প্রি-টেস্টে ফেল, ছেলেকে এইচএসসিতে জিপিএ ৫ দেয়ার অভিযোগ বোর্ড সচিবের বিরুদ্ধে!

|

সচিবকে নিয়ে তোলপাড় চলছে চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডে। প্রভাব খাটিয়ে ছেলেকে পাশ করিয়েছেন, এমন সন্দেহে উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন জানিয়েছেন অজ্ঞাত এক ব্যক্তি। বিষয়টি টের পেয়ে জিডি করেছেন সচিবের স্ত্রী। এমন কাণ্ডে সৃষ্টি হয়েছে চাঞ্চল্য। সচিবের আগের অনিয়ম এবং তদন্তের বিষয়টিও সবার মুখে মুখে।

ঘটনার সূত্রপাত চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ডের সচিব নারায়ন চন্দ্র নাথের ছেলে নক্ষত্র দেবনাথকে ঘিরে। এবার এইচএসসি পরীক্ষায় বাংলা ছাড়া সব বিষয়েই জিপিএ ফাইভ পেয়েছেন তিনি। সবই ঠিকঠাক, কিন্তু বিপত্তি বাঁধে, ছেলের বাংলা বিষয়ে পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করতে গিয়ে। সচিব দেখেন আগেই ৬টি বিষয়ের ১২টি পত্রের পুনঃনিরীক্ষণ আবেদন করে রেখেছেন কেউ। এরপর থানায় জিডি করেন সচিবের স্ত্রী বনশ্রী নাথ।

ঘটনার জানাজানির পর তোলপাড় শুরু হয় শিক্ষাবোর্ডে। গুঞ্জন আছে, ফলাফলের চেয়ে, কম নম্বর পেয়েছেন সচিবের ছেলে, যা জানতেন বোর্ডের কেউ। তাই বেনামে কেউ আবেদন করেছেন। রহস্য উন্মোচনে তদন্ত এবং প্রভাবমুক্ত পুনঃনিরীক্ষণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষাবিদেরা।

এ ব্যাপারে শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ইদ্রিস আলী বলেন, ফোন করে বিভিন্ন পরীক্ষকের কাছ থেকে খাতা আনিয়েছেন, একজন সাবেক পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক, সচিব। তিনি এখন বোর্ডকে ব্যক্তিগত ব্যবসায়িক উপাদানে পরিণত করেছে।

অভিযোগ রয়েছে, ভর্তির যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও প্রভাব খাটিয়ে বিশেষ কোটায় ছেলেকে চট্টগ্রাম ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক কলেজে ভর্তি করিয়েছিলেন সচিব। প্রি-টেস্ট পরীক্ষায় একাধিক বিষয়ে ফেল করায়, বোর্ড পরীক্ষার ফলাফলেও কারসাজির সন্দেহ জোরালো হয়।

এছাড়া ছেলের উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণ না করার জন্য সচিব আবেদন করেছেন বলে অভিযোগ উঠলেও, চট্টগ্রাম শিক্ষাবোর্ড চেয়ারম্যান মোস্তফা কামরুল আক্তারের দাবি ভিন্ন। তিনি বলেন, এর পেছনে কে আছে, যদি আইন প্রয়োগকারী সংস্থা তদন্ত করে তবে কোনো ক্লু পাওয়া যেতে পারে।

এর আগে, ২০২১ সালে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক থাকাকালে এইচএসসির ফলাফলে কারসাজির অভিযোগ উঠে নারায়ন চন্দ্রের বিরুদ্ধে। অসঙ্গতির সত্যতাও পায় মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটি।

এ ব্যাপারে বোর্ডের সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান আবদুল আলীম আগের অভিযোগের প্রসঙ্গে বলেন, মন্ত্রণালয় থেকে তদন্ত কমিটিকে আমলে নিয়ে একজনের শাস্তি বোর্ড থেকে দিয়েছিলাম। কিন্তু উনি (সচিব নারায়ন চন্দ্র নাথ) যেহতু শিক্ষা ক্যাডার কর্মকর্তা, সেহেতু উনার শাস্তি নিশ্চিত করার দায়িত্ব মন্ত্রণালয়ের। কিন্তু কোনো এক কারণে উনাকে শাস্তি দেয়া হয়নি। এটা রহস্যজনক।

এসব বিষয়ে জানতে সচিবের দফতরে গেলে কর্মচারীরা জানান বিশেষ কাজে সচিব সিঙ্গাপুরে গেছেন। পরে ২য় দফা গিয়ে ৪ ঘণ্টা অপেক্ষার পর দেখা মিললেও, ক্যামেরার সামনে কথা বলতে রাজি হননি তিনি।

এটিএম/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply