এবার ৮ উইকেটের বড় ব্যবধানে আফগানিস্তানের কাছে হারলো পাকিস্তান। ২৮৩ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে দুই উইকেট হারিয়ে এক ওভার বাকি থাকতেই জয় ছিনিয়ে নেয় হাশমতউল্লাহ শহীদীর দল।
২৮৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে আফগানদের শুরুটা বেশ ভালোই হয়। দুই ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ ও ইব্রাহিম জাদরান দেখে-শুনে খেলছিলেন পাকিস্তানের বোলারদের। এরমধ্যে ষষ্ঠ ওভারে এই জুটি ভাঙার সংকেত দেন আম্পায়ার। ইব্রাহিম কট বিহাইন্ডের বিপরীতে রিভিউ নিয়ে সিদ্ধান্ত বদলে দেন। কোনো উইকেট না হারিয়ে পাওয়ার প্লেতে আফগানরা তুলে নেয় ৬০ রান, বিশ্বকাপে যা তাদের তৃতীয় সর্বোচ্চ।
এরপর থেকে প্রতি ওভারেই রান রেট ঠিক রেখে এগোতে থাকেন দুই ওপেনার। ১৫তম ওভারে ফিফটি তুলে নেন ইব্রাহিম। আর পরের ওভারেই ফিফটির দেখা পান আরেক ওপেনার গুরবাজ। ২১.১ ওভারে শাহিন শাহ আফ্রিদির বলে উসামা মীরকে ক্যাচ দিয়ে সাজগরে ফেরেন গুবরাজ। নিজের নামের পাশে ৬৫ রান করে এই ব্যাটার যখন সজঘরের পথে, তখন আফগানদের স্কোর বোর্ডে ১৩০ রান।
ওপেনিং জুটি ভাঙার পর কিছুটা ধীর হয়ে পড়ে আফগানদের রানের গতি। তবে ইব্রাহিম মাঝেমধ্যে চার মেরে রানের চাকা সচল রাখেন, আর উইকেটে টিকে থাকেন। ৩৪তম ওভারে তাকে থামতে হয়। বিশ্বকাপের ইতিহাসে আফগানিস্তানের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৮৭ রান করেন এই ওপেনার। হাসান আলীর শিকার হন ইব্রাহিম।
এরপর দলের হাল ধরেন রহমত শাহ ও অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শহীদী। শেষ ১০ ওভারে তারা লক্ষ্য ৬২ রানে নামিয়ে আনেন। ছয় বল বাকি থাকতে দুজন অপরাজিত ৯৬ রানের জুটিতে দলকে জয়ের বন্দরে পৌঁছে নেন। এরমধ্যে ৪১তম ওভারে ফিফটি করেন রহমত। শেষ পর্যন্ত রহমত ৭৭ ও হাশমতউল্লাহ ৪৮ রানে অপরাজিত ছিলেন।
এর আগে, সোমবার (২৩ অক্টোবর) চেন্নাইয়ের এমএ চিদাম্বরাম স্টেডিয়ামে টসে জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন পাকিস্তান অধিনায়ক বাবর আজম। ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু করেন পাকিস্তানের দুই ওপেনার। তবে দলীয় ৫৬ রানে ২২ বলে ১৭ রান করে আউট হন ইমাম-উল-হক। আজমতউল্লাহর শর্ট লেন্থের বল পুল করতে গিয়ে মিড উইকেটে দাঁড়িয়ে থাকা ফিল্ডার নাভিনের হাতে ধরা পড়েন এ বাঁহাতি ব্যাটার। এরপর তিনে ব্যাট হাতে আসেন অধিনায়ক বাবর আজম। তাকে নিয়ে ৫৫ রানের জুটি গড়েন আবদুল্লাহ শফিক। দলীয় ১১০ রানে ৭৫ বলে ৫৮ রান করে আউট হন আবদুল্লাহ শফিক। নূর আহমেদের ফুল লেন্থের বল সুইপ করতে গিয়ে লেগ বিফোরে কাঁটা পড়েন এই ডানহাতি ব্যাটার।
ক্রিজে এসে দ্রুতই সাজঘরে ফেরেন মোহাম্মদ রিজওয়ানও। তাকেও ফেরান নূর। এই বাঁহাতি রিষ্ট স্পিনারের অফ স্ট্যাম্পের বাইরের বল সুইপ করতে গিয়ে মুজিবের হাতে ক্যাচ দেন পাকদের এ উইকেটরক্ষক ব্যাটার। পাঁচ নম্বর উইকেটে সৌদ শাকিলকে সঙ্গে নিয়ে ৪৩ রানের জুটি গড়েন বাবর। তবে দলীয় ১৬৩ রানে ৩৪ বলে ২৫ রান করে নবির বলে রশিদের হাতে ক্যাচ দেন শাকিল। এরপর শাদাব খানকে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন বাবর। সাবলীল ব্যাটিংয়ে নিজের অর্ধশত পূরণ করেন পাক অধিনায়ক। তবে দলীয় ২০৬ রানে ৯২ বলে ৭৪ রান করে নূর আহমেদের বলে কাভারে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন বাবর।
ষষ্ঠ উইকেটে ইফতিখার আহমেদ ও শাদাব দু’জনেই মারমুখী ব্যাটিং করতে থাকেন। দু’জন মিলে গড়েন ৭৩ রানের জুটি। দলীয় ২৭৯ রানে ২৬ বলে ৪০ রানের ক্যামিও ইনিংস খেলে সাজঘরে ফেরেন ইফতিখার। তার বিদায়ের পর আসেন শাহিন আফ্রিদি। এরপর ইনিংসের শেষ বলে ৩৮ বলে ৪০ রান করে আউট হন শাদাব। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৭ উইকেট ২৮২ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তান। আফগানিস্তানের পক্ষে নূর আহমেদ নেন ৩টি উইকেট।
/এমএন
Leave a reply