কৃষক পর্যায়ে সস্তায় দুধ কিনে তা উচ্চমূল্যে বিক্রি করতে গিয়ে ভেজাল আর অন্যায়ের আশ্রয় নিচ্ছে প্রাণ ডেইরি। সিরাজগঞ্জে কোম্পানিটির জন্য সংগ্রহ করা তরল দুধে নোংরা পানি মেশানোর প্রমাণ পেয়েছে প্রশাসন। দুধ পরীক্ষার সময় তাতে জীবন্ত মাছও মিলেছে। এসব অপরাধ চক্রের হোতা আটকের পর ভোগ্য পণ্য সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে তদন্তের সুপারিশ করেছে উপজেলা প্রশাসন।
সিরাজগঞ্জের গ্রামাঞ্চলে দুধ ব্যবসায়ীদের ভেজালের কারবার ওপেন সিক্রেট। ৪০ লিটার দুধে ৮ লিটার মিশ্রণ দেয়া হচ্ছে। সেই মিশ্রণ তৈরি হচ্ছে নদীর পানির সাথে খাবার সোডা সহকারে। প্রশাসনের আকস্মিক অভিযানে শনিবার এই চক্রের অন্যতম হোতা মোতালেব আটক হয় হাতেনাতে। তার জবানবন্দিতে উঠে আসে ভেজাল দুধের গন্তব্য।
আব্দুল মোতালেব জানান, প্রাণ কোম্পানিতে দুধ দিয়ে আসি। তারা লিটার ধরে কিনে নেয়। তারা এই দুধ দিয়ে পাউডার করে, ছানা কাটে। লিটারে দাম দেয় ৩৫ টাকা।
উল্লাপাড়া থানার এসআই নূরে আলম সিদ্দিকী বলেন, আটক মোতালেব স্বীকার করেছে যে, তারা দুধে নদীর পানি মিশিয়েছে। এই দুধ প্রাণ কোম্পানিসহ বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করে।
প্রশাসনের নজরদারি আর কঠোর অভিযানেও এদের নিয়ন্ত্রণে আনা যাচ্ছে না। প্রতিনিয়ত কৌশল আর অবস্থান পাল্টে অভিনব সব প্রতারণার আশ্রয় নিচ্ছে সিন্ডিকেট। কোম্পানির অতি মুনাফার যোগানদার এই সিন্ডিকেট সদস্যরা এতটাই বেপরোয়া যে, খাল বিলের উন্মুক্ত জল মিশিয়ে দিচ্ছে অবলীলায়। তাই প্রাণের জন্য রাখা ভেজাল দুধের ভেতরেই মিলছে ময়লা, আবর্জনা এমনকি জীবন্ত মাছও।
নিরাপদ খাদ্য বিষয়ক কর্মকর্তা এস এম শহিদুল ইসলাম রিন্টু জানান, যখন দুধ ঢেলে ফেলে দিচ্ছিলাম তখন একটা ক্যান থেকে তাজা একটা ট্যাংরা মাছ পাই। এছাড়া নদীর পানিতে প্রচুর ব্যাকটেরিয়া থাকে এবং দুধে ব্যাকেটেরিয়া দ্রুত বাড়ে তাই এটি জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতি।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে গেলে শীতলীকরণ কেন্দ্রে দায়িত্বরত কেউ কথা বলতে রাজি হননি।
উপজেলা নির্বাহী কমকর্তা মো. আরিফুজ্জামান বলেন, এ বিষয়টি আমরা খতিয়ে দেখবো এবং যথাযথ কর্তৃপক্ষ যাতে বিষয়টি অধিকতর তদন্ত করে সেজন্য আমরা জানাবো।
এদিকে, প্রাণের বিরুদ্ধে দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যে ভেজালের অভিযোগ পুরনো। সবশেষ গত এপ্রিলে শীতলীকরণ কেন্দ্রে ল্যাব সুবিধা না থাকায় এবং ভেজাল দুধ কেনার দায়ে প্রাণ ডেইরিকে জরিমানা করে ভ্রাম্যমাণ আদালত।
Leave a reply