হামাসের ভয়াবহ হামলার শিকার হয়েও এখনও গাজায় কেনো স্থল অভিযান শুরু করছে না ইসরায়েলের, তা নিয়ে উঠছে নানা প্রশ্ন। অনেকের মতে, আকস্মিক অভিযানে স্বাধীনতাকামী সংগঠনটি যে শক্তিমত্তা দেখিয়েছে, তাতে অনেকটাই গোলকধাঁধায় পড়ে গেছে দেশটির প্রতিরক্ষা বাহিনী। হামাসের সক্ষমতা বুঝতে খানিকটা হিমশিমই খাচ্ছে তারা। ওপর থেকে হিজবুল্লাহ, সিরিয়ার মতো পারিপার্শ্বিক এবং আন্তর্জাতিক চাপ ও মুসলিম বিশ্বের একতাও কঠোর অবস্থানে যেতে রুখে দিচ্ছে নেতানিয়াহু প্রশাসনকে। খবর আল জাজিরার।
গত ৭ অক্টোবর হামাসের স্মরণকালের সবচেয়ে ভয়াবহ অভিযানে রীতিমতো টালমাটাল বিশ্বের অন্যতম শক্তিধর দেশ ইসরায়েল। বিপুল প্রাণহানি আর ক্ষয়ক্ষতির জবাব দিতে কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই পাল্টা বিমান হামলা চালায় নেতানিয়াহু প্রশাসন। তবে স্থল অভিযানে এখনও যায়নি তারা।
ইসরায়েল-ফিলিস্তিন সংঘাতের পূর্ব ইতিহাস থেকে দেখা যায়, প্রায় প্রতিবারই ভারী ব্যারেজ দিয়ে স্থল অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে আগ্রাসন চালাতো ইহুদি সেনারা। অনেকটা বাধাহীনভাবেই চলতো একতরফা আক্রমণ। তবে হামাসের নজিরবিহীন হামলা দৃশ্যপট পাল্টে দিয়েছে বলে মনে করছেন অনেকে। যার ফলে স্থল আক্রমণের আগে ভাবতে হচ্ছে তেলআবিবকে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের হামলার কৌশল ইসরায়েলি শক্তিমত্তাকে অনেকখানি চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছে। এছাড়া সশস্ত্র সংগঠনটির কাছে অ্যান্টি ট্যাংক মাইন, অ্যান্টি ট্যাংক মিসাইলের মতো ভারী অস্ত্রের মজুদ রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ওপর থেকে চোখ রাঙাচ্ছে নিজেদের তৈরি অস্ত্র সজ্জিত ড্রোন। ফলে যুদ্ধের পূর্ব অভিজ্ঞতা থাকলেও একই ঘরাণার হামলার কৌশল হামাসের সামনে কতক্ষণ টিকবে তা নিয়েও উঠছে প্রশ্ন।
ইসরায়েলের স্থল অভিযানে আরও এক বড় বাধা হিসেবে মনে করা হচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে। ফিলিস্তিনে গণহত্যার বিরুদ্ধে তুরস্ক, রাশিয়া ও চীনের মতো দেশগুলোর অবস্থান চাপে ফেলেছে তাদের। যুক্তরাষ্ট্রের একক অবস্থান সুবিধা করতে পারছে না জাতিসংঘে। এছাড়া গাজা ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ মুসলিম বিশ্বও ভাবাচ্ছে নেতানিয়াহু প্রশাসনকে। আর নাকের ডগায় আরেক হুমকি লেবাননের হিজবুল্লাহ আর সিরিয়া। সব মিলিয়ে এবার বেশ বিপাকেই তেলআবিব।
গাজায় বড় হামলা রুখতে হামাসের আরেক তুরুপের তাস জিম্মি করা ইসরায়েলিসহ বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা। বিপুল সংখ্যক মানুষের প্রাণ বাঁচাতে স্থল অভিযানের বিষয়ে তাই তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্ত নিচ্ছে না তেলআবিব, এমনটাই মনে করছেন অনেক বিশ্লেষক।
এসজেড/
Leave a reply