যুক্তরাষ্ট্রের বাবা-মায়ের কাছে প্রিয় এক নাম হয়ে উঠেছে ‘মাতেও’। ছেলের নাম রাখার ক্ষেত্রে দেশটিতে জনপ্রিয়তা পাচ্ছে এটি। তাতে সবচেয়ে জনপ্রিয় শিশুর নামের তালিকায় উঠে এসেছে মাতেও।
সোশ্যাল সিকিউরিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের সাম্প্রতিক প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার (১৪ মে) প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এমনটা জানিয়েছে মার্কিন গণমাধ্যম সিএনএন।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রথমবারের মতো ছেলেদের ‘শীর্ষ ১০’ তালিকায় জায়গা করে নিয়েছে মাতেও। ২০২৩ সালে সবচেয়ে জনপ্রিয় ছেলেদের নামের ক্ষেত্রে মাতেও রয়েছে ষষ্ঠ অবস্থানে এবং তালিকা থেকে সরিয়ে দিয়েছে ‘বেঞ্জামিন’কে।
শিশুর নাম বিষয়ক ওয়েবসাইট নেমবেরির প্রধান সম্পাদক সোফি কিম বলেন, এটি লং জাম্পের মতো একটি ঘটনা। ২০২২ সালে এই তালিকায় মাতেও ছিল ১১ নম্বরে। সেখান থেকে ২০২৩ সালে ৬ নম্বরে উঠে আসার ঘটনাটি অভাবনীয়। আমরা শীর্ষ তালিকায় সাধারণত এমনটা দেখতে পাই না।
মাতেও ছাড়াও তালিকার শীর্ষ নামগুলো হলো– লিয়াম, নোয়াহ, অলিভার, জেমস, এলিজা, থিওডর, হেনরি, লুকাস ও উইলিয়াম। এর মধ্যে লিয়াম ও অলিভিয়া টানা পঞ্চমবারের মতো র্যাংকিংয়ের শীর্ষে রয়েছে।
মাতেও নামটির জনপ্রিয়তার পেছনে সম্ভাব্য কারণ হিসবে যুক্তরাষ্ট্রে ক্রমবর্ধমান ল্যাতিনো জনসংখ্যার উপস্থিতির কথা বলেছেন কিম। তিনি বলেন, বিভিন্ন সংস্কৃতি থেকে আসা লোকেরা তাদের বাচ্চার নাম রাখার ক্ষেত্রে নিজস্ব ঐতিহ্যের দিকে ফিরে যায়। আর এটা সাধারণ এক ব্যাপার।
সোশ্যাল সিকিউরিটি অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের এই তালিকার শীর্ষ দশে পৌঁছানো অন্যান্য নামগুলোর মতো মাতেওর নাম রাখার পেছনে ‘ক্রস-কালচারাল’ প্রভাবের কথা বলেছেন নেমবেরির প্রধান সম্পাদক।
তিনি বলেন, ‘ম্যাথিউ’ থেকে অনেক বন্ধুত্বপূর্ণ এবং সহজে অ্যাক্সেসযোগ্য নাম ‘মাতেও’। এটির শেষে ‘ও’ রয়েছে, নাম ডাকার ক্ষেত্রে যা পছন্দ করে মানুষজন।
মেসির ছেলে মাতেও
তবে অনেকেই মনে করেন, ‘মাতেও’ নাম জনপ্রিয় হওয়ার পেছনে ফুটবল মহাতারকা লিওনেল মেসির অবদান রয়েছে। ২০২৩ সালে ফ্রান্স (পিএসজি ক্লাব) ছেড়ে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি দেন মেসি। সেখানে মেজর লিগ সকারে ইন্টার মায়ামির হয়ে খেলছেন এই ফুটবল জাদুকর। মায়ামিকে প্রথমবারের মতো লিগস কাপও জিতিয়েছেন তিনি। এরপর যুক্তরাষ্ট্রে হু হু করে বেড়েছে মেসির জনপ্রিয়তা।
মেসির তিন ছেলে। থিয়াগো, মাতেও আর চিরো। তারাও মায়ামির বিভিন্ন বয়সভিত্তিক দলে খেলছে। সম্প্রতি এক ম্যাচে ৫ গোল করে পুরো ফুটবল বিশ্বের নজর নিজের দিকে টেনেছে মাতেও।
অনেকেই মনে করছেন, মেসির মতোই হতে যাচ্ছেন তার ছেলে মাতেও মেসি। স্বাভাবিকভাবেই বাবার গুণাবলি পেয়েছেন জুনিয়র মেসি।
মার্কিন দেশটিতে মেসির তুমুল জনপ্রিয়তা এবং পুত্র মাতেওর দারুণ পারফরমেন্সের জেরেই তাই যুক্তরাষ্ট্রে জনপ্রিয় হচ্ছে ‘মাতেও’ নামটি। ২০২৩-এ ছেলেদের জনপ্রিয় নামের ষষ্ঠ তালিকায় মাতেও উঠে আসার পেছনে তাই মেসির জনপ্রিয়তার কথা বলছেন অনেকে।
মেসি ও রোকুজ্জোর দ্বিতীয় সন্তান মাতেওর জন্ম ২০১৫ সালের ১১ সেপ্টেম্বর। ২০১৯ সালের গণমাধ্যমকে দেয়া এক সাক্ষাত্কারে মেসি তার সম্পর্কে বলেছিলেন– মাতেও খুবই স্পেশাল। সে সবসময় নতুন কিছু করার চেষ্টা করে। এমন কিছু, যা আপনার মনোযোগ আকর্ষণ করবে।
মেসি তার ব্যাপারে আরও যোগ করেন, ‘মাতেও অনেকটা তেমন, যেমনটা আমি শৈশবে ছিলাম। সে কিছু হারাতে পছন্দ করে না। সবসময় জিততে চায়।’
গত নভেম্বরে বিশ্বকাপ ফুটবলের প্রথম ম্যাচে সৌদি আরবের বিপক্ষে পরাজয়ের পর আর্জেন্টিনা দল যখন বিমর্ষ, তখন মাতেওকে কাঁদতে কাঁদতে স্টেডিয়াম ছেড়ে চলে যেতে দেখা যায়। মেসির মতো মাতেও হয়তো হারতে চায় না। আর কে না জানে, ‘পরাজয়ে ডরে না বীর’?
/এএম
Leave a reply