বিশ্বকাপের দ্বিতীয় সেমিফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আগে ব্যাট করতে নেমে ডেভিড মিলারের সেঞ্চুরির পরও মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্সের বোলিং তোপে ২ বল বাকি থাকতেই ২১২ রানে গুতিয়ে গেছে দক্ষিণ আফ্রিকার। জয়ের জন্য অস্ট্রেলিয়ার প্রয়োজন ২১৩ রান।
বৃহস্পতিবার (১৬ নভেম্বর) কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন প্রোটিয়া অধিনায়ক টেম্বা বাভুমা। ইনিংসের শুরু থেকেই উইকেট থেকে দারুণ সুইং আদায় করেন স্টার্ক-হ্যাজলউডরা। প্রথম ওভারেই অস্ট্রেলিয়াকে ব্রেক থ্রু এনে দেন স্টার্ক। বাঁহাতি এই পেসারের অফ স্টাম্পের কিছুটা বাইরে পিচ করা ডেলিভারি বেরিয়ে যাওয়ার মুখে খোঁচা মারেন বাভুমা। ব্যাটের বাইরের কানায় লেগে বল চলে যায় পেছনে। ডান দিকে ঝাঁপিয়ে দারুণ ক্যাচ নেন জশ ইংলিস। শূন্য রানেই ফিরতে হয় তাকে।
পুরো টুর্নামেন্টে দুর্দান্ত ছন্দে থাকা কুইন্টন ডি ককও দক্ষিণ আফ্রিকাকে ভালো শুরু এনে দিতে পারেননি। শুরুতে সময় নিলেও বড় ইনিংস খেলতে পারেননি বাঁহাতি এই ব্যাটার। হ্যাজলউডের লেংথ ডেলিভারি বেরিয়ে এসে উড়িয়ে মারতে চেয়েছিলেন ডি কক। টাইমিং না হওয়াতে টপ এজ হয়ে বল উঠে যায় অনেক উঁচুতে। বলে চোখ রেখে মিড অন থেকে বেশ কিছুটা পিছিয়ে গিয়ে মাথার উপর থেকে চমৎকার ক্যাচ নেন প্যাট কামিন্স। ১৪ বলে কেবল ৩ রান করে ফেরেন ডি কক।
ক্রিজে এসে ইনিংস বড় করতে পারেননি এইডেন মার্করামও। স্টার্কের ফুল লেন্থের বল ড্রাইভ করতে গিয়ে পয়েন্টে ডেভিড ওয়ার্নারের হাতে ধরা পড়েন মার্করাম।এই মিডল অর্ডার ব্যাটার ২০ বলে দুই চারে করেন ১০ রান। এদিকে ৩ নম্বরে ব্যাট করতে নেমে অনেকটা সময় ক্রিজে পড়ে থেকেও যেন থিতু হতে পারছিলেন না রাসি ফন ডার ডুসেন। সেই সুযোগটাই কাজে লাগান অজি পেসার হ্যাজলউড। অনেকটা ফুলার লেংথের বল পা বাড়িয়ে ড্রাইভ করতে চেয়েছিলেন ডুসেন। ঠিক মতো খেলতে পারেননি, ব্যাটের কানায় লেগে জমে পড়ে স্লিপে, স্টিভেন স্মিথের হাতে। ৩১ বলে ডুসেন করেন ৬ রান।
এরপর ধুঁকতে থাকা দলকে পথ দেখান ডেভিড মিলার ও হেনরিখ ক্লাসেন জুটি। শুরুর বিপর্যয় কাটিয়ে দু’জনই থিতু হয়েছেন উইকেটে। অজি বোলারদের হতাশ করে রানের গতিও বাড়ান মিলার ও ক্লাসেন। তাদের দারুণ এই জুটিতে ১০০ পেরোয় আফ্রিকার ইনিংস। ক্রিজে খুব স্বাচ্ছন্দ্যের সাথে খেলছিলেন দুই ব্যাটার, হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন মিলার।
৩১তম ওভারে বাধ্য হয়েই পার্ট টাইমার ট্রাভিস হেডকে বোলিংয়ে আনেন কামিন্স। আর এতেই ভাঙে ৯৫ রানের জুটি। ৪৮ বলে ৪৭ রান করা ক্লাসেনকে বোল্ড করে জুটি ভাঙেন হেড। পরের বলেই মার্কো ইয়ানসেনকে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে আবারও ম্যাচের গতিপথ অজিদের পক্ষে নিয়ে আসেন হেড।
১১৯ রান ৬ উইকেট হারানো দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসের হাল ধরে রাখেন মিলার, তাকে দারুণ সঙ্গ দিয়েছেন জেরাল্ড কোয়েৎজে। ৫৩ রানের এই জুটি অজিদের জন্য মাথাব্যাথার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। শেষ পর্যন্ত ১৯ রান করা কোয়েৎজেকে ১৯ রানে ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন কামিন্স।
সবাই ফিরে গেলেও একপ্রান্ত আগলে রেখে একাই লড়াই করেন মিলার। অজি বোলারদের ওপর ছড়ি ঘুরিয়ে তুলে নেন দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি। কামিন্সের বলে ছয় মেরে ৪৭ তম ওভারে পান ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ সেঞ্চুরি। সেঞ্চুরি পাওয়ার পরপরই অবশ্য ফেরেন মিলার। তার ১০১ রানের ইনিংসের সুবাদেই ২০০ পেরোয় দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংস। শেষ পর্যন্ত ২১২ রানে অলআউট হয় তারা। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে তিনটি করে উইকেট নেন মিচেল স্টার্ক ও প্যাট কামিন্স। দু’টি করে উইকেট শিকার করেন জশ হ্যাজলউড ও ট্রাভিস হেড।
/আরআইএম
Leave a reply