অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে

|

মাসুদুজ্জামান রবিন:

কাগজে-কলমে শ্রম ঘণ্টা ৮ ঘণ্টা। কিন্তু এই আইনের কোনো বালাই নেই অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের জীবনে। হাড়ভাঙ্গা খাটুনির পর বেশিরভাগেরই মিলে না ন্যায্য পারিশ্রমিক।

এই শ্রম অধিকার মানে নির্দিষ্ট কর্মঘণ্টা ও ন্যায্য মজুরির নিশ্চিত করতে ১৮৮৬ সালের পহেলা মে যুক্তরাষ্ট্রের শিকাগোতে রক্ত দেয় বহু শ্রমিক। প্রায় দেড়শ বছর হতে চললো এর, সেই মুক্তি এখনও আধরা। শ্রম বেচে জীবন বাঁচানোর পণ্য কিনতে পারে না বহু শ্রমিক।

বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো অধ্যাপক মোস্তাফিজুর রহমান বললেন, মূল্যস্ফীতি তো এখন আমাদের বড় সমস্যা। এর ফলে জীবনযাত্রার ব্যয় বেড়ে ক্রয়ক্ষমতা কমছে। জীবনমানে নেতিবাচক প্রভাব প্রড়ছে। মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা, পুষ্টি নিরাপত্তার কথা বিভিন্ন জরিপে উঠে আসছে।

শ্রম আইন ও শ্রম বিধি, তৈরি পোশাক শিল্পের মতো প্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকদের কিছুটা সুরক্ষা দিচ্ছে। কিন্তু সাড়ে ৫ কোটি অপ্রাতিষ্ঠানিক খাতের শ্রমিকরা ন্যায্য মজুরি ও বিভিন্ন অধিকার থেকে বঞ্চিত, এমন অভিমত দেশীয় শ্রমিক সংগঠনগুলোর।

শ্রমিক নেতা আবুল হোসাইন বলেছেন, বর্তমান শ্রম আইন মোট শ্রমযজ্ঞের মাত্র ৮ থেকে ১০ ভাগ শ্রমিকের সুরক্ষা দেয়। ৯০ থেকে ৯২ ভাগ শ্রমিক শ্রম আইনের বাইরে, তারা শ্রম আইনের সুরক্ষার বাইরে। অপ্রতিষ্ঠানকে শ্রম আইনের আওতায় আনতে আমাদের কাঠামোগত চিন্তায় পরিবর্তন আনতে হবে।

এসব প্রতিবন্ধকতার পাশাপাশি শ্রমিকদের জন্য নতুন আতঙ্ক কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) প্রযুক্তি। খোদ আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উন্নত বিশ্বে এআই প্রযুক্তি প্রায় ৪০ শতাংশ চাকরিকে প্রভাবিত করবে। বাংলাদেশের মতো নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশের এই হার হতে পারে ২৬ শতাংশের মতো।

প্রযুক্তিবিদ সুমন আহমেদ সাবির বলেন, আমাদের খুঁজে বের করতে হবে কোন ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি কাজে লাগাবো, আর কোন ক্ষেত্রে নেবো না। আর কোনগুলোতে এখন নেবো, আর পরে নিলেও আমাদের চলে। আমরা যদি এটা সঠিকভাবে নির্বাচন করতে পারি, তাহলে শ্রমিকদের ক্ষেত্রে এখনই প্রভাব পড়বে না। তারা অন্যত্র যুক্ত হতে পারবে এবং সে অনুযায়ী দক্ষতা অর্জনের সুযোগ পাবে।

উল্লেখ্য, পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, দেশের প্রায় ১ কোটি ৬ লাখ দিনমজুরের কাজ ও মজুরির নিশ্চয়তা নেই।

/এমএন


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply