‘মেইড ইন চায়না’ লেবেলের আড়ালে ‘আইল্যাশের বাজারে রাজত্ব উত্তর কোরিয়ার

|

আইল্যাশ প্রক্রিয়াজাতকরণের বেশিরভাগ কাজ করে থাকে উত্তর কোরিয়া। ছবি: রয়টার্স।

‘মেইড ইন চায়না’ লেবেলে সারা বিশ্বের ‘আইল্যাশে’র বাজার দখল করে রেখেছে উত্তর কোরিয়া। কিন্তু কীভাবে? পণ্যটি প্রক্রিয়াজাতকরণের বেশিরভাগ কাজই শেষ হয় উত্তর কোরিয়ায়। রোববার (৪ ফেব্রুয়ারি) এক প্রতিবেদনে যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদ মাধ্যম ব্লুমবার্গ নিউজ এ তথ্য জানায়।

প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রক্রিয়াজাতকরণের বেশিরভাগ কাজ শেষ করার পর, বাকি কাজগুলো শেষ করে চীন। পরে চাইনিজ আইল্যাশ হিসেবে রপ্তানি হয় বিভিন্ন দেশে। কারণ, নিষেধাজ্ঞায় জর্জরিত পিয়ংইয়ং। তাই বাজারে পৌঁছাতে মাধ্যম বানিয়েছে মিত্র দেশ চীনকে।

পিংড ‘আইল্যাশ ক্যাপিটাল’ হিসেবে পরিচিত, চীনের শাংডং প্রদেশের এই শহর। নারীর রূপসজ্জায় বাড়তি মাত্রা যোগ করে চোখের এই নকল পাপড়ি। তুলির শেষ আচড়ের জন্য পাঠানো হয় চীনের ২ হাজার কারখানায়।

রাতারাতি উত্তর কোরিয়ার আইল্যাশের বক্সে বসে চীনের তকমা। রপ্তানি হয় দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, রাশিয়া ও ইউরোপের বেশিরভাগ দেশে। পিংডু’র প্রায় ৮০ ভাগ ফ্যাক্টরি কাঁচামালের জন্য পিয়ংইয়ংয়ের ওপর নির্ভরশীল।

আইল্যাশ ফ্যাক্টরির মালিক ওয়াঙ টিংটিং বলেন, লোকাল পণ্যের চেয়ে উত্তর কোরিয়ার পণ্যের মান অনেক ভালো। দামেও সস্তা। তাই তাদের ওপর নির্ভরশীল অনেক দেশ।

এদিকে, পশ্চিমাদের বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে পারমানবিক অস্ত্র পরীক্ষা করায়, উত্তর কোরিয়ার ওপর রয়েছে নানা নিষেধাজ্ঞা। যে কারণে, সরাসরি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে নেই দেশটির উপস্থিতি। তাই বিশ্ব বাজার পর্যন্ত পৌঁছাতে তাদের মাধ্যম বিশ্বস্ত মিত্র চীন।

অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ শিং টং চ্যান বলেছেন, এটা ভীষণ ঝুঁকিপূর্ণ। উত্তর কোরিয়ার সাথে বাণিজ্যে জাতিসংঘের নিষেধাজ্ঞা আছে। কেউ যদি সেটি উপেক্ষা করে, তা অপরাধ হিসেবে গণ্য হবে। তার ওপর, পণ্যের ওপর নিজ দেশের লেবেল লাগানোও অনৈতিক।

চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের দাবি, প্রতিবেশীর সাথে তাদের সম্পর্ক বন্ধুত্বপূর্ণ। আইনসম্মত উপায়েই সহযোগিতা করা হচ্ছে; ব্যবসায়ীদের মধ্যেও নেই রাখঢাক।

আন্তর্জাতিক আইল্যাশ ডিজাইনার্স অ্যাসোসিয়েশনের জনি লি বলেন, তারা শুধু অর্থ উপার্জনের চেষ্টাই করছে। হয়তো এই অর্থ মিসাইল তৈরিতে খরচ হবে। কিন্তু, সেটি তখনই সম্ভব, যখন অনেক বড় অঙ্কের আয় হবে।

চীনের শুল্ক বিভাগের তথ্য অনুসারে, গেলো বছর প্রায় ১ হাজার ৬৮০ টন আইল্যাশ, দাড়ি এবং পরচুলা রপ্তানি করেছে উত্তর কোরিয়া। যার বাজারমূল্য কমপক্ষে ১৬৭ মিলিয়ন ডলার।

\এআই/


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply