আলমগীর হোসেন:
বিশ্ব অর্থনৈতিক সংকটের কারণে চাপের মুখে রয়েছে দেশের শিল্পখাত। মূলধনী যন্ত্রপাতিসহ সবধরনের কাঁচামালের দাম বেড়েছে। শ্রমিকের মজুরি ছাড়াও উৎপাদনের প্রতিটি উপকরণের জন্যেও গুনতে হচ্ছে বাড়তি অর্থ। যা চাপে ফেলেছে স্থানীয় শিল্পের পাশাপাশি রফতানি শিল্পকেও।
এমন পরিস্থিতিতে আবারও গ্যাস এবং বিদ্যুতের দাম বাড়ার কথা উঠেছে। গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পেলে নতুন সংকটে পড়বে শিল্প খাত। কারখানা চালানোর সক্ষমতা হারাবেন অনেকেই। ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ কারখানা বন্ধ হয়ে যেতে পারে- এমন আশঙ্কা ব্যবসায়ীদের নেতাদের। গ্যাসের দাম বাড়িয়েও নিরবিচ্ছিন্ন সরবরাহ না পাওয়ায় সমালোচনাও করছেন তারা। গ্যাস সংকটে, শিল্পের উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে বলেও অভিযোগ তাদের।
এ বিষয়ে বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, শিল্পখাত এমনিতেই খুব কঠিন পরিস্থিতিতে আছে। আমরা নানারকম চাপে রয়েছি। এরইমধ্যে যদি বিদ্যুতের দাম বাড়ে তাহলে এটি অনেকেরই সীমার বাইরে চলে যাবে। অনেকের পক্ষে এই ব্যয় বহন করা সম্ভব হবে না। ইতোমধ্যেই অনেক কারখানা বন্ধ হয়েছে। মূল্য বাড়লে দেখা যাবে আরও কারখানা বন্ধ হয়ে গেছে।
এদিকে, উৎপাদন ব্যয় বাড়লেও পোশাকের দাম বাড়ায়নি ক্রেতারা। যে কারণে কারখানা চালিয়ে নিতে হিমশিম খাচ্ছেন উদ্যোক্তারা। এমন অবস্থায় গ্যাস-বিদ্যুতের দাম বাড়লে সংকট আরও ঘনীভূত হবে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি খাতের অনেক কারখানা বন্ধ হয়ে যাবে বলেও আশঙ্কা উদ্যোক্তাদের।
বিসিআই সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, বিদ্যুৎ ও গ্যাসের দাম বাড়িয়ে দেয়া হলে ক্ষুদ্র ও মাঝারি কারখানাগুলো বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়বে। বড় কারখানাগুলোও সমস্যায় পড়বে। আমার মনে হয়, ৩০ থেকে ৪০ শতাংশ দেশীয় কারখানা বসে যাবে।
ব্যবসায়ী নেতাদের অভিযোগ, আন্তর্জাতিক বাজারে বাড়তি দামের অজুহাতে গ্যাসের দাম দ্বিগুনের বেশি বাড়ানো হয়। নিরবিচ্চিন্ন সরবরাহ নিশ্চিত করার কথা থাকলেও সেটি করা হয়নি। উল্টো গ্যাস সংকটে দিনের অনেক সময় কারখানা বন্ধ থাকে। নতুন করে গ্যাস বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর যৌক্তিকতা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তারা।
বিকেএমইএ’র নির্বাহী সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে যদি জ্বালানির দাম কমে তাহলে এখানেও কমার কথা, বাড়লে এখানেও বাড়বে। সমন্বয় মানে তো এটিই বোঝায়। তবে আমরা যখনই সমন্বয়ের কথা শুনি বারবার দেখছি দাম বাড়ে, কমে না। আন্তর্জাতিক বাজারে কি এখন জ্বালানির দাম বেড়েছে? তাহলে কেন বাড়ানোর প্রস্তাব আসছে, সেটিই বোধগম্য হচ্ছে না।
বিসিআই সভাপতি আনোয়ারুল আলম চৌধুরী পারভেজ বলেন, যখন গ্যাস বিল বাড়ানো হয় তখন বলা হয়েছিল, স্পট মার্কেটে এলএনজির দাম ৪০ ডলার। এখন কিন্তু স্পট মার্কেট মূল্য ৮ থেকে ৯ ডলার। সেখানে দাম না কমিয়ে আবার বাড়ানো কোনো যুক্তিসঙ্গত কাজ হতে পারে না। এমনটি করলে আমার মনে হয় না, কারখানাগুলো টিকে থাকতে পারবে।
/এনকে
Leave a reply