একের পর রকেট আর মিসাইল হামলায় ধুলোয় মিশে গেছে তিল তিল করে গড়ে তোলা স্বপ্নের বাড়ি। সেই ইট-বালি-সিমেন্টের ধ্বংসস্তূপ হাতড়ে চলছে খোঁজ। যদি মেলে প্রয়োজনীয় কোনো জিনিসের সন্ধান।
গ্রামের নাম আইতা আল-শাব। গেল ৭ মাস ধরে ইসরায়েলি হামলায় এভাবেই বিধ্বস্ত হয়েছে চারপাশ। দেখে গাজার কোনো এলাকা মনে হলেও এটি আসলে লেবাননের একটি জনপদ। গাজার পাশাপাশি ছোট্ট এই গ্রামটিতে নিয়মিতই চলে ইসরায়েলি অভিযান। তাদের অযুহাত, ইরান সমর্থিত সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে নির্মূল করা।
সীমান্ত অঞ্চলের সবকটি এলাকা আগ্রাসনের শিকার হলেও আইতা আল-শাবের অবস্থা সবচেয়ে শোচনীয়। প্রাণভয়ে ভিটেমাটি ছাড়তে বাধ্য হয়েছেন গ্রামটির বেশিরভাগ বাসিন্দা। তবে তারা নিশ্চিত, অন্যায়ের প্রতিবাদের পুরস্কার একদিন ঠিকই পাবেন।
সেখানকার একজন বলেন, আমার নিজের অথবা স্বজন-প্রতিবেশীদের, সবার বাড়ি গুঁড়িয়ে দিয়েছে ওরা। কিন্তু তাতে আমাদের বিন্দুমাত্র দুঃখ নেই। আল্লাহ আমাদেরকে আমাদের বাড়ি-ঘর, সম্পদ সব ফিরিয়ে দেবেন। বেঁচে আছি, অন্যায়ের প্রতিবাদ করছি, এটাই বড় কথা।
এবারই প্রথম নয়, এর আগেও ২০০৬ সালে ইসরায়েল-হিজবুল্লাহ মাসব্যাপী লড়াইয়ে ধুলোয় মিশে গেছিলো লেবাননের এই গ্রামটি। তাই নতুন করে ইসরায়েলি হামলায় এতোটুকুও বিচলিত নন গ্রামের বাসিন্দারা। তাদের বিশ্বাস, ধ্বংসস্তূপ সরিয়ে আবার জেগে উঠবে পুরোনো সেই জনবসতি।
ঘরছাড়া একজন বলেন, মাঝে মাঝেই আসি নিজের ভাঙা বাড়িটা দেখতে। ইসরায়েলিদের বলতে চাই, আমরা ভয় পাই না। ওরা যতোই মিসাইল ছুড়ুক, একদিন আগের চেয়েও সুন্দর আর শক্তভাবে নতুন করে গড়ে উঠবে আমাদের মাতৃভূমি।
গাজায় ইসরায়েলি আগ্রাসন শুরুর পর থেকেই বেশ সরব প্রতিবাদ জানিয়ে আসছে হিজবুল্লাহ। আস্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলোর তথ্য মতে, গত ৭ মাসে ইসরায়েলে হাজারের বেশি রকেট ও মিসাইল ছুড়েছে গোষ্ঠীটি। আর তার জবাব দিতেই সীমান্তবর্তী গ্রামগুলোতে এমন তাণ্ডব আইডিএফের। ৭ মাসে দুপক্ষের পাল্টাপাল্টি হামলায় প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় সাড়ে তিনশ মানুষ। যাদের মধ্যে রয়েছেন শ’খানেক বেসামরিক নাগরিক।
/এএম
Leave a reply