ঝিনাইদহ-৪ আসনে সংসদ সদস্য পরিবর্তনের আশায় আনোয়ারুল আজীম আনার হত্যা পরিকল্পনায় সম্পৃক্ত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক কাজী কামাল ওরফে গ্যাস বাবু। ১৬৪ ধারায় আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে তিনি এ কথা স্বীকার করেন।
শুধু তাই নয়, এমপি হওয়ার স্বপ্নে এই হত্যাকাণ্ডে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুও জড়িত বলে আদালতকে জানিয়েছেন বাবু।
এমপি আনার হত্যার ঘটনায় ঢাকায় গ্রেফতার ৫ আসামির মধ্যে ৪ জন এরইমধ্যে হত্যায় দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। এই সংসদ সদ্যকে অপহরণে মামলায় গ্রেফতার কাজী কামাল গতকাল শুক্রবার (১৪ জুন) ঢাকা মহানগর ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিমের আদালতে জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দিতে কাজী কামাল বলেছেন, এমপি আনারকে হত্যার পরিকল্পনায় এবং হত্যার পর মূল পরিকল্পনাকারী আক্তারুজ্জামান শাহীনের সঙ্গে তার একাধিকবার বৈঠক হয়। হত্যার জন্য করা চুক্তির টাকার একটি অংশ সাইদুল করিম মিন্টুর কাছ থেকে নিয়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়নকারী আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়াকে দেয়ার দায়িত্ব দেয়া হয় তাকে।
তিনি জানিয়েছেন, ব্যবসা সংক্রান্ত দ্বন্দ্বের কারণেই এমপি আনারকে সরিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয় আক্তারুজ্জামান শাহীন। শাহীন পরিকল্পনা করলেও স্থানীয় কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতার সহযোগিতা চান। আনার বারবার এমপি হওয়ায় ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের কয়েকজন নেতা বিশেষ করে সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টু মনে মনে ক্ষিপ্ত ছিলেন। তাই মিন্টু শাহীনের ডাকে সাড়া দেন এবং এমপি হওয়ার স্বপ্ন দেখেন।
জবানবন্দিতে কাজী কামাল আরও বলেন, এমপি আনারকে কলকাতায় হত্যার পর ১৫ মে ঢাকায় ফিরে আসে আমানুল্লাহ। পরে ১৭ মে ফরিদপুরে ঢাকা-ভাঙ্গা এক্সপ্রেসওয়ের পাশে আমানুল্লাহর গাড়িতে তার সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। তখন আমানুল্লাহ তার মোবাইলে এমপি আনারের মরদেহের ছবি দেন। এ সময় খুনের জন্য চুক্তির টাকার অংশ কবে পাবেন, জানতে চান আমানুল্লাহ। ওই টাকা সাইদুল করিম মিন্টুর কাছ থেকে নিয়ে ২৪ মে তাকে দেয়ার আশ্বাস দেন তিনি। কিন্তু তার আগেই গ্রেফতার হন আমানুল্লাহ। আর আমানুল্লাহর কাছ থেকে এমপির মরদেহের ছবি পাওয়ার পর কাজী কামাল যান সাইদুল করিম মিন্টুর কাছে। তবে মিন্টু তার মোবাইল থেকে ছবি নিজের মোবাইলে না নিয়ে তার তিনটি মোবাইলই নিয়ে নেন। পরে ওই তিনটি মোবাইল হারিয়ে গেছে উল্লেখ করে বাবুকে থানায় জিডি করার পরামর্শ দেন মিন্টু।
ইতোমধ্যে ঝিনাইদহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইদুল করিম মিন্টুকে গ্রেফতারের পর রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করছে গোয়েন্দারা। এর আগে এই ঘটনায় আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভূঁইয়া, তানভীর ভূঁইয়া ও সিলাস্তি রহমান আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।
/এটিএম/এমএন
Leave a reply