স্টাফ করেসপনডেন্ট, রংপুর:
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রচারণার অংশ হিসেবে আগামীকাল মঙ্গলবার (২৬ ডিসেম্বর) রংপুরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তারাগঞ্জ এবং পীরগঞ্জে পৃথক নির্বাচনী জনসভায় অংশ নেয়ার কথা রয়েছে তার। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীর এই নির্বাচনী প্রচারণার সমস্ত প্রস্তুতি প্রায় সম্পন্ন করা হয়েছে। সেই সাথে সাত স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আব্দুল বাতেন।
এনিয়ে রংপুর জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মোবাশ্বের হাসান জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মঙ্গলবার সকাল ১০টা ৪০ মিনিটের ফ্লাইটে আন্তর্জাতিক শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে সৈয়দপুরের উদ্দেশে রওনা হবেন। সেখান থেকে তিনি সড়ক যোগে রংপুরের তারাগঞ্জ ওয়াকফস্টেট সরকারি কলেজ মাঠে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আহসানুল হক চৌধুরী ডিউকের পথসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন।
বক্তব্য শেষে প্রধানমন্ত্রী যাবেন পীরগঞ্জে তার শ্বশুরবাড়ি জয় সদনে। সেখানে স্বামী প্রয়াত পরমাণু বিজ্ঞানী ড. ওয়াজেদ মিয়ার কবর জিয়ারত শেষে দুপুরের খাবার খাবেন। পরে বিকেল সাড়ে ৩টায় পীরগঞ্জ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে স্থানীয় আওয়ামী লীগ আয়োজিত রংপুর-৬ আসনের প্রার্থী ড. শিরীন শারমিন চৌধুরীর জনসভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখবেন শেষ হাসিনা।
সরেজমিনে দেখা গেছে, তারাগঞ্জ এবং পীরগঞ্জের জনসভাস্থল এরই মধ্যে প্রস্তুত করা হয়েছে। নিরাপত্তার চাদরে ঢেকে ফেলা হয়েছে জনসভাস্থল। প্রস্তুত মাঠ-মঞ্চ, বিভিন্ন স্থান থেকে আসা মানুষের জন্য গাড়ি পার্কিং এবং যাতায়াতের রুট ঠিক করে দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, রংপুরের ৬টি আসনের মধ্যে রংপুর-১ এবং রংপুর-৩ আসনে নৌকার প্রার্থী উঠিয়ে নিয়েছে আওয়ামী লীগ। ২০১৮ সালের নির্বাচনেও ওই দুটি আসনে প্রার্থীতা দেয়নি নৌকা। তখনও প্রচারণা চালাতে সশরীরে এসেছিলেন আওয়ামী লীগ সভানেত্রী ও বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা। এবারও তিনি আসছেন নৌকায় ভোট চাইতে।
নির্বাচন উপলক্ষে এবার আরও বেশি সরগরম এলাকায় এলাকায়। এবার প্রার্থীরা আরও বেশি সমর্থক নিয়ে জনসভাস্থলগুলোতে আসবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়ে সাটানো হয়েছে ব্যানার, পোস্টার, বিলবোর্ড ও ফেস্টুন। গেট সাজানো হয়েছে পুরো বিভাগ জুড়ে। জনসভাস্থলে প্রস্তুত নৌকার আদলের মঞ্চ। এসএসএফসহ রাষ্ট্রীয় আইন শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা সর্বোচ্চ সতর্কতায় মাঠ ও মঞ্চ প্রস্তুত করেছেন বলে জানানো হয়েছে। মঞ্চের পাশেই করা হয়েছে মিডিয়াবক্স, মুক্তিযোদ্ধা ও অতিথি কর্ণার। সামনে থাকবে জনতা। নারীদের জন্য বাঁশের ডিভাইডার দিয়ে আলাদা করা হয়েছে স্থান।
জনসভাকে ঘিরে মাঠসহ আশেপাশের এলাকায় বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। পোশাকী ও সাদা পোশাকের বিপুল সংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে দুটি এলাকাতেই। প্রধানমন্ত্রীর জনসভাকে ঘিরে সৈয়দপুর থেকে পীরগঞ্জ পর্যন্ত সড়ক মহাসড়কগুলোতে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তায় নিয়েছে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী।
রংপুর রেঞ্জ ডিআইজি আব্দুল বাতেন জানান, প্রধানমন্ত্রীর সফরকে ঘিরে সাত স্তরের নিরাপত্তা বলয় তৈরি করা হয়েছে জনসভাস্থল এবং সড়ক মহাসড়কগুলোতে। পোশাকি ছাড়াও সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
রংপুর-৬ আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী জানান, প্রধানমন্ত্রীর শ্বশুরবাড়ি পীরগঞ্জ। তিনি রংপুরের উন্নয়নের দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে কাজ করছেন। এরই মধ্যে সমস্ত উন্নয়ন দৃশ্যমান। আমাকে তিনি তার প্রতিনিধি হিসেবে শুধু উন্নয়ন দেখভাল করার দায়িত্ব দিয়েছেন। এবারও তিনি আমাকে মনোনয়ন দিয়েছেন। তিনি তার নিজের লোকজনের কাছে সশরীরে আসছেন ভোট চাইতে। তার এই আগমণ পীরগঞ্জের সকল ভোটারদের একত্রিত করেছে। তারা আমাকে সর্বোচ্চ ভোট দিয়ে এবারও নির্বাচিত করবেন ইনশাআল্লাহ।
তিস্তা বাঁচাও নদী বাঁচাও সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অধ্যক্ষ নজরুল ইসলাম হক্কানী জানালেন, প্রধানমন্ত্রী তিস্তা মহাপরিকল্পনা বাস্তবায়নের ঘোষণা জিলা স্কুল মাঠে দিয়েছেন। তিনি আন্তরিক বলেই ভার্চুয়াল সভায় সেটি আবারও বাস্তবায়নের প্রতি জোর দিয়েছেন। রংপুরের সকল স্তরের মানুষের দাবি, মঙ্গলবারের রংপুরের জনসভায় নির্বাচনের পর সরকার গঠন করে প্রথম তিস্তা মহাপরিকল্পনা কাজ শুরু করার কথা জানাবেন প্রধানমন্ত্রী। যা এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের পক্ষে ভোটের জোয়ার তৈরিতে ভূমিকা রাখবে।
এসজেড/
Leave a reply