ইসরায়েলি ভূখণ্ডে চালানো অভিযানে শতাধিক ইসরায়েলিকে জিম্মি করেছে হামাস। যুক্তরাষ্ট্রে সক্রিয় ইসরায়েলি দূতাবাস নিশ্চিত করেছে এ তথ্য। হামাসের দাবি, জিম্মি করা ইসরায়েলিদের তালিকায় রয়েছেন শীর্ষস্থানীয় কয়েকজন সামরিক কর্মকর্তাও। যুদ্ধবন্দিদের গাজা উপত্যকার গোপন স্থানে রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছে সশস্ত্র সংগঠনটি। এ পরিস্থিতিতে সামরিক আগ্রাসন চালানোর আগে নেতানিয়াহু প্রশাসনকে কয়েকবার ভাবতে হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা। খবর আল জাজিরার।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে ইসরায়েলিদের বন্দি করার দৃশ্য ছড়িয়ে পড়েছে। গাজা ভূখণ্ড থেকে শনিবার স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের আকস্মিক হামলার পরই সামনে আসে এ চিত্র। হামাসই পরে বিবৃতিতে জানায়, সীমান্তবর্তী ওফাকিম শহরের দুটি এলাকা থেকে অর্ধ-শতাধিক ইহুদিকে জিম্মি করা হয়েছে। ১৮ ঘণ্টা পর অনেককে মুক্তিও দেয়া হয়। তবে আটক রাখা হয়েছে শীর্ষস্থানীয় সামরিক কর্মকর্তাদের।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হামাসের এক মুখপাত্র বলেন, ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু গাজা ও এর বাসিন্দাদের সমূলে উৎপাটনের হুমকি দিয়েছিলেন। সেটারই প্রত্যুত্তর পাচ্ছে ইসরায়েল। কয়েক ডজন সেনাসদস্য এবং শীর্ষ কর্মকর্তা জিম্মি রয়েছে আমাদের হাতে। সংখ্যাটি অতীতের তুলনায় কয়েকগুণ বেশি। তাদেরকে পুরো গাজায় ছড়িয়ে-ছিটিয়ে বন্দি রাখা হয়েছে।
শিশু, নারী, চলাফেরায় অক্ষম ব্যক্তি, প্রবীণরা রয়েছেন জিম্মিদের তালিকায়। যার মধ্যে এক নারী নোয়া আরগামানিকে শনাক্ত করেছে তার ভাই।
এদিকে, এ নিয়ে অবর্ণনীয় দুর্দশার আশঙ্কা করছে জাতিসংঘ। ফলে উভয়পক্ষকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়ে ইউএনএইচসিআর এর মুখপাত্র লিজ থ্রোসেল বলেন, বেসামরিক ইহুদিদের ওপর হামাস যোদ্ধাদের হামলায় বাকরুদ্ধ হাই কমিশনার ভোলকার তুর্ক। বিপুল সংখ্যক ইসরায়েলিকে জিম্মি করায় তিনি উদ্বিগ্ন। তাতে সাধারণ মানুষদের আতঙ্ক মধ্যে ছড়াচ্ছে। নেতানিয়াহু প্রশাসনকেও সতর্কতা অবলম্বনের তাগিদ জানানো হয়েছে। যুদ্ধে বেসামরিকরা কখনওই হামলার টার্গেট হওয়া উচিত নয় বলে মন্তব্য করেছে জাতিসংঘ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিমত, শুধু অভিযান চালিয়েই ক্ষান্ত হবে না হামাস। জিম্মিদের বিনিময়ে বড় কিছু চাইতে পারে তারা। সেটা রাজনৈতিক পরিবর্তন থেকে শুরু করে বন্দিমুক্তি যেকোনো কিছুই হতে পারে।
ওয়াশিংটনে মধ্যপ্রাচ্যের রাজনীতি বিশেষজ্ঞ জন অল্টারম্যান বলেন, ইসরায়েলি ভূভাগে হামাস যে ধ্বংসযজ্ঞ চালিয়েছে, তা সংস্কারে কয়েক সপ্তাহ বা মাসও লাগতে পারে। কিন্তু সশস্ত্র সংগঠনটির বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে সতর্ক অবস্থানে থাকতে হবে নেতানিয়াহু প্রশাসনকে। কারণ বিপুল সংখ্যক ইহুদি হামাসের হাতে বন্দি। তাদেরকে অজ্ঞাত স্থানে রাখা হয়েছে। আর ভবিষ্যতে তাদের বিনিময়ে হামাস কী চায়, সেটাও বড় প্রশ্ন।
২০১১ সালে সেনাসদস্য গিলাদ শালিতের বিনিময়ে হাজারের বেশি ফিলিস্তিনি বন্দিকে মুক্তি দিয়েছিল ইসরায়েল। বর্তমানে ইসরায়েলি বিভিন্ন কারাগারে আটক সাড়ে ৪ হাজার ফিলিস্তিনি। যাদের মধ্যে ১৮৩ জনই গাজার বাসিন্দা।
এসজেড/
Leave a reply