বিনোদপুর পুলিশ ফাঁড়ির অভিযুক্ত উপপরিদর্শক (এসআই) আসিফ আহমেদ।
রাজবাড়ী প্রতিনিধি:
রাজবাড়ীতে রিফায়াত ইবনে রইস আরাফ নামে এক কলেজছাত্রের পকেটে ইয়াবা দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা ও নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে বিনোদপুর পুলিশ ফাঁড়ির এসআই আসিফের বিরুদ্ধে। সোমবার (৯ অক্টোবর) ওই শিক্ষার্থী নিজেই রাজবাড়ীর পুলিশ সুপারের কাছে একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত এসআই ওই ছাত্রের বাড়িতে গিয়ে ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন বলে জানা গেছে।
মঙ্গলবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার জি.এম. আবুল কালাম আজাদ।
অভিযোগকারী আরাফ রাজবাড়ী পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের নূরপুর এলাকার মোঃ রইচ উদ্দিন বাবুর ছেলে। আরাফ রাজবাড়ী সরকারি কলেজের ছাত্র। অভিযুক্ত এসআই আসিফ আহমেদ ঘটনার দিন রাতে রাজবাড়ীর বিনোদপুর পুলিশ ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন।
আরাফ জানায়, গত রোববার (৮ অক্টোবর) রাত ১২টা ৪০ মিনিটে শিক্ষা সফর শেষে বড় ভাই রিয়াসাত ইবনে রইস সামিটের সাথে তিনি বাড়িতে ফেরেন। তবে বাড়িতে পৌঁছানোর পর শহরের মুরগির ফার্ম বাসস্ট্যান্ডে ল্যাপটপ ও একটি ব্যাগ ফেলে আসার কথা জানান তার বড় ভাই রিয়াসাত। ফলে ওই রাতেই সেই ল্যাপটপ ও ব্যাগ আনতে মোটরসাইকেলযোগে মুরগির ফার্ম বাসস্ট্যান্ডে যান আরাফ।
বাড়িতে ফেরার পথে রাজবাড়ী ইয়াসিন স্কুল সংলগ্ন ২নং রেইল গেটে পুলিশ তার মোটরসাইকেলের গতিরোধ করে বলে জানা আরাফ। সে সময় এসআই আসিফ আহমেদ, কনস্টেবল জাহাঙ্গীর ও কনস্টেবল সুকান্ত তাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেন। এক পর্যায়ে এসআই আসিফ আহমেদ তার শার্টের কলার ধরে ইয়াবা ব্যবসায়ী সম্বোধন করে এলোপাতাড়ি মারধোর করেন বলেও অভিযোগ করেন এই শিক্ষার্থী।
পরে এসআই আসিফ আহমেদ তার পকেটে কিছু ঢুকানোর চেষ্টা করেন বলে দাবি করেছেন আরাফ। এতে ব্যর্থ হয়ে তাকে বাড়িতে ফোন দিয়ে টাকা পাঠানোর জন্যও বলা হয় বলে জানান এই শিক্ষার্থী। তার পরিবারের লোকজন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে এবং তা দেখে আরও লোকজন জড়ো হলে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
ওই দিনই ভোর ৫টার দিকে পুলিশের পোশাক পরিহিত অবস্থায় এসআই আসিফ আহমেদ তার বাড়িতে গিয়ে ঘটনার দায় স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থনা করেন বলে দাবি অভিযোগকারীর। এ নিয়ে এসআই আসিফ পরবর্তী কোনো পদক্ষেপ না নিতে অনুরোধ জানান বলেও জানায় ভুক্তভোগীর পরিবার। পাশাপাশি, এই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ করলে আরাফকে মাদক মামলায় ফাঁসিয়ে দেয়ার হুমকি দেয়া হয় বলেও অভিযোগ তাদের। এ ঘটনায় এসআই আসিফ আহমেদের হাত জোড় করে ক্ষমা চাওয়ার একটি ভিডিও যমুনা টেলিভিশনের হাতে এসেছে।
অভিযুক্ত এসআই আসিফ আহমেদ সকল অভিযোগ অস্বীকার করে মুঠোফোনে জানান, ওই দিন রাতে তিনি ২নং রেলগেইট এলাকায় ডিউটিতে ছিলেন। তবে কাউকে কোনো হয়রানি বা বাসায় গিয়ে ক্ষমা চাওয়ার বিষয়টি সত্য নয়।
রাজবাড়ী পুলিশ সুপার জি.এম. আবুল কালাম আজাদ বলেন, এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
/এএস
Leave a reply