নাইট্রোজেন গ্যাস দিয়ে মৃত্যুদণ্ড: ব্যাপক সমালোচনার মুখে যুক্তরাষ্ট্রের আলাবামা রাজ্য

|

কেনেথ স্মিথে নিজেও এমন পন্থায় শাস্তি কার্যকরের বিরোধিতা করছেন। ছবি: ফক্স নিউজ।

নাইট্রোজেন গ্যাস দিয়ে এক আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হয়েছে তোলপাড়। দেশটির আলাবামা অঙ্গরাজ্যের এমন সিদ্ধান্তে সৃষ্টি হয়েছে ব্যাপক সমালোচনার। এই পদ্ধতিকে মানবাধিকার লঙ্ঘন বলছে জাতিসংঘসহ বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন। এক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম ফক্স নিউজ এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মৃত্যুদণ্ড কার্যকরে ফাঁসি কিংবা প্রাণঘাতী ইনজেকশনের ব্যবহার সবচেয়ে প্রচলিত। দেশ ভেদে সর্বোচ্চ এ শাস্তি প্রয়োগে আরও কিছু পদ্ধতিও দেখা যায়। তবে প্রথমবারের মতো নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করে আসামির মৃত্যুদণ্ড কার্যকর প্রসঙ্গে প্রশ্নের মুখে যুক্তরাষ্ট্র।

দেশটির আলাবামা অঙ্গরাজ্যে, প্রায় ২৬ বছর আগে খুন করার অপরাধে কেনেথ স্মিথ নামের ওই অপরাধীকে দেয়া হয়েছিলো মৃত্যুদণ্ড, যা কার্যকর হবে আগামী ২৫ জানুয়ারি। নাইট্রোজেন গ্যাস সিলিন্ডারের সাথে যুক্ত একটি মাস্ক পড়ানো হবে স্মিথকে। পরে শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে সে গ্যাস তার দেহে প্রবেশ করলে বন্ধ হবে অক্সিজেন সরবরাহ। আর তাতেই মৃত্যু হবে তার।

অসুস্থ প্রাণীর কষ্টহীন মৃত্যুতে কোথাও কোথাও নাইট্রোজেন গ্যাস ব্যবহার করা হলেও প্রাণী চিকিৎসকদের দাবি, এই পদ্ধতি পরীক্ষিত নয়। কাজেই স্মিথের সাঁজার পন্থাকে যন্ত্রণাদায়ক ও অমানবিক আখ্যা দিচ্ছে মানবাধিকার সংগঠনগুলো। অপরীক্ষিত পদ্ধতিতে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সমালোচনা করছে জাতিসংঘও।

দোষী সাব্যস্ত মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত বন্দীদের প্রাণঘাতী ইনজেকশন দেওয়ার জন্য একটি গার্নি ব্যবহার করা হয়। ছবি: ফক্স নিউজ।

জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক কমিশনের মুখপাত্র রাভিনা স্যামদাসানি বলেন, নাইট্রোজন গ্যাসের মাধ্যমে কেনেথ স্মিথের মৃতুদণ্ড কার্যকরের অপরীক্ষিত পদ্ধতি নিয়ে আমরা শঙ্কিত। এটি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন অনুসারে নিষ্ঠুর ও অমানবিক আচরণ। এমনকি যুক্তরাষ্ট্রের প্রাণী চিকিৎসকরাও বড় প্রাণীকে এই পদ্ধতিতে মৃত্যু ঘটানোর ক্ষেত্রে অজ্ঞান করার পরামর্শ দিয়েছেন। অথচ স্মিথের মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের সময় তেমন কোন ব্যবস্থাই নেয়া হচ্ছে না।

মূলত, প্রাণঘাতী ইনজেকশনে যে ওষুধ ব্যবহার করা হয়, মানুষ হত্যার কাজে তার বিক্রি নিষিদ্ধ হয়েছে ইউরোপে। যার প্রভাব পড়েছে যুক্তরাষ্ট্রে। আর তাই দেশটির অনেক অঙ্গরাজ্যই খুঁজছে বিকল্প পন্থা। অপ্রচলিত পদ্ধতিতে নিজের সাঁজা কার্যকরের বিরোধিতা করছেন খোদ স্মিথ। নিয়েছেন আদালতে আপিলের সিদ্ধান্ত।

\এআই/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply