‘অনলাইন জুয়াসহ নানা বিষয়ে প্রেমিকের সাথে বাকবিতণ্ডা, পরে হুমায়রা হিমুর আত্মহত্যা’

|

অনলাইন জুয়াসহ বিভিন্ন বিষয়ে অভিনেত্রী হুমায়রা হিমু ও তার প্রেমিক মোহাম্মদ জিয়াউদ্দিনের মধ্যে বাগবিতণ্ডা হয়। এর একপর্যায়ে বাসার মধ্যে হুমায়রা হিমু ভাঙচুর চালায়। তখন বাইরে থেকে একটি মই এনে রুমে ঢুকেন এই অভিনেত্রী। আর প্রেমিক জিয়াউদ্দিনকে বলে, রুমের সিলিং ফ্যানে আগে থেকেই বেঁধে রাখা প্লাস্টিকের রশিতে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করবে।

গ্রেফতারের পর র‍্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়নকে (র‍্যাব) জিজ্ঞাসাবাদে এমনটা জানায় জিয়াউদ্দিন। হুমায়রা হিমুর মৃত্যুর ঘটনায় শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীতে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন র‍্যাবের লিগ্যাল ও মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। তবে, জিয়াউদ্দিনের দেয়া তথ্য যাছাই করতে পারেনি র‍্যাব।

জিজ্ঞাসাবাদে জিয়াউদ্দিন র‍্যাবকে আরও জানায়, গত ২-৩ বছর ধরে ‘বিগো লাইভ’ অ্যাপে অনলাইন জুয়ায় আসক্ত ছিলেন হুমায়রা হিমু। আর এই অ্যাপে বিপুল পরিমাণ অর্থ অপচয় করেছে। এসব বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সময় তাদের মধ্যে কথা কাটাকাটি ও মনোমালিন্যের সৃষ্টি হতো।

গতকাল বৃস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৩টায় হিমুর উত্তরার বাসায় যান জিয়াউদ্দিন। এরপরই দুই জনের মধ্যে বাকবিতণ্ডার ঘটনা ঘটে। হুমায়রা হিমু যখন আত্মহত্যা করছিলেন, তখন বিছানায় বসে ছিলেন জিয়াউদ্দিন। এর আগেও এই অভিনেত্রী তিন থেকে চারবার আত্মহত্যার হুমকি দিয়েছিলেন। তবে, শেষবার তার হুমকিকে পাত্তা দেননি প্রেমিক। পরে যখন দেখে হুমায়রা হিমু সত্যি সত্যি গলায় ফাঁস দিয়েছে, তখন তাকে নামানোর চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন জিয়াউদ্দিন। এরপর পাশের রুমে থাকা হিমুর মেকআপ আর্টিস্ট মিহিরকে ডেকে আনেন তিনি।

র‍্যাব আরও জানায়, এ সময় মিহির রান্নাঘর থেকে একটি বটি এনে রশি কেটে তাকে নিচে নামায়। পরে জিয়াউদ্দিন, বাসার দারোয়ান ও মিহিরের সহায়তায় হিমুকে বাসা থেকে রাজধানীর উত্তরার একটি হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

বৃহস্পতিবার চিকিৎসক যখন হুমায়রা হিমুকে মৃত ঘোষণা করেন, তখন তার গলায় হালকা দাগ দেখতে পাওয়ায় পুলিশ ডাকেন। এ সময় তার বন্ধু জিয়াউদ্দিন হাসপাতাল থেকে চলে যান। এরপর থেকেই তাকে খুঁজে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। শুক্রবার (৩ নভেম্বর) সকালে জিয়াউদ্দিনকে রাজধানীর বংশাল থেকে গ্রেফতার করে র‍্যাব।

এরমধ্যে, এ ঘটনায় রাজধানীর উত্তরা পশ্চিম থানায় হিমুর খালা বাদী হয়ে মামলা করেছেন। সেই মামলায় জিয়াউদ্দিনকে গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

উল্লেখ্য, জিয়াউদ্দিন বিভিন্ন মহলে রুফি ওরফে উরফি জিয়া নামেও পরিচিত। তিনি ‘ও’ লেভেল শেষ করে টেক্সটাইল কেমিক্যালের ব্যবসা করতেন। এছাড়া, সে হুমায়রা হিমুর খালাতো বোনের প্রাক্তন স্বামী।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply