কুড়িগ্রামে বন্যা পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি, ফসল নষ্টের শঙ্কা

|

স্টাফ করেসপনডেন্ট, কুড়িগ্রাম:

কুড়িগ্রামের দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা নদীসহ অন্যান্য নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। আজ শনিবার বিকেল তিনটা পর্যন্ত কাউনিয়া পয়েন্টে তিস্তা নদীর পানি বিপৎসীমার মাত্র তিন সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে।

শনিবার (২২ জুন) এ তথ্য জানায় জেলার পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। গতকাল শুক্রবার থেকে জেলায় বৃষ্টি না হওয়ায় এসব নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে।

তবে গত কয়েকদিনের ভারী বৃষ্টিতে জেলার ১৩শ ২০ হেক্টর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে রয়েছে। এসব ফসলের মধ্যে রয়েছে পাট, আউশ ধান, চিনা, কাউন, আমনের বীজতলা, বাদামসহ বিভিন্ন প্রকার শাকসবজি। পানি দ্রুত না নামলে এসব ফসল নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

এদিকে, নদ-নদীর পানি কমলেও জেলার নিম্নাঞ্চল ও চরাঞ্চলের পানি এখনও নামেনি। ফলে এসব এলাকার মানুষ পানিবন্দি রয়েছে। নৌকা ও ভেলা দিয়ে তা চলাচল করছে। গত এক সপ্তাহ ধরে চরাঞ্চলের ফসলি জমি পানিতে ডুবে রয়েছে। এতে জমির ফসল নষ্ট হয়ে যাবে বলে মনে করছেন কৃষকরা।

বল্লভের খাষ ইউনিয়নের কৃষক রফিকুল ইসলাম জানান, বন্যার পানিতে পাট ও সবজিসহ আমনের বীজতলা তলিয়ে গেছে। এতে ফসলগুলো নষ্ট হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। তবে বীজতলা নষ্ট হলে আমনের চাষ নিয়ে বিপাকে পড়তে হবে বলেও জানান এই কৃষক। 

অপরদিকে, বন্যার পানিতে রৌমারী উপজেলার রৌমারী সদর, যাদুরচর, দাঁতভাঙ্গা, শৌলমারী ও চরশৌলমারী ইউনিয়নের নিমাঞ্চলের ধান ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকেরা বিপাকে পড়েছেন। পাশাপাশি গাে-খাদ্যেরও তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। টানা ভারী বর্ষণ ও ভারত থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে বারবান্দা, বেড়ামারা, পাখিউড়া, বােয়ালমারী, নতুন শৌলমারী, চরবােয়ালমারী, ডাঙ্গুয়াপাড়া, গুছগ্রাম, ইটালুকান্দা, কাউনিয়ারচর,ছাটকড়াইবাড়ী, ধনতলা, চরধনতলা, শান্তিরচর,ভুদুরচর, নামা বারবান্দা,ইজলামারী, ইছাকুড়ি,পাটাধােয়াপাড়া, চর ইজলামারী, খেওয়ার চর, বকবান্দা, আলগারচর, পােলারচরসহ পাঁচটি ইউনিয়নের নিমাঞ্চলের প্রায় ১০ হেক্টর পাকাঁ ধানক্ষেত পানিতে তলিয়ে রয়েছে।

বকবান্দা গ্রামের কৃষক আমিনুল ইসলাম বলেন, পাকা ধানক্ষেত বন্যার পানিতে ডুবে গেছে। ধান কাটার লোক পাওয়া যাচ্ছে না।

কুড়িগ্রাম কৃষি বিভাগের উপ-পরিচালক আব্দুল্লাহ আল-মামুন জানান, চলতি বন্যায় জেলায় ১৩শ ২০ হেক্টর জমির ফসল পানিতে নিমজ্জিত হয়েছে। বন্যা শেষে ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রাকিবুল হাসান জানান, জেলার সব নদ-নদীর পানি কমতে শুরু করেছে। দু-একদিনের মধ্যে বন্যা পরিস্থিতির আরও উন্নতি ঘটবে। তাছাড়া জেলার ৫ থেকে ৬টি পয়েন্টের প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় ভাঙন শুরু হয়েছে বলেও জানান তিনি।

কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ জানান, বন্যা কবলিত মানুষের জন্য ১৪৪ মেট্রিক টন জিআর চাল ও নগদ ১০ লাখ ৩৫ হাজার টাকা ত্রাণ হিসাবে উপ বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এগুলো বন্যা কবলিতদের মাঝে বিতরণ করা শুরু হয়েছে।

/আরএইচ


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply