হলমার্ক কেলেঙ্কারির ঘটনায় দুদকের করা মামলায় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদ ও তার স্ত্রী জেসমিন ইসলামসহ ৯ আসামির যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়াও তানভীর ও জেসমিন দু’জনকেই ৫ কোটি টাকা অর্থদণ্ড দেয়া হয়েছে।
মামলার বাকি আসামিদের মধ্যে, ৭ জনের ১৭ বছরের কারাদণ্ড এবং অন্য একজনের ৫ বছর কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে। মঙ্গলবার (১৯ মার্চ) দুপুরে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক মো. আবুল কাশেম এ রায় ঘোষণা করেন।
রায় নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসামিপক্ষের আইনজীবী মো. শফিকুল ইসলাম জানান, রায়ে ব্যাংকারদের সাজা কম দিয়েছেন বিচারক। অথচ ব্যাংকের বাইরের আসামিদের যাবজ্জীবন সাজা দেয়া হয়েছে, যা সঠিক নয়।
অপরদিকে, দুদকের আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম জানান, অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে এ ধরনের দুর্গতি হলে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়ে। আইন অনুযায়ী সাজা মৃত্যুদণ্ড থাকলে আদালত তাই দিতেন বলে বিচারক রায়ের পর্যবেক্ষণে জানিয়েছেন।
গত ১২ মার্চ রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করেন আদালত। এর আগে, ২৮ জানুয়ারি ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-১ এর বিচারক মো. আবুল কাশেম রাষ্ট্র ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য ২৮ ফেব্রুয়ারি দিন ধার্য করেন। ওইদিন দুদকের আইনজীবী মীর আহম্মেদ সালাম মামলাটি রায় থেকে উত্তোলন পূর্বক দুইজন ম্যাজিস্ট্রেটের সাক্ষ্য নেয়ার জন্য আবেদন করেন। আদালত দুদকের আবেদনটি মঞ্জুর করেন।
এরপর আদালত মামলাটির সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য ৪ মার্চ দিন ধার্য করেন। সেদিন তৎকালীন ঢাকার দুই মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সাইফুর রহমান ও কেশব রায় চৌধুরী আদালতে সাক্ষ্য দেন। তাদের সাক্ষ্য শেষে যুক্তি উপস্থাপনের জন্য ১২ মার্চ দিন ধার্য করেন আদালত। পরে ১২ মার্চ রাষ্ট্র ও আসামি পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়।
এই মামলার অন্য আসামিরা হচ্ছেন, এমডি তানভীরের ভায়রা ও গ্রুপের মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমেদ, টি অ্যান্ড ব্রাদার্সের পরিচালক তসলিম হাসান, ম্যাক্স স্পিনিং মিলসের মালিক মীর জাকারিয়া, প্যারাগন গ্রুপের এমডি সাইফুল ইসলাম রাজা, নকশী নিটের এমডি মো. আবদুল মালেক ও সাভারের হেমায়েতপুরের তেঁতুলঝোড়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. জামাল উদ্দিন সরকার।
এছাড়া সোনালী ব্যাংকের হোটেল শেরাটন বা রূপসী বাংলা শাখার সহকারী উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. সাইফুল হাসান, নির্বাহী কর্মকর্তা আবদুল মতিন ও সোনালী ব্যাংক ধানমন্ডি শাখার জ্যেষ্ঠ নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুন্নেসা মেরি, সোনালী ব্যাংকের প্রধান কার্যালয়ের জিএম ননী গোপাল নাথ ও মীর মহিদুর রহমান, প্রধান কার্যালয়ের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন কবির, ডিএমডি মাইনুল হক, উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) শেখ আলতাফ হোসেন ও সফিজউদ্দিন এবং এজিএম মো. কামরুল হোসেন খান।
আসামিদের মধ্যে জামাল উদ্দিন সরকার ও শেখ আলতাফ হোসেন জামিনে রয়েছেন। এছাড়া সাইফুল, মতিন, হুমায়ুন, গোপাল নাথ, তসলিম, সাইফুল, মেরী ও জাকারিয়া পলাতক।
/এএস
Leave a reply