গাজা উপত্যকায় চরম মানবিক বিপর্যয়, অস্ত্রবিরতি কার্যকরের আহ্বান আরব লিগের

|

ছবি: রয়টার্স

জমছে মরদেহের স্তূপ। ধ্বংসস্তূপের মাঝেই সারা হচ্ছে জানাজা-দাফন। প্রিয়জনের জন্য আহাজারি-আর্তনাদের সুযোগও পাচ্ছেন না গাজাবাসী। নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে ছুঁটছেন দিগ্বিদ্বিক। খাবার-জ্বালানি-বিদ্যুতের মতো মৌলিক অধিকার থেকে তাদের বঞ্চিত করছে ইসরায়েল।

মাথা গোঁজার ঠাই মিললেও তাতে রাতের অন্ধকারে চলছে গোলা আর মিসাইল হামলা। যার জন্য ইসরায়েলিদের পাশাপাশি আরব নেতাদের মধ্যেকার ফাটলকেই দোষারোপ করছেন গাজাবাসী। একজন নাগরিক বলেন, আমরা ইহুদিদের দোষ দেব না। আরব নেতাদের মধ্যে কোনো ঐক্য নেই। আজ গাজাবাসীর করুণ পরিস্থিতির জন্য তারাই দায়ী। দুর্নীতিবাজ নেতাদের জন্য ফিলিস্তিনিরা হারাচ্ছে নিজস্ব ভূমি। কিন্তু একদিন আমরা নিজ ভূখণ্ডে ফিরবোই।

আরেক ভুক্তভোগী বলেন, রাতের অন্ধকারে আমাদের সন্তানদের ওপর হচ্ছে বোমাবর্ষণ। কোথাও নিরাপদ জায়গা নেই। আমাদেরকে বেঘোরেই মরতে হবে। আরব নেতা আর সৌদি আরব যে আশ্বাস দিচ্ছে, তার সবই মিথ্যা। বিশ্বের কোনো দেশ গাজা উপত্যকার কষ্ট বুঝতে পারেনি, পারবেও না।

এ পরিস্থিতিতে দ্রুততম সময়ের মধ্যে অস্ত্রবিরতি এবং ত্রাণ সহযোগিতার আহ্বান জানাচ্ছে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো। জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন দুজারিচ বলেন, ‘ওসিএইচএ’র তথ্য অনুসারে, গাজায় বাস্তুচ্যুত সাড়ে তিন লাখের কাছাকাছি মানুষ। গতকালের তুলনায় যা বেড়েছে ৪০ শতাংশ। হাজারের বেশি ভবন বোমাবর্ষণে ক্ষতিগ্রস্ত। যার মাঝে সাড়ে পাঁচশ’ পুরোপুরি ভস্মীভূত। উপত্যকার ১৩টি হাসপাতাল আংশিকভাবে কাজ করছে। কারণ, ফুরিয়ে এসেছে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জাম। তার মধ্যে পানির লাইন কেটে দিয়েছে ইসরায়েল। সুপেয় পানির সংকটে সাড়ে ৬ লাখ ফিলিস্তিনি।

আরব লিগের মহাসচিব আহমেদ আবদুল ঘেইত বলেন, হামাস-ইসরায়েলের মধ্যে চলমান সহিংসতা মারাত্মক রুপ নিচ্ছে। যেকোনো মুহূর্তে ঘটবে মানবিক বিপর্যয়। পুরো অঞ্চলকে অনিশ্চিত ভবিষ্যতের দিকে ঠেলে দিচ্ছে এই যুদ্ধ। গাজাবাসীর প্রতি বরাবরই রয়েছে আরব লিগের সমর্থন। ইসরায়েলকে বলবো, আগ্রাসন থামিয়ে অস্ত্রবিরতির পথে আসুন। কারণ, কূটনীতির মাধ্যমেই কেবল সম্ভব সংকট সমাধান।

গত শনিবার (৭ অক্টোবর) হামাসের অভিযান শুরুর পর আংশিক বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন ছিল গাজা উপত্যকা। কিন্তু সময়ের সাথে বাড়ানো হচ্ছে চাপ। অবরুদ্ধ ভূখণ্ড পুরোপুরি ডুবে গেছে অন্ধকারে। নেই পানি, খাবার, ওষুধের মতো মৌলিক সেবাও।

/এএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply