইরে ছড়াতে পারবে না। তবে নির্মাণকাজ শেষ হলেও সঠিক সময়ে রূপপুরের বিদ্যুৎ সঞ্চালন নিশ্চিত করা এখনও বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। নির্ধারিত সময়ে সঞ্চালন লাইন তৈরি না হলে তার দায় বাংলাদেশকেই নিতে হবে বলে মনে করেন তারা।
২০১১ সালে ৯ মাত্রার ভূমিকম্পে প্লাবিত হয় জাপানের ফুকুশিমা দাইচি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের তিনটি চুল্লি। সরিয়ে নিতে হয় প্রায় দেড় লাখ মানুষকে।
এর আগে ১৯৮৬ সালে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়নের চেরনোবিল পরমাণু দুর্ঘটনা। সবচেয়ে ভয়াবহ এ দুটি বিস্ফোরণে তেজস্ক্রিয়তা ছড়িয়ে পড়ায় পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র নিয়ে এখনো আতঙ্কিত অনেকেই।
ইউরেনিয়াম হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে পারমাণবিক স্থাপনার স্বীকৃতি পেয়েছে রূপপুর। ঘনবসতিপূর্ণ দেশে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র কতটা নিরাপদ, সে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই।
রুপপুরে ব্যবহৃত হচ্ছে থার্ড জেনারেশন প্লাস ভিভিইআর ১২০০ মডেলের রিঅ্যাক্টর। দাবি, ৯ মাত্রার ভূমিকম্প বা বড় দুর্ঘটনা হলেও তার প্রভাব কেন্দ্রের ৩০০ মিটারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে।
রুপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিচালক ড. শৌকত আকবর বলেন, সেফটি নিয়ে কখনোই উদ্বেগ হওয়ার কোন কারণ নেই। আমাদের রূপপুর বিদ্যুৎ প্রকল্পের আওতার বাইরে সাধারণ মানুষ যেভাবে বসবাস করছে সেভাবেই বসবাস করতে পারবে, কৃষিকাজ করতে পারবে।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিউক্লিয়ার ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক ড. শফিকুল ইসলাম বলেন, যদি বিপর্যয় ঘটেও তাহলে যে ধরনের নিরাপত্তাস্তর সন্নিবেশিত করা হয়েছে সেগুলো ফুকো বা চেরনোবিলের সময়ে ছিল না। এগুলো যখন কাজ করবে তখন কোনোক্রমেই রেডিয়েশন বা তেজস্ক্রিয়তা বাহিরে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।
উল্লেখ্য, দেশের সবচেয়ে বড় এই প্রকল্পে খরচ হচ্ছে ১ লাখ ১৩ হাজার কোটি টাকারও বেশি। আসছে এপ্রিলে প্রথম ইউনিট থেকে পরীক্ষামূলক উৎপাদন শুরুর কথা। তবে তা সঞ্চালন নিয়ে অনিশ্চয়তা আছে এখনো। রাশিয়ার ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞার পর জার্মান কোম্পানি সিমেন্স নির্মাণ কাজ থেকে সরে যায়। এখন তা করছে চীনা কোম্পানি। বিদ্যুৎ বিভাগ, বিজ্ঞান মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় তা তদারকি করলেও সময়মত বাস্তবায়ন নিয়ে ভয় আছে এখনো।
/এমএইচ
Leave a reply