জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ২৪ দফা ইশতেহার ঘোষণা করেছে জাতীয় পার্টি (জাপা)। এতে গুরুত্ব পেয়েছে নির্বাচন ব্যবস্থার সংস্কার, আদালত, দুদক ও ইসিকে সরকারের নিয়ন্ত্রণমুক্ত করাসহ বেশ কিছু বিষয়।
বৃহস্পতিবার (২১ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর বনানী কার্যালয়ে ইশতেহারের ঘোষণা করেন দলটির মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু।
তিনি দাবি করেন, ৩৩ বছরে সুশাসন নষ্ট হয়েছে। তাই মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে আনা, দুর্নীতি বন্ধ করাসহ বিভিন্ন ইস্যুকে প্রাধান্য দেয়া হয়েছে ইশতেহারে। বিচারের দীর্ঘসূত্রতা দূর করতে কমিশন গঠনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছে দলটি।
ইশতেহারে প্রাদেশিক ব্যবস্থার প্রবর্তন করে ঢাকার বিকেন্দ্রীকরণের কথাও বলা হয়েছে। এ বিষয়ে চুন্নু বলেন, আটটি বিভাগকে করা হবে প্রাদেশিক সরকার। দুই স্তর বিশিষ্ট কাঠামো থাকবে। প্রতি জেলা ও উপজেলাকে প্রাদেশিক আসন হিসেবে গণনা করা হবে।
জাতীয় পার্টির মহাসচিব বলেন, নির্বাচিত হলে যাবতীয় কালাকানুন ও বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল করা হবে। প্রচলিত শিক্ষা ব্যবস্থা পরিবর্তন করে চালু করা হবে কর্মমুখী শিক্ষা ব্যবস্থা। ইশতেহারে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবিলা ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে গুরুত্ব দেয়া হয়েছে। যে দলই ক্ষমতায় আসুক, ইশতেহারের কোনো অংশ বাস্তবায়ন করলে তা জাতীয় পার্টি ইতিবাচক হিসেবে দেখবে বলে জানান চুন্নু।
ইশতেহার ঘোষণা শেষে চুন্নু এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, আমরা হরতালের পক্ষে না। আমরা গাড়ি ভাঙচুর করি না। হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ এই শিক্ষা দেননি আমাদের। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে কোনো সময় কোনো দলই খুশি হয়নি। ভোট যদি আনুপাতিক হারে হয়, তবে ভোট নিয়ে কোনো কারচুপি হবে না।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জাপা মহাসচিব বলেন, এবার আওয়ামী লীগের চেয়েও বেশি আসনে প্রার্থী দিয়েছে জাপা। এরপরও কেন আওয়ামী লীগ আমাদের আসন ছেড়ে দিয়েছে, সেটি তারাই ভালো বলতে পারবে। আমরা কিন্তু মহাজোট না, আমরা এককভাবে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন করছি। আওয়ামী লীগের সাথে অনেকবার মিটিং হয়েছে, আরও হবে। সেই আলোচনায় অনেক সময় অনেক কিছু হবে। সবতো বলা যায় না।
ইশতেহারে জাপা যেসব অঙ্গীকার করেছে সেগুলো হলো— প্রাদেশিক ব্যবস্থা প্রবর্তন, নির্বাচন পদ্ধতির সংস্কার, পূর্ণাঙ্গ উপজেলা ব্যবস্থা প্রবর্তন, সুশাসনের বাংলাদেশ, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ও মামলাজটের অবসান, শিক্ষিত-অশিক্ষিত বেকার যুবকদের কর্মসংস্থান, স্বাস্থ্যসেবা সম্প্রসারণ, শিক্ষাপদ্ধতির সংশোধন, সন্ত্রাস দমন ও মাদকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা, ইসলামের আদর্শ ও ধর্মীয় মূল্যবোধ, সর্বোচ্চ ভর্তুকি দিয়ে কৃষকের কল্যাণ সাধন, খাদ্যনিরাপত্তা, নদী সংরক্ষণ ও ভাঙনরোধে ব্যবস্থা, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে স্থিতিশীলতা, শিল্প ও অর্থনীতির অগ্রগতি সাধন, ধর্মীয় সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর স্বার্থ সংরক্ষণ, পররাষ্ট্রনীতিতে সবার সঙ্গে বন্ধুত্ব, নারী সমাজের কল্যাণ সাধন, জলবায়ু পরিবর্তন ও নবায়নযোগ্য জ্বালানি, আর্থিক প্রতিষ্ঠান-মুদ্রানীতি-রাজস্বনীতির সংস্কার, গুচ্ছগ্রাম পথকলি ট্রাস্ট পুনঃপ্রতিষ্ঠা, রেশনিং চালু, যোগাযোগ ব্যবস্থার সংস্কার ও অভিবাসন।
/এএম
Leave a reply