উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের ফাইনালে আজ রাতে মুখোমুখি হবে রিয়াল মাদ্রিদ ও বরুশিয়া ডর্টমুন্ড। শক্তি, সামর্থ, ঐতিহ্য সবকিছুর বিচারে গ্রান্ড ফিনালেতে নিঃসন্দেহে ফেভারিট রিয়াল মাদ্রিদ। তবে, রেকর্ড ১৪ শিরোপা জয়ী রিয়াল কোচ অ্যানচেলোত্তি বলছেন ট্রফি জিততে সামর্থের সেরাটা দিতে হবে তার দলকে।
হুঙ্কার দিয়েছে ডর্টমুন্ড কোচ এদেন তেরদিচও। ফাইনাল খেলার জন্য নয়, জেতার জন্য মাঠে নামবে বরুশিয়া দাবি তার। শনিবার (১ জুন) লন্ডনের ঐতিহাসিক ওয়েম্বলি স্টেডিয়ামে দিবাগত রাত ১টায় শুরু হবে এই মহারণ।
পরিসংখ্যানের দিক থেকে রিয়াল মাদ্রিদ শতভাগ সফল জানিয়ে ডর্টমুন্ড কোচ আরও বলেন, এই প্রতিযোগিতায় তারা রেকর্ড ১৪ বার চ্যাম্পিয়ন হওয়ার গৌরব অর্জন করেছে। তবে এই পরিসংখ্যান নিয়ে আমরা ভাবছি না। আগে কী হয়েছে সেটা নিয়েও চিন্তিত নয় দল। আমাদের লক্ষ্য লড়াইটা এক ম্যাচে নামিয়ে আনা। তাদের দৌঁড় থামিয়ে দেয়ার সময় এখনই। আমি মনে করি সেই সামর্থ্য আমাদের রয়েছে।
রিয়ালের জন্য চ্যাম্পিয়নস লিগ জয় যেন নেশা। ইউরোপীয় ক্লাব ফুটবলের শীর্ষ এই প্রতিযোগিতার অবিসংবাদিত রাজা তারা। স্প্যানিশ ক্লাবটি এবার ১৫তম বারের মতো ট্রফি উঁচিয়ে ধরার অপেক্ষায়।
বিপরীতে ডর্টমুন্ড এখন পর্যন্ত একবারই চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা জিতেছে, সেটিও সেই ১৯৯৭ সালে। এরপর জার্মান ক্লাবটি একবার ট্রফি-ছোঁয়া দূরত্ব থেকে ফিরে এসেছে, ২০১৩ সালে হয়েছিল রানার্সআপ।
পরিসংখ্যান বলছে, রিয়াল-ডর্টমুন্ডের প্রথম সাক্ষাৎ হয় ১৯৯৭-৯৮ মৌসুমে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সেমিফাইনালে। ৩২ বছরের খরা কাটিয়ে সপ্তম শিরোপার দিকে এক ধাপ এগিয়ে যেতে চাইছিল মাদ্রিদ। বার্নাব্যুতে খেলা প্রথম লেগটিতে ২-০ গোলে জেতার পর দ্বিতীয় লেগে ডর্টমুন্ডের মাঠে ম্যাচটি হয় গোলশূন্য ড্র।
পরে ২০০২-০৩ সালে গ্রুপ পর্বে মুখোমুখি হয়েছিল দুদল, মাদ্রিদে স্বাগতিকদের কাছে ২-১ এবং ডর্টমুন্ডে ১-১ গোলে শেষ হয়েছিল। ৩-২ ব্যবধানে এগিয়ে থেকে ফাইনাল নিশ্চিত করে রিয়াল। সেবার তারা চ্যাম্পিয়নও হয়েছিল।
২০১২-১৩ মৌসুমের আগে তাদের আর দেখা হয়নি। ঐ মৌসুমে চারবার মুখোমুখি হয়েছিল রিয়াল ও ডর্টমুন্ড। গ্রুপ পর্বে জার্মানিতে স্বাগতিকদের কাছে ২-১ ও স্পেনে ২-২ গোলে ড্র করার পর সেমিফাইনালে ওঠেন মার্কো রয়েসরা।
উভয় দলের শেষ চার লড়াই হয়েছে গ্রুপ পর্বে। ২০১৬-১৭ মৌসুমে তারা ২-২ গোলে ড্র করেছিল এবং ২০১৭-১৮ মৌসুমে ব্ল্যাঙ্কোসদের ব্যাক-টু-ব্যাক জয়, ডর্টমুন্ডে ৩-১ এবং বার্নাব্যুতে ৩-২ গোলে জিতেছিলেন ক্রিস্টিয়ানো-লুকা মদ্রিচরা।
পরিসংখ্যান রিয়ালের পক্ষে কথা বললেও ডর্টমুন্ডকে যথেষ্ট সমীহ করেই আজ খেলতে নামবে আনচেলত্তির শিষ্যরা। কারণ, জার্মান ক্লাবে খেলছেন মারকো রেয়াস, ম্যাটস হুমেলস, জ্যাডন স্যানচোরা। এরাও যে খুব সহজেই ছেড়ে দেবে সেটিও নয়।
তাছাড়া ইতিহাসের বাঁকবদল তো হতেই পারে!
চলতি মৌসুমেই তো ইউরোপিয়ান ফুটবলে কত কত ইতিহাস হলো। লেভারকুজেন জিতে নিল বুন্দেসলিগা। কনফারেন্স লিগ জিতে ইতিহাস গড়ল গ্রিক ক্লাব অলিম্পিয়াকস। আরও একটা ব্যতিক্রম ঘটনা ঘটতেই পারে! তবে রিয়াল মাদ্রিদের চোখ শিরোপা থেকে ফিরিয়ে দেয়া বড় কঠিন। সম্ভবত, ভিনি-মদ্রিচ-রুডিগাররা নিশ্চয়ই উৎসবের মঞ্চে কী কী করবেন তারও প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন!
Leave a reply