বন্দি বিনিময় চুক্তিতে শীর্ষ নেতাদের মুক্তি চায় হামাস

|

মারওয়ান বারঘুতি।

বন্দি বিনিময় চুক্তিতে এবার হাই-প্রোফাইল ফিলিস্তিনিদের মুক্তি চাইলো হামাস। যে তালিকায় আছেন আব্দুল্লাহ বারঘুতি, আব্বাস আল সায়েদ, মারওয়ান বারঘুতির মতো আলোচিত স্বাধীনতাকামীরা। কয়েক দশক ধরে ইসরায়েলে বন্দি এসব ফিলিস্তিনির অনেককে শোনানো হয়েছে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড। এমনকি, ৫ হাজার দুশো’ বছরের সাজাও পেয়েছেন একজন।

জানা গেছে, হামাসের সামরিক শাখা কাশেম ব্রিগেডের আলোচিত বোমা বিশেষজ্ঞ আব্দুল্লাহ বারঘুতি দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে বন্দি ইসরায়েলের কারাগারে। দ্বিতীয় ইন্তিফাদার সময় একাধিক হামলায় অন্তত ৬৬ জনকে হত্যার জন্য তাকে দোষী করা হয়েছে। শাস্তি হিসেবে ৬৭টি যাবজ্জীবনের সাথে দেয়া হয়েছে আরও ৫ হাজার ২শ বছরের কারাদণ্ড। ইসরায়েলের ইতিহাসে তো বটেই, ধারণা করা হয় মানব ইতিহাসেরও দীর্ঘতম সাজা এটি।

ইসরায়েলি গণমাধ্যম বলছে, বন্দি বিনিময়ের চুক্তিতেই এই নেতার মুক্তি চায় হামাস। শুধু আব্দুল্লাহ বারঘুতিই নয়, এবার আরও বেশ কয়েকজন হাই প্রোফাইল ফিলিস্তিনিরও মুক্তি চেয়েছে গোষ্ঠীটি। যার মধ্যে সবচেয়ে আলোচিত আব্বাস আল সায়েদ, ইব্রাহিম হামাদ, আহমেদ সাদাত ও মুহাম্মদ আরমান। এমনকি, চুক্তিতে নিজেদের প্রতিদ্বন্দ্বী ফাত্তাহ আন্দোলনের নেতা মারওয়ান বারঘুতিকেও মুক্ত করার শর্ত দিয়েছে হামাস।

এই বন্দিদের সবাই যাবজ্জীবন সাজা ভোগ করছেন। এরমধ্যে, কাসেম ব্রিগেডের কমান্ডার আব্বাস আল সায়েদকে ৩৫টি, হামাস নেতা ইব্রাহিম হামাদকে ৫৪টি, মুহাম্মদ আরমানকে ৩৬টি ও পপুলার ফ্রন্ট ফর দ্যা লিবারেশন অব পালেস্টাইনের নেতা আহমেদ সাদাতকে ৩০টি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

ফিলিস্তিনিদের কাছে নেলসন ম্যান্ডেলা হিসেবে পরিচিত মারওয়ান বারঘুতির ওপর রয়েছে ৫টি যাবজ্জীবন সাজার খড়গ। ২০০২ সাল থেকে ইসরায়েলি কারাগারে বন্দি এই নেতাকে ফিলিস্তিনের ভবিষ্যৎ প্রেসিডেন্ট ভাবা হয়।

অবশ্য এবার, চুক্তিতে আরও বেশ কিছু কঠিন শর্তও জুড়ে দিয়েছে হামাস। এরমধ্যে রয়েছে স্থায়ী যুদ্ধবিরতি, গাজা থেকে ইসরায়েলি সেনা প্রত্যাহার, দীর্ঘ দুই দশকের অবরোধের অবসান এবং উপত্যকার পুনর্গঠন। যা এখনও মানতে রাজী হয়নি ইসরায়েল।

হামাস নেতা ওসামা হামাদান বলেন, ফিলিস্তিনি জনগণের বিরুদ্ধে ইসরায়েলি আগ্রাসনের সম্পূর্ণ সমাপ্তি ও গাজা উপত্যকা থেকে দখলদার সেনাবাহিনীর প্রত্যাহার চাই আমরা। এছাড়া ১৭ বছর ধরে উপত্যকায় চলমান অবরোধের অবসান, বাস্তুচ্যুতদের জন্য আশ্রয়ের ব্যবস্থা, ইসরায়েলি বর্বরতায় ধ্বংস হওয়া অবকাঠামো পুনর্গঠনের দাবিও আমাদের। পাশাপাশি স্বাধীন ফিলিস্তিনি রাষ্ট্রের স্বীকৃতি ও ফিলিস্তিনি বন্দিদের মুক্তি দিতে হবে।

এর আগে গত নভেম্বরে, ১০৫ ইসরায়েলির বিনিময়ে মুক্তি পেয়েছিলো ৩০০ ফিলিস্তিনি। যাদের সবাই নারী আর অপ্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ। বর্তমানে হামাসের কাছে আটক বাকি ১৩২ ইসরায়েলির মধ্যে ২৯ জনের মৃত্যু হয়েছে।

/এমএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply