বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী ও অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থা বলা হয় আয়রন ডোমকে। বরাববরই এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে অপ্রতিরোধ্য বলে আসছে ইসরায়েল। গেল এক যুগে হামাস-হিজবুল্লাহর হামলা মোকাবেলায় আয়রন ডোমের সাফল্যও ছিল ব্যাপক। মাত্র ২০ মিনিটে ৫ হাজার রকেট ছুড়ে সেই দুর্ভেদ্য প্রতিরক্ষা দেয়ালকে এবার প্রশ্নের মুখে ফেলেছে হামাস।
ইসরায়েল-ফিলিস্তিনের সংঘাতকে বরাবরই বলা হয় অসম শক্তির লড়াই। আগেও বহুবার আগ্রাসনের জবাবে ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামীরা রকেট ছুড়ে পাল্টা হামলা চালায়। তবে সেগুলোর খুব কম সংখ্যকই অত্যাধুনিক আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভেদ করে ইসরায়েল ভূখণ্ডে আঘাত হানতে পেরেছিল।
আয়রন ডোম মূলত ভূমি থেকে আকাশে নিক্ষেপ করা একটি স্বল্পপাল্লার প্রতিরক্ষাব্যবস্থা। ৭০ কিলোমিটারের মধ্যে রকেট, মর্টার, ড্রোনসহ শত্রুদের হামলা প্রতিহতে এই ব্যবস্থার সাফল্য ঈর্ষণীয়। এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় তিনটি অংশ, প্রতিটি ইউনিটে থাকে ২০টি করে মিসাইল। ক্ষয়ক্ষতি এড়াতে শনাক্তের পর আয়রন ডোম স্বয়ংক্রিয়ভাবে আকাশেই প্রতিপক্ষের সমরাস্ত্র ধ্বংস করে।
২০০৬ সালে হিজবুল্লাহ’র সাথে লড়াইয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির পর প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার আধুনিকায়নে জোর দেয় ইসরায়েল। তারই ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে ইসরায়েল প্রথম আয়রন ডোম মোতায়েন করে। বলা হয়, বর্তমান বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা এই আয়রন ডোম।
এতদিন আয়রন ডোমের সফলতার হার ছিলো ৮০ থেকে ৯০ শতাংশ। শনিবার হামাসের হামলায় অবশ্য বদলে গেছে চিত্র। একের পর এক রকেট হামলায় বিধ্বস্ত হয় ইসরায়েলের বহু এলাকা। কোন যাদুতে সেই অভেদ্য দেয়াল ভেদ করে ইসরায়েলকে কাঁপিয়ে দিলো ফিলিস্তিনি যোদ্ধারা? বিশ্লেষকরা বলছেন, এবার ফিলিস্তিনিদের কৌশলের কাছেই পরাস্ত হয়েছে এই প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা।
মাত্র ২০ মিনিটে, পাঁচ হাজারের বেশি রকেট ছুঁড়েছে হামাস। যার ফলে, সব রকেট ধ্বংস করতে পারেনি আয়রন ডোম। আর তাতেই ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞের সাক্ষী হয়েছে তেলআবীব।
বিশ্লেষকদের মত, হামাসের দীর্ঘদিনের পরিকল্পনারই ফল এই নজিরবিহীন হামলা। বারবার ব্যর্থ হওয়ার পর আয়রন ডোমের দুর্বলতা বের করার চেষ্টা করেছে হামাস। আর তাতেই মিলেছে সফলতা।
এটিএম/
Leave a reply