রুমা ও থানচির ঘটনায় দুই থানায় ৬ মামলা

|

গতরাতে থানচিতে গোলাগুলির পর সতর্ক পাহাড়ায় বিজিবি (বায়ে)।

দুইটি ব্যাংকের তিনটি শাখায় হামলা, অস্ত্র লুট, অপহরণ ও গোলাগুলির ঘটনায় থমথমে অবস্থা এখন বান্দরবানের রুমা ও থানচিতে। বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) রাতে থানচি বাজারে আচমকা গুলি চালানো শুরু করে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট-কেএনএফ। পুলিশও পাল্টা গুলি ছুড়ে হামলার প্রতিরোধ করে। পরে পুলিশের সঙ্গে বিজিবির ক্যাম্প থেকেও গুলি করা হয়।

রাতের গোলাগুলির পর দিনভর থমথমে ছিল বান্দবানের থানচি। তবে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আছে বলে দাবি করেছেন পুলিশ কর্মকর্তারা। চারপাশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন সংস্থার বেশ কয়েকটি ক্যাম্প থাকা সত্ত্বেও কিভাবে সন্ত্রাসীরা থানায় হামলা করলো, সে প্রশ্নই ঘুরেফিরে আসছে দিনভর।

তবে এ প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন চট্টগ্রাম রেঞ্জের অতিরিক্ত ডিআইজি সঞ্জয় সরকার। তিনি বলেন, থানাকে লক্ষ্য করে নয়। কেএনএফ বাহিনী যখন তিনটি গাড়ি করে বাজারের ওপর দিয়ে থানার দিকে এগোচ্ছিলো তখন আমাদের দায়িত্বরত পুলিশদের চোখে পড়ে। তখন আত্মরক্ষার্থে দুই পক্ষই পাল্টাপাল্টি গুলি চালায়।

গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সঞ্জয় সরকার যমুনা টিভিকে বলেন, কেএনএফ সন্ত্রাসীরা থানচি থানার এক-দেড় কিলোমিটারের মধ্যে রয়েছে। ফলে, এসব এলাকায় বিজিবি ও পুলিশের সতর্ক পাহারা বসানো হয়েছে। বান্দরবানের ঘটনায় এখন পর্যন্ত মামলা হয়েছে ছয়টি। তবে, এখন পর্যন্ত লুট হওয়া কোনো অস্ত্র উদ্ধার করা যায়নি বলেও জানান তিনি।

বাজারের বিভিন্ন ভবন, দেয়ালে রাতের গুলির চিহ্ন স্পষ্ট। গুলিতে আতঙ্ক এখনও বিরাজ করছে স্থানীয়দের মধ্যে। সেটি কাটাতে হয়তো কিছুটা সময় লাগবে, বলছেন স্থানীয়রা। গোলাগুলির ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে স্থানীয়রা জানায়, বৃহস্পতিবার রাতে গোলাগুলির শব্দ পাওয়া মাত্র তারা দোকান ছেড়ে চলে যান। কিছুক্ষণ পর আবার এসে দোকান বন্ধ করে ভেতরে বসে থাকেন। গোলাগুলি বন্ধ হওয়ার পর বাসায় যান তারা। ভয়ে সকাল থেকে আর দোকানও খোলেননি তারা।

এদিকে, পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চলে সশস্ত্র তৎপরতা নিয়ে সরকার অত্যন্ত কঠোর অবস্থানে রয়েছে বলে জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, সেখানে যৌথ অভিযান চলছে। এ বিষয় নিয়ে গোটা পার্বতী চট্টগ্রাম অশান্ত হবে এমনটা ভাবার কোনো কারণ নেই। অচিরেই এর সমাধান হয়ে যাবে। এ ঘটনার পেছনে কে বা কারা জড়িত বা কোন গোষ্ঠী জড়িত, সরকার তা খতিয়ে দেখছে বলেও জানান তিনি।

এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যেই বান্দরবান যাচ্ছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। শনিবার (৬ এপ্রিল) সকালে বান্দরবানের উদ্দেশে রওনা দেয়ার কথা রয়েছে তার। এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বান্দরবানের পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণসহ মতবিনিময় সভায় অংশ নেবেন। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন তিনি।

প্রসঙ্গত, গত কয়েকদিন ধরে বান্দরবানে অশান্ত পরিস্থিতি বিরাজ করছে। গত মঙ্গলবার (২ এপ্রিল) রাতে সশস্ত্র দুর্বৃত্তরা রুমা উপজেলা সদরে সোনালী ব্যাংকের শাখায় হামলা চালায়। এ সময় ম্যানেজার নেজাম উদ্দিনকে অপহরণ করে তারা। পরদিন বুধবার দুপুরে জেলার থানচি উপজেলার কৃষি ব্যাংক ও সোনালী ব্যাংকে দুর্ধর্ষ ডাকাতির ঘটনা ঘটে। সবশেষ গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ এপ্রিল) রাতে বৃহস্পতিবার থানচিতে কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সন্ত্রাসীদের সাথে পুলিশের গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে।

/এমএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply