গাজায় ইসরায়েলি নৃশংসতার মধ্যেই বিশ্বজুড়ে আজ পালিত হবে মানবাধিকার দিবস

|

ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী কর্তৃক প্রকাশিত ছবিতে গাজা উপত্যকায় কর্মরত একজন সৈনিক।

গাজায় ইসরায়েলি নৃশংসতার মাঝেই বিশ্বজুড়ে আজ (১০ ডিসেম্বর) পালিত হবে ‘হিউম্যান রাইটস ডে’। এদিকে মানবাধিকারের তোয়াক্কা না করেই নিরস্ত্র ফিলিস্তিনিদের ওপর চালানো হচ্ছে বর্বরতা। টানা দুই মাস পেরুলেও থামানো যাচ্ছে না নির্বিচার হত্যাযজ্ঞ। বরং দিন দিন আরও আগ্রাসী হচ্ছে ইহুদী বাহিনী। যেন, গাজাকে পৃথিবীর মানচিত্র থেকে মুছে ফেলাই তাদের লক্ষ্য।

১৯৪৮ সালের এই দিনে অর্থাৎ ১০ ডিসেম্বর, জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে গৃহীত হয় মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণাপত্র। ১৯৫০ সালে এই দিনটিকে ঘোষণা করা হয় বিশ্ব মানবাধিকার দিবস হিসেবে। তবে ৭৩ বছর পেরিয়ে গেলেও বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে এখনও পদদলিত মানবাধিকার। যার সবচেয়ে বড় উদাহরণ ফিলিস্তিন।

বছরের পর বছর সেখানে নির্বিচারে হত্যা করা হচ্ছে লাখ লাখ মানুষকে। উৎখাত করা হচ্ছে নিজ বসত-ভিটা থেকে। অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে ফেলেছে এবারের আগ্রাসন। হাসপাতাল থেকে শরণার্থী শিবির-সবখানে চালানো হচ্ছে হামলা। এমনকি বাধা দেয়া হচ্ছে খাবার-পানি ও জ্বালানি সরবরাহে। মিলছে না জরুরি চিকিৎসা সেবাও।

ফিলিস্তিনের এক নাগরিক জানান, আমরা এক সপ্তাহ ধরে কিছু খাইনি। শুধু পানি খেয়ে আছি। এতো ক্ষুধা লেগেছে যে যেকোনো কিছু খেতে পারবো। কিন্তু, এখানে কিছুই নেই! আমার মেয়ে অসুস্থ। পায়ে জখম হয়েছে। গায়ে জ্বর। এই অসুস্থ অবস্থায় আমার মেয়েটা এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে না খেয়ে আছে। এমনকি ওষুধও দিতে পারছি না।

তিনি আরও বলেন, আমার মেয়ের হাঁপানি আছে। কিন্তু আমাদের কাছে না আছে ইনহেলার, না আছে নেবুলাইজার। চোখের সামনে মেয়েটাকে কষ্ট পেতে দেখছি। কিন্তু কিছুই করার নেই

যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকাগুলোতে দেখা দিয়েছে খাবার পানির সংকট। নেই জ্বালানি। চলছে না গাড়িও। তাই পানি সংগ্রহে হাটতে হচ্ছে কয়েক কিলোমিটার।

পানি নিতে আসা এক ফিলিস্তিনি বলেন, সামান্য পানির জন্য এতো দূর হেটে এসেছি। কোথাও একটু খাবার পানি পাচ্ছি না। বাধ্য হয়ে লবণাক্ত পানি খেতে হচ্ছে। যা খেয়ে অনেকের ডায়রিয়া হয়েছে। বেঁচে থাকতে এটাই আমাদের খেতে হচ্ছে। কিছুই করার নেই।

এদিকে, ফিলিস্তিনি বন্দিদের ওপরও চলছে নির্মম নির্যাতন। প্রচণ্ড শীতে তাদের রাখা হচ্ছে অর্ধনগ্ন অবস্থায়। পিটিয়ে ভেঙে ফেলা হচ্ছে হাত-পা। এমনকি অভিযোগ উঠছে ধর্ষণেরও।

গাজায় এমন চরম মানবিক বিপর্যয়ে বরাবরই নিশ্চুপ থেকেছে মানবাধিকারের বুলি আওড়ানো প্রভাবশালী পশ্চিমা রাষ্ট্রগুলো। বরং যুক্তরাষ্ট্রের মতো মোড়ল দেশগুলোর মদদেই ফিলিস্তিনিদের ওপর চড়াও হয় ইসরায়েল। চালায় নৃশংসতা।

গাজাবাসীর বেঁচে থাকার অধিকার নিশ্চিতে এখন পর্যন্ত চরমভাবে ব্যর্থ জাতিসংঘ। একাধিকবার ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে দুই-রাষ্ট্রভিত্তিক সমাধানের কথা বললেও কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নিতে পারেনি সংস্থাটি। তাই মানবাধিকার দিবসে আবারও প্রশ্ন উঠেছে জাতিসংঘের সক্ষমতা নিয়ে।

/এমএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply