ইউরোপীয় জোটভুক্ত দেশ হাঙ্গেরীর বুদাপেস্ট কোর্টরুম। যেখানে শেকল পরিয়ে শুনানিতে হাজির করা হয় ইতালীর নাগরিক ইলারিয়া সালিসকে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এরইমধ্যে ভাইরাল শেকল পরিয়ে অভিযুক্তকে কোর্টে আনার ভিডিও। আদালতের সামনে শেকল পরিয়ে অভিযুক্তকে হাজির করাকে পাশবিক ও বর্বর বলে উল্লেখ করছেন ইতালির ক্ষুব্ধ নাগরিকরা। খবর দ্য গার্ডিয়ানের।
ইতালির একজন নাগরিক বলেন, সে যে অপরাধই করুক, এমন পশুর মতো শেকল দিয়ে বেঁধে রাখাটা কোনোমতেই শোভনীয় নয়। আধুনিক যুগে এসে মধ্যযুগীয় বর্বরতা মেনে নেয়া যায় না। আরেকজন বলছেন, ঘটনাটিতে প্রচণ্ড হতাশ হয়েছি। এই ঘটনা ইউরোপের আইনি ব্যবস্থার জন্য কলঙ্ক। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় মানুষের সাথে এমন আচরণ করা হতো। বর্তমান সময়ে এসে ইউরোপের কোনো দেশে কাউকে এভাবে শেকল পরিয়ে রাখা হতে পারে, তা ভাবতেও পারি না।
দুই দেশের রাজনৈতিক অঙ্গনেও তোলপাড় ফেলেছে এই ঘটনা। তৈরি হয়েছে কূটনৈতিক টানাপোড়েন। হাঙ্গেরির এমন আচরণকে ‘অত্যন্ত অপমানজনক’ আখ্যা দিয়েছেন ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী। এই ঘটনার ব্যাখ্যা চেয়ে দেশটিতে নিযুক্ত হাঙ্গেরির চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্সকে তলব করা হয় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে।
ইতালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টোনি তানজিনি বলেন, একজন মানুষের নাগরিক অধিকারকে অবশ্যই সম্মান করা উচিত। হাঙ্গেরির আদালতে ইতালীয় বন্দির সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে, তা অমানবিক এবং ইউরোপের আইনি সংস্কৃতির সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ।
এ বিষয়ে হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রী ভিক্টর অরবানের সাথে কথা বলেন ইতালির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলনি। ইলারিয়া সালিসের (অভিযুক্ত নারী) মামলায় বিশেষ নজর দেয়ার অনুরোধ জানান। দেশটির প্রধানমন্ত্রী জর্জিয়া মেলোনি বলেন, হাঙ্গেরির প্রধানমন্ত্রীর সাথে আমি কথা বলেছি। সালিসের বিচার যেন যথাযথ প্রক্রিয়ায় হয়, তা নিশ্চিতের অনুরোধ করেছি।
এদিকে, সালিসের সাথে অমানবিক আচরণের অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেছে হাঙ্গেরি। দেশটির সরকারের মুখপাত্র জোলতান কোভাক্স এক বিবৃতিতে দাবি করেন, ঐ নারী দুর্ধর্ষ অপরাধী। কোর্টরুমে উপস্থিত সবার নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করেই তাকে শেকল দিয়ে বেঁধে রাখা হয়েছিলো। তবে হাঙ্গেরির এই ব্যাখ্যাকে খোঁড়া অজুহাত বলছে ইতালীয়রা।
গত বছর ফেব্রুয়ারিতে বুদাপেস্টে অতি-ডানপন্থীদের ওপর হওয়া হামলায় সম্পৃক্ততার অভিযোগে আটক হন ইলারিয়া সালিস।
/এএম
Leave a reply