নিজেদের পছন্দের পাত্রকে বিয়ে না করায় নিজের কিশোরী মেয়েকেই হত্যা করেছেন বাবা-মা! গত মঙ্গলবার (১৯ ডিসেম্বর) ইতালিতে ঘটেছে এই ঘটনা। ঘাতক সেই দম্পতি হলেন পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত। তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন ইতালির একটি আদালাত। খবর বিবিসির।
মূলত, ২ বছর আগে নিখোঁজ হয়ে যায় সামান আব্বাস নামে ওই কিশোরী। এ ঘটনায় ইতালিতে বেশ চাঞ্চল্যও তৈরি হয়। এরপরই কিশোরীর খোঁজে তদন্তে নামে পুলিশ। প্রায় ১৮ মাস পর মেয়েটির বাবা যে ফার্মহাউজে কাজ করতেন সেখান থেকেই উদ্ধার করা হয় তার দেহাবশেষ।
তদন্তে হত্যার পেছনে ওই কিশোরীর বাবা-মায়ের নাম উঠে আসে। আদালতেও সন্তান হত্যার দায়ে দোষী সাব্যস্ত হন সামানের বাবা-মা। তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। সেই সাথে পরিবারের আরেক সদস্যকে দেয়া হয় ১৪ বছরের সাজা।
আদালত বলছে, অনার কিলিং অর্থাৎ সম্মান রক্ষার অজুহাতে হত্যা করা হয় ১৮ বছর বয়সী ওই কিশোরীকে। জুরি বোর্ডের প্রেসিডেন্ট ক্রিস্তিনা বেরেত্তি বলেন, ইতালির জনগণের পক্ষে কোর্ট রেজিও এমিলিয়া এই রায় শোনাচ্ছে। ফৌজদারি ধারা ৫৩৩ এবং ৫৩৫ এর অনুচ্ছেদ বি অনুযায়ী, শাবর আব্বাস এবং শাহিনা নাজিয়া দোষী সাব্যস্ত হয়েছেন। ৫৭৭ ধারা অনুযায়ী দোষীদের যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হলো। পাশাপাশি বিচার কাজ ও সাজা প্রয়োগের যাবতীয় ব্যয়ও তাদের বহন করতে হবে।
আদালতের রায়ে বলা হয়, পরিবারের পছন্দের পাত্রকে বিয়ে করতে রাজি না হওয়ায় এই চাঞ্চল্যকর হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয়েছে। বাবা-মায়ের সাথে ইতালি পাড়ি জমানো সামান পশ্চিমা জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়ে পড়েন। এর এক পর্যায়ে প্রেমিকের সাথে অন্তরঙ্গ ছবি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করা হলে ক্ষুব্ধ হন সামানের বাবা-মা। তার জেরেই খুন করেন নিজ মেয়েকে।
অবশ্য অভিযোগ ওঠার পরই এই দম্পতি পাকিস্তানে পালিয়ে গিয়েছিলেন। পরে বাবা শাবর আব্বাসকে গ্রেফাতারের পর বিচারের জন্য ইতালিতে হস্তান্তর করা হয়। রায়ের সময়ও আদালতে উপস্থিত ছিলেন তিনি, নিজেকে নির্দোষ দাবিও করেছেন। মা শাহিনা নাজিয়া এখনও পলাতক।
এসজেড/
Leave a reply