আবারও ডাচ আধিপত্যে নতজানু প্রোটিয়ারা

|

ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বকাপে নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে এসে পরাজয়ের তেতো স্বাদ পেলো আকাশে উড়তে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকা। প্রতিপক্ষ- সেই নেদারল্যান্ডস; জিতলেই সেমিফাইনাল, এমন সমীকরণের সামনে দাঁড়িয়ে সর্বশেষ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে যাদের বিপক্ষে চোক করেছিল তারা। এবারের হারটা ৩৮ রানের ব্যবধানে। যদিও স্কোরবোর্ড পুরোপুরি স্পষ্ট করতে পারছে না রানা তাড়া করতে নেমে ডাচ বোলারদের আধিপত্যের কাছে কতটা নতজানু ছিল প্রোটিয়ারা।

বৃষ্টির হানায় ৪৩ ওভারে নির্ধারিত হওয়া এ ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে স্কট এডওয়ার্ডসের ব্যাটের ওপর ভর করে ২৪৫ রানের লড়াকু পুঁজি পায় ডাচরা। লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ডাচ বোলারদের তোপের মুখে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। মাত্র ৪৪ রান তুলতেই ৪ উইকেট হারিয়ে ব্যাটিং বিপর্যয়ে পড়ে প্রোটিয়ারা। ডেভিড মিলার কিছুটা প্রতিরোধ গড়ে তুললেও ডাচ বোলারদের নিয়ন্ত্রিত বোলিংয়ে হার এড়াতে পারেনি বাভুমার দল। ১ বল বাকি থাকতেই ২০৭ রানে গুটিয়ে যায় প্রোটিয়ারা। ফলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পর ওয়ানডে বিশ্বকাপেও দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারালো নেদারল্যান্ডস।

মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) ধরমশালা ক্রিকেট গ্রাউন্ডে নেদারল্যান্ডসের দেয়া ২৪৬ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুই ওপেনার কুইন্টন ডি কক ও টেম্বা বাভুমা দেখেশুনে শুরু করলেও অষ্টম ওভারে ছন্দপতন শুরু হয় তাদের। অষ্টম ওভারের শেষ বলে দলীয় ৩৬ ও ব্যক্তিগত ২০ রানে কলিন অ্যাকারম্যান শিকার হন গত দুই ম্যাচের সেঞ্চুরি করা ডি কক। ইনিংসের দশম ওভারের প্রথম বলে রলফ ভ্যান ডার মারউইয়ের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন ১৬ রান করা প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা।

এরপর ইনিংস বড় করতে পারেননি এইডেন মার্করাম। মাত্র ১ রান করেই পল ভ্যান মিকেরেনের বলে বোল্ড হয়ে সাজঘরে ফেরেন এই ব্যাটার। ক্রিজে এসে ব্যর্থ হন রাসি ভ্যান ডার ডুসেন। মাত্র ৪ রান করে সাজঘরে ফেরেন এই ডানহাতি ব্যাটার।

৪৪ রানে ৪ উইকেট হারানোর পর হেনরিখ ক্লাসেন ও ডেভিড মিলার মিলে স্কোরবোর্ডে যোগ করেন ৪৫ রান। ক্লাসেন ২৮ ও ডেভিড মিলার ৪৩ রান করে আউট হওয়ায় জয়ের পাল্লা ধীরে-ধীরে ডাচদের দিকে ঝুকে পড়ে।

১৬৬ রানে একটা সময় ৯ উইকেট হারিয়ে ফেলার পর শেষ দিকে লুঙ্গি এনগিদিকে সঙ্গে নিয়ে কেশভ মাহারাজ কিছুটা লড়াই করলেন ভ্যান বীক এর বলে মাহারাজ ফিরে গেলে ২০৭ রানে গুটিয়ে যায় দক্ষিণ আফ্রিকা। ফলে ৩৮ রানে জয় পায় নেদারল্যান্ডস।

নেদারল্যান্ডসের হয়ে সর্বোচ্চ তিনটি উইকেট নেন ভ্যান বিক। এছাড়াও দু’টি করে উইকেট নেন ভ্যান মেকেরিন, ভ্যান ডার মারওয়ে এবং বাস ডি লিড। 

এর আগে, টস হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে নেদারল্যান্ডস । শুরু থেকেই ছিলো প্রোটিয়া বোলারদের দাপট।

দলীয় ৫০ রানের মধ্যেই চার উইকেট হারিয়ে শুরুর দিকে ধুঁকছিল ডাচরা। ২ রান করেই আউট হন ওপেনার বিক্রমজিত সিং। আরেক ওপেনার ম্যাক্স ‘ও’ডাউডের ব্যাট থেকে আসে ১৮ রান।

বাস ডি লিডের ব্যাট থেকে আসে মাত্র ২ রান। কলিন অ্যাকারম্যান আউট হয়ে যান ১২ রান করে। দলীয় ৮২ রানে সাইব্র্যান্ড এঞ্জেল্ব্রেচ ফিরে গেলে দ্রুত অল আউট হয়ে যাওয়ার শঙ্কা জাগে নেদারল্যান্ডসের। সেখান থেকেই দলের হাল ধরেন এডওয়ার্ডস।

তেজা নিদামানুরুর সঙ্গে ৩০, ভ্যান বিকের সঙ্গে ২৮, ভ্যান ডার মারউইয়ের সঙ্গে ৬৪ রানের জুটি গড়ে ডাচদের বড় সংগ্রহের ভিত গড়ে দেন এডওয়ার্ডস। নবম উইকেটে আরিয়ান দত্তকে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ৪১ রানের জুটি গড়ে নেদারল্যান্ডসকে বড় পুঁজি এনে দেন এডওয়ার্ডস। শেষ পর্যন্ত অপরাজিত থাকেন ৬৯ বলে ৭৮ রানের ইনিংস খেলে। তার ইনিংস জুড়ে একটি ছক্কা ও ১০টি চারের মার ছিল। আরিয়ান অপরাজিত ছিলেন ৯ বলে ২৩ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ২টি করে উইকেট নেন লুঙ্গি এনিগিদি, মার্কো জানসেন ও কাগিসো রাবাদা। একটি করে উইকেট নেন জেরাল্ড কোয়েতজে ও কেশভ মহারাজ।

/আরআইএম


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply