ওয়ার্কশপে কাজ করতে গিয়ে হাত হারানো ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার শিশু নাঈম হাসান নাহিদকে ৩০ লাখ টাকার ফিক্সড ডিপোজিট করে দিতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
বুধবার (৩১ জানুয়ারি) সকালে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
এসময় নাহিদের পড়ার খরচ বাবদ প্রতি মাসে ৭ হাজার টাকা করে দেয়ারও নির্দেশ দেন আদালত। রায় শেষে ১৩ বছরের নাঈমকে এজলাসে ডেকে নিজ হাতে চকলেট উপহার দেন বিচারপতি নাইমা হায়দার। পরে শিশুটিকে তিনি বলেন, প্রতিষ্ঠিত হয়ে যেনো আবারও দেখা করেন তার সাথে। এসময় এজলাসে তৈরি হয় এক আবেগঘন পরিবেশ।
২০২০ সালে করোনা মহামারিকালে নাঈম তার বাবা ও মায়ের সঙ্গে ভৈরবে ইয়াকুব হোসেনের মালিকানাধীন নূর ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপে কাজ নেয়। সেসময় তার ডান হাত একটি মেশিনের ভেতরে ঢুকে যায়। বাধ্য হয়েই কাটতে হয় হাত। এ ঘটনায় নাঈমের বাবা ক্ষতিপূরণ পেতে রিট করেন হাইকোর্টে।
রিটকারীর আইনজীবী ব্যারিস্টার অনীক আর হক বলেন, এই রিটটা ফাইল করা থেকে আজকের রায় পাওয়া পর্যন্ত বড় ধরনের ‘লিগ্যাল ব্যাটেল’ হয়েছে। সেখানে আমরা জয়লাভ করেছি। সেজন্য আনন্দিত বলে জানান তিনি।
প্রসঙ্গত, ২০২০ সালের ১ নভেম্বর ‘ভৈরবে শিশুশ্রমের করুণ পরিণতি’ শিরোনামে একটি জাতীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রতিবেদন ছাপা হয়। সেই প্রতিবেদনে বলা হয়, নাইম হাসানের বয়স ১০ বছর। পড়ছে চতুর্থ শ্রেণিতে। বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আশুগঞ্জ উপজেলার আড়াইসিধা গ্রামে। তার বাবা আনোয়ার হোসেনের পেশা জুতা ব্যবসা। করোনাকালে সংসারের চাপ সামলাতে নাইমকে তার পরিবার কিশোরগঞ্জের ভৈরবের একটি ওয়ার্কশপে কাজে দেন। এই ওয়ার্কশপের কাজ করতে গিয়েই মাসখানেক আগে তার ডান হাতটি মেশিনে ঢুকে যায়। শেষে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কনুই থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয় ডান হাতটি।
/এএম
Leave a reply