বাসায় আটকে রেখে প্রধান শিক্ষককে নির্যাতনের অভিযোগ যশোর উপজেলা চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে

|

ছবি: উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ

স্টাফ রিপোর্টার, যশোর:
স্কুল পরিচালনা কমিটির সভাপতি হতে প্রধান শিক্ষককে বাড়ি ডেকে নিয়ে দুইঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে যশোর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তফা ফরিদ চৌধুরী বিরুদ্ধে। বুধবার (৮ নভেম্বর) এই নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। এছাড়া স্কুলে গিয়ে বর্তমান সভাপতিকে লাঞ্ছিত করেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।

নির্যাতিত ওই শিক্ষকের নাম নুরুল আমিন। আদর্শ বহুমুখী বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক। ঘটনার পর তিনি যশোর কোতোয়ালি থানায় নিরাপত্তা চেয়ে জিডি করেছেন।

ভুক্তভোগী শিক্ষক অভিযোগ করে বলেন, উপজেলা চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ চৌধুরী দীর্ঘদিন ধরেই স্কুলের পরিচালনা কমিটির সভাপতি হতে চান। সম্প্রতি তিনটি নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশিত হলে চেয়ারম্যান ফোন করে নিয়োগ কার্যক্রম বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। তিনি সভাপতি হয়ে এই পদগুলোতে নিয়োগ দিতে চান বলে জানান। তার কথা না রাখায় গত ৩১ অক্টোবর আমাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরদিন বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির নির্বাচন বন্ধের জন্য নির্যাতন চালান। এবং তাকে দিয়ে আবেদনপত্র লিখিয়ে নিয়ে সেই নির্বাচন বন্ধ করান।

তিনি আরও অভিযোগ করেন, পরবর্তীতে বিদ্যালয়ে অভিভাবক সমাবেশ আহ্বান করা হয়। বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) এই সমাবেশ হওয়ার কথা ছিল। সমাবেশের দিন ঘোষণার পর চেয়ারম্যান মোস্তফা ফরিদ চৌধুরী ক্ষিপ্ত হোন। ৭ নভেম্বর ফোন করে প্রধান শিক্ষককে নিজের বাড়িতে ডাকেন মোস্তফা। পরদিন সকালে উপজেলা চেয়ারম্যানের বাড়িতে গেলে প্রায় দুই ঘণ্টা আটকে রেখে তাকে নির্যাতন করা হয় এবং অভিভাবক সমাবেশ বন্ধ করে দেয়।

নির্যাতনের বিষয়ে ওই শিক্ষক বলেন, চেয়ারম্যান ও তার লোকজন আমাকে ব্যাপক মারধর করেছে। মাথায়ও ব্যাপক আঘাত করে। পরে পরিবারের সহযোগিতায় হাসপাতালে যাই কিন্তু চেয়ারম্যান ফোন করে হাসপাতালে ভর্তি হতে দেয়নি। আমাকে প্রতিদিনই হুমকি দেয়া হচ্ছে। পরিবার-পরিজন নিয়ে চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। ঘটনার পর থেকেই বাড়ি থাকছি। ভয়ে বের হচ্ছি না।

ঘটনার বিষয়ে স্কুলটির বর্তমান সভাপতি এডভোকেট মোকাররম হোসেন বলেন, অভিভাবক সমাবেশ বন্ধ করা হলেও আমি বৃহস্পতিবার স্কুলে গিয়েছিলাম। খবর পেয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান লোকজন নিয়ে স্কুলে আসে। এ সময় আমাকে লাঞ্ছিত করে এবং স্কুল থেকে বেরিয়ে যেতে বাধ্য করে। পরে তারা প্রধান শিক্ষকের কক্ষে গিয়ে উচ্চস্বরে বলে- এখন থেকে আমার নির্দেশে সকল কার্যক্রম চলবে।

এ বিষয়ে বক্তব্য নিতে চাইলে এই প্রতিবেদককে বাসায় ডাকেন অভিযুক্ত মোস্তফা ফরিদ। তবে যাওয়ার পর তিনি কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি। উল্টো অনৈতিক সুবিধা দিয়ে বিষয়টি চেপে যেতে অনুরোধ জানান।

এদিকে, যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জুয়েল ইমরান জানিয়েছেন, নির্যাতনের ঘটনা জানলেও তারা এখনও কোনো অভিযোগ পাননি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেবেন।

/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply