সরকারের বেঁধে দেয়া দাম তো দূরের কথা চড়া দাম দিয়েও মিলছে না চিনি। খোলা চিনির জন্য ১৩০ আর প্যাকেটজাত প্রতি কেজির জন্য সরকার নির্ধারিত দাম ১৩৫ টাকা। কিন্তু রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি কেজিতে ১৫ থেকে ২০ টাকা বেশি গুণতে হচ্ছে।
দাম কমানোর জন্য জাতীয় রাজস্ববোর্ড গত ২ নভেম্বর অপরিশোধিত এবং পরিশোধিত চিনির আমদানি শুল্ক কমিয়ে অর্ধেকে নামিয়ে আনে। প্রতি টন অপরিশোধিত চিনির জন্য ১ হাজার ৫০০ টাকা আর পরিশোধিত চিনির আমদানি শুল্ক ৩ হাজার টাকা নির্ধারণ করা হয়। ব্যবসায়ীদের দাবি, দাম নিয়ন্ত্রণে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হলেও চিনির দাম না কমে বরং বেড়েছে। আমদানিতে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর ও ৩০ শতাংশ নিয়ন্ত্রক শুল্ক বহাল থাকায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে বলেও জানান তারা।
দোকানিরা বলছেন, চাহিদার অর্ধেকে নেমেছে সরবরাহ। তাই বাজারে যৎসামান্য চিনি পাওয়া গেলেও, বিক্রেতার নির্ধারিত দামেই চিনি কিনতে বাধ্য হচ্ছেন ক্রেতারা। গত বছরের জুলাই-সেপ্টেম্বরে আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম ছিল শূন্য দশমিক ৪ ডলার। অক্টোবরে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে শূন্য দশমিক ৫ দশমিক ৭ ডলারে। ডলারের দাম বৃদ্ধি এবং এলসি সংকটের জন্য চিনির বাজার নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যাচ্ছে বলে মনে করেন ভোগ্য পণ্য ব্যবসায়ীরা।
এ ব্যাপারে চিনি ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সহ-সভাপতি মো. আবুল হাশেম জানান, যেখানে সরকার প্রতি কেজিতে ৪০-৪২ টাকা শুল্ক আদায় করে, সেক্ষেত্রে এক অথবা দেড় টাকা কমালে কোনোকিছুই আসে যায় না।
মৌলভি বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক মো. গোলাম মাওলা বলেন, ডলারের দাম প্রতিনিয়ত বেড়েই চলছে। ডলারের দাম বাড়লে সব ধরনের খরচই বেড়ে যায়।
দেশে প্রতিবছর চিনির চাহিদা ২০-২২ লাখ টন। রাষ্ট্রায়ত্ত চিনিকলগুলোতে উৎপাদন হয় মাত্র ৪০-৫০ হাজার টন। বাকিটা ৫টি রিফাইনারি মিলের মাধ্যমে বাজারে আসে। পাইকারি বিক্রেতাদের অভিযোগ, মিলগেটের ডিও কারসাজির কারণে গুণতে হচ্ছে বাড়তি পরিবহন খরচ। যার প্রভাব পড়ছে চিনির দামে।
রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা টিসিবির তথ্য বলছে, এক মাসের ব্যবধানে চিনির দাম ৮ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। আর এক বছরের ব্যবধানে পণ্যটির দাম বেড়েছে ২৭ শতাংশ।
এএস/
Leave a reply