সিনিয়র করেসপনডেন্ট, রংপুর:
যমুনা টেলিভিশনের সংবাদ প্রচারের পর পছন্দের প্রার্থীকে হুমকি দিয়ে আলোচিত রংপুরের বদরগঞ্জের কালুপাড়া ইউনিয়নের মেম্বার শফিকুল ইসলামকে তলব করেছেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। রোববার (১৯ মে) বিকেলে বদরগঞ্জ উপজেলা নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা ও রংপুরের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট শাহনাজ পারভীন স্বাক্ষরিত ওই চিঠি ইস্যু করা হয়।
চিঠিতে আগামীকাল সোমবার বেলা ১১টায় তার কার্যালয়ে ওই ইউপি মেম্বারকে স্বশরীরে হাজির হয়ে শুনানীতে অংশ নিতে বলা হয়েছে।চিঠিতে বলা হয়, আচরণবিধি লঙ্গন করে গত ১৫ মে চেয়ারম্যান প্রার্থী ফজলে রাব্বী সুইটের উপস্থিতিতে বৈরামপুর বাজার সংলগ্ন স্কুল মাঠে উঠান বৈঠকে কালুপাড়া ইউনিয়নের ৬ নং ওয়ার্ড মেম্বার শফিকুল ইসলাম ভোটারদের ভয়ভীতি ও বিভিন্ন হুমকি প্রদান করেছেন মর্মে অভিযোগ হয়েছে। যা অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানে বাঁধা। শুনানীতে অভিযোগকারী অপর চেয়ারম্যান প্রার্থী হাসান তবিকুর চৌধুরী পলিনকেও উপস্থিত হতে বলা হয়েছে।
রিটার্নিং কর্মকর্তা শাহনাজ পারীভন জানান, নির্বাচনি আচরণবিধিমালা মানতে সবাই বাধ্য। এ বিষয়ে অভিযোগের পাশাপাশি মিডিয়ায় খবর ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওর বিষয়ে ওই মেম্বারকে শুনানীর জন্য ডাকা হয়েছে। এরপর বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
উল্লেখ্য, পছন্দের প্রার্থীকে ভোট না দিলে চিহ্নিত করে জ্বলন্ত আগুনে শিক গরম করে সোজা করার হুমকি দেয়ার ওই ঘটনা নিয়ে রোববার প্রতিবেদন প্রকাশ করে যমুনা টেলিভিশন। যমুনার প্রতিবেদনে বলা হয়, গত ১৫ মে রাতে বদরগঞ্জের কালুপাড়া ইউনিয়নের বৈরামপুর বাজার সংলগ্ন হাইস্কুল মাছে ফজলে রাব্বি সুইটের উপস্থিতিতে উঠান বৈঠকে স্থানীয় মেম্বার শফিকুল ইসলাম ভোটারদের হুমকি দেন। ওই ভিডিওটি বৃহষ্পতিবার (১৬ মে) সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়।
এ বিষয়ে ইউপি সদস্য শফিকুল ইসলাম জানান, তার এলাকায় তার নিজস্ব লোকদের নিয়ে কথা বলেছেন তিনি। এলাকার মানুষের সাথে কিভাবে কথা বলবেন এটা তাদের ব্যাপার। প্রতিপক্ষের কর্মীর বাড়িতে হামলার বিষয়টিও অস্বীকার করেন তিনি।
এ বিষয়ে প্রতিদ্বন্দ্বী উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থী হাসান তবিকুর চৌধুরী বলেন, হুমকি দেয়ার দুই দিন আগে বৈরামপুর এলাকায় তার যুবলীগের কর্মী সমাবেশ ছিল। ওই ইউপি সদস্যের নেতৃত্বে কয়েকজন সমাবেশের শামিয়ানা ছিঁড়ে ফেলেন। এসময় তার এক কর্মীর বাড়িতে হামলাও চালানো হয়। বিষয়টি থানায় জানালেও ওসি কোনো ব্যবস্থা নেননি। ওই এলাকায় সুষ্ঠু ভোটের বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে বলেও জানান তিনি।
নিজের উপস্থিতিতে একজন কর্মীর এ ধরনের বক্তব্য প্রসঙ্গে জানতে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান প্রার্থী ফজলে রাব্বি সুইটের সাথে টেলিফোনে একাধিকার যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ ঘটনার পর গত ১৬ মে বদরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল লতিফ মিঞাকে বদলির সিদ্ধান্ত দিয়ে চিঠি ইস্যু করে নির্বাচন কমিশন। তাকে রংপুর পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।
ফজলে রাব্বি সুইট পর পর দুই বারের উপজেলা চেয়ারম্যান। তিনি বদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং রংপুর জেলা যুবলীগের জ্যেষ্ঠ সহ সভাপতি। তার একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক হাসান তবিকুর চৌধুরী। চতুর্থ দফায় আগামী ৫ জুন এ উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
/এএস
Leave a reply