ইরান-পাকিস্তান উত্তেজনা তুঙ্গে

|

ফাইল ছবি।

পাকিস্তানের ভূখণ্ডে ইরানের মিসাইল ও ড্রোন হামলাকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা তুঙ্গে। তেহরানের অভিযোগ, দফায় দফায় তাগাদা দেয়ার পরেও সন্ত্রাসবাদ দমনে ইসলামাবাদ কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নেয়নি। বাধ্য হয়েই এ অভিযান। এদিকে পাল্টা জবাব দেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তানও।

সুইজারল্যান্ডের দাভোসে ওয়ার্ল্ড ইকোনোমিক ফোরামের সম্মেলনে পাকিস্তানে হামলা ইস্যুতে প্রশ্ন করা হয় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে। তবে তা এড়িয়ে যান তিনি। পরে সাংবাদিক সম্মেলনে গণমাধ্যম কর্মীদের প্রশ্নের মুখে জানান, জয়েশ আল আদল মূলত ইরানভিত্তিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠী যারা ঘাঁটি গেড়ে আছে পাকিস্তানের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলোয়। মাতৃভূমির স্বার্বভৌমত্ত্ব রক্ষায় তাদের অবস্থানে অভিযান চালানো হয়েছে।

তিনি স্পষ্ট করে বলেন, পাকিস্তান আমাদের লক্ষ্য নয়। বরং পাকিস্তানি ভূমিতে থাকা সন্ত্রাসীরা আমাদের টার্গেট। আমরা পাকিস্তানের সার্বভৌমত্বকে সম্মান করি। কিন্তু ইরানের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা তাদের খেলা করতে দিতে পারি না।

এদিকে পাকিস্তানী ভূখণ্ডে ইরানের এই অভিযানকে কেন্দ্র করে কূটনৈতিক বিবাদ চরমে পৌছেছে তেহরান-ইসলামাদের মধ্যে। ইরানের অভিযোগ বারবার তাগিদ দেয়া স্বত্ত্বেও সন্ত্রাসীদের দমাতে কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেয়নি পাকিস্তান। তাই বাধ্য হয়েই এমন পদক্ষেপ।

ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ হোসেইনিও বললেন একই কথা। বলেন, এই ইস্যুতে আমরা পাকিস্তানকে বারবার তাগাদা দিয়েছি। তারা যেন এই সন্ত্রাসীদের বিস্তার রোধ করতে কার্যকর ব্যবস্থা নেয় সেই বিষয়ে জানিয়েছি। এই সন্ত্রাসীরা ইরানের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে সহিংসতা সৃষ্টি করছে। তাই ইরান তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে এটাই স্বাভাবিক।

এখানেই শেষ নয়, তেহরান বলছে প্রয়োজনে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে পাকিস্তানে থাকা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে। মোহাম্মদ হোসেইনি আরও বলেন, তারা যদি ইরানি ভূখণ্ডে আঘাত হানে তাহলে আমরাও পাল্টা জবাব দেবো। এমন হুশিয়ারী তেহরান আগেই দিয়ে রেখেছিলো। আমাদের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা বলেছেন, এখন আর লুকিয়ে থাকার সময় নেই। ইরানের যতটুকু ক্ষতি হবে, ইরানও ততটুকুরও জবাব দেবে। আকাশ, মাটি কিংবা পানি, যেখানেই হোক না কেন, শত্রুদের কোনো ছাড় দেয়া হবে না।

এ অবস্থায়, পাল্টা ব্যবস্থা নেয়ার হুশিয়ারি দিয়েছে পাকিস্তানও। পরিস্থিতি জটিল হয়ে উঠলে এর দায়ভার তেহরানকে নিতে হবে বলেও জানায় ইসলামাবাদ।

পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র মুমতাজ বালুচ বলেন, ইরান যে আচরণ করেছে তা আন্তর্জাতিক আইনের পুরোপুরি লঙ্ঘন। যত ব্যখ্যাই দেয়া হোক না কেন এ ধরণের আচরণ কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। পাকিস্তানেরও এই ধরণের আচরণের পাল্টা জবাব দেয়ার অধিকার রয়েছে। এর ফলশ্রুতিতে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হবে তার দায় নিতে হবে তেহরানকেই। এরইমধ্যে ইরান থেকে আমাদের রাষ্ট্রদূতকে প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর পাশাপাশি আসন্ন দিনগুলোতে দুই দেশের মধ্যে অনুষ্ঠেয় যতগুলো উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক রয়েছে সবগুলো বাতিল করা হয়েছে।

/এমএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply