সাবেক আমলা থেকে মন্ত্রী

|

ফাইল ছবি

নতুন সরকারে মন্ত্রীত্ব পেয়েছেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনের টানা চারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী। তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক একান্ত সচিব। ২০১১ সালে উপ-নির্বাচনে তিনি প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এরপর থেকে এই আসনটি তার দখলেই রয়েছে। এবার গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পেয়েছেন সাবেক এই আমলা।

১৯৫৫ সালের ১ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার চিনাইর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ঢাকা কলেজে অধ্যয়নকালে তিনি ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যুক্ত হন। ১৯৬৯ সালে ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) নির্বাচিত হন মোকতাদির। ১৯৭০ সালে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যকরী সংসদের সহ-সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন।

১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠন হলে বঙ্গবন্ধুর ২১ সদস্য বিশিষ্ট জাতীয় ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটিতে সদস্য হিসেবে জায়গা পান তিনি। ১৯৭৩-৭৪ সালে ছাত্রলীগ-ছাত্র ইউনিয়নের সমন্বয়ে গঠিত ‘ছাত্র সমাজের শিক্ষা কমিশন’র সদস্য মনোনীত হন।

১৯৮৩ সালে তিনি বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের প্রশাসন ক্যাডারে যোগদান করেন। ১৯৮৬ সালে তদানিন্তন বিরোধী দলের নেতা শেখ হাসিনার সহকারি একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ, মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রণালয় এবং পরিবেশ ও বন মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেন তিনি।

১৯৯৪ সালে হবিগঞ্জ সদর থানার নির্বাহী কর্মকর্তা পদে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত সচিব হিসেবে যোগদান করেন। ২০০৫ সালে তিনি সরকারি চাকরি থেকে পদত্যাগ করে আওয়ামী লীগের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত হন।

১৯৭০ সালে ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের সাধারণ সম্পাদক থাকাকালে তিনি পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর হাতে গ্রেফতার হন। ’৭৫-এ বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের পর প্রতিরোধ সংগ্রাম গড়ে তুলতে গিয়েও গ্রেফতার হন। সেময় তিনি ২৩ মাস কারাবাস করেন। ২০০৮ সালে সেনাসমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে আবারও গ্রেফতার হন।

তিনি ২০১১ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর-বিজয়নগর) আসন থেকে উপ-নির্বাচনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। পরে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

দশম জাতীয় সংসদে তিনি পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ছিলেন। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি টানা তৃতীয়বারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। সেবার বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ও জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য এবং সরকারি হিসাব সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

এছাড়া, ২০১৪ সাল থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সাবেক সদস্যও। র.আ.ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী ছাত্রজীবন থেকে লেখালেখির সাথে যুক্ত। তিনি বাংলাদেশের ছাত্রলীগের একসময়ের মুখপত্র ‘মাতৃভূমি’র সম্পাদক (১৯৭২-৭৫) ছিলেন।

ব্যক্তিগত জীবনে তার স্ত্রী প্রফেসর ফাহিমা খাতুন একজন শিক্ষাবিদ। তিনি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদফতরের মহাপরিচালক ও ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষাবোর্ডের চেয়ারম্যান এবং বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির দু’বারের নির্বাচিত সভাপতি ছিলেন।

/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply