দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরার ৪টি আসনেই দলীয় মনোনয়ন পেতে তৎপর ক্ষমতাসীন দলের একাধিক নেতা। সবগুলো আসনেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে জাতীয় পার্টি। তবে এই মুহূর্তে এক দফা দাবি আদায়ের আন্দোলন ছাড়া অন্য কিছু ভাবছেন না স্থানীয় বিএনপি নেতারা।
তালা ও কলারোয়া উপজেলা নিয়ে সাতক্ষীরা-১ আসন। গত দুই জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আসনটি শরীক দল ওয়ার্কাস পার্টিকে ছেড়ে দেয় আওয়ামী লীগ। জয়ী হন দলটির নেতা মুস্তফা লুৎফুল্লাহ। এবার এখান থেকে মনোনয়নপ্রত্যাশী ক্ষমতাসীন দলের অন্তত এক ডজন নেতা। ব্যানার-ফেস্টুনসহ নানাভাবে জানান দিচ্ছেন নিজেদের প্রার্থীতা।
জেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ কামাল শুভ্র বলেন, দলকে সুসংগঠিত এবং পুনর্গঠন করতে দলীয় প্রার্থীকেই বেছে নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সদরের ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে সাতক্ষীরা-২ আসন। আওয়ামী লীগের টানা দু’বারের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহম্মেদ রবি এবারও মনোনয়ন প্রত্যাশী। এছাড়া নৌকার টিকিট পেতে কেন্দ্রে তদবীরের পাশাপাশি মাঠ পর্যায়ে কাজ করছেন ক্ষমতাসীন দলের একাধিক নেতারাও।
জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আসাদুজ্জামান বাবু বলেন, যে দিনই প্রার্থী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী আমাকে নির্বাচন করবেন, সেই দিনই দলের ৭০ শতাংশ ভোট নিশ্চিত হয়ে যাবে।
আশাশুনি ও দেবহাটা উপজেলার সাথে কালিগঞ্জ উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন নিয়ে সাতক্ষীরা-৩ আসন। বর্তমান সংসদ সদস্য ডা. আ.ফ.ম রুহুল হক এবারও দলের মনোনয়ন প্রত্যাশী। নৌকার মাঝি হতে চান আরও কয়েকজন।
সংসদ সদস্য রুহুল হক বলেন, আমি মনে করি প্রার্থীতা আমিই পাবো এবং নির্বাচিত হওয়ার বিষয়ে আমি শতভাগ আশাবাদী। অন্যদিকে আশাশুনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মোস্তাকিম হোসেন বলেন, নেত্রী একটি ভাষণে একদিন বলেছিলেন, আমি ৩০০ আসনে ফুলগাছ লাগিয়েছি। সেখান যে ফুলটি সবচেয়ে সুন্দর হবে, সেটিই আমি তুলে নিয়ে আসবো। আমি মনে করি, সেসব সুন্দর ফুলের মধ্যে আমি একটি।
এদিকে, শ্যামনগর উপজেলার ১২টি ও কালিগঞ্জের ৮টি ইউনিয়ন নিয়ে সাতক্ষীরা-৪ আসন গঠিত। এখানেও বর্তমান সংসদ সদস্যের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী একাধিক নেতা। এই আসনের সংসদ সদস্য এস.এম জগলুল হায়দার বলেন, দিনমজুর ও খেটে খাওয়া মানুষের সাথে আমার অবাধ বিচরণ রয়েছে। তাই এবারও দলীয় নেত্রী আমাকে মনোনয়ন দেবেন বলে আশাবাদী।
অন্যদিকে এক দফা দাবি আদায়ের আন্দোলন ছাড়া অন্য কিছু ভাবছে না বিএনপি। তবে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে এলে ৪টি আসনেই শক্ত প্রার্থী রয়েছে দলটির এ কথা জানিয়ে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ ইফতেকার আলী জানান, সরকারের পদত্যাগ এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন এই এক দফা দাবি নিয়ে মাঠে আছে বিএনপি।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরা-২ ও ৪ আসনে মহাজোট থেকে জয়ী হন জাতীয় পার্টির প্রার্থী। আসন্ন নির্বাচনে ৪টি আসনেই নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে দলটি। এই আসন থেকে মনোনয়ন পেলে জয়ী হওয়ার ব্যাপারে শতভাগ নিশ্চয়তার কথা জানান জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক আশরাফুজ্জামান আশু। অন্যদিকে প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ দিদার বখত বলেন, আওয়ামী লীগ যদি ক্ষমতায় আসে, তাহলে বিএনপিকে রাখবে না। আর বিএনপি ক্ষমতায় এলে আওয়ামী লীগকে রাখবে না। তবে জাতীয় পার্টি বাংলাদেশে শান্তিপূর্ণ অবস্থান ধরে রাখবে।
সাতক্ষীরায় জামায়াতের নিজস্ব ভোট ব্যাংক রয়েছে। নিবন্ধনহীন দলটি স্থানীয় বেশিরভাগ শীর্ষ নেতাই বর্তমানে কারাগারে কিংবা আত্মগোপনে রয়েছেন।
এসজেড/
Leave a reply