সাইফুদ্দিন রবিন:
১৯৪৯ সালে পূর্ব পাকিস্তান আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে নিখিল পাকিস্তান আওয়ামী লীগ। এরপর আওয়ামী মুসলিম লীগ হয়ে ১৯৫৫ সালে আওয়ামী লীগের আত্মপ্রকাশ ঘটে। পরে ১৯৭০ সালের জাতীয় নির্বাচনে দলটি নৌকা প্রতীকে লড়ে। পূর্ব বাংলার মানুষের কাছে একমাত্র গ্রহণযোগ্য দল হিসেবে নিজেদের প্রমাণ করে।
১৯৭১ সালে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতৃত্ব দেয়া দলটি দেশ স্বাধীনের পর থেকেই তাদের ভূমিকা পরিবর্তন করে বলে মন্তব্য করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, মাওলানা ভাসানীর সভাপতিত্বে আওয়ামী লীগ প্রথম গঠিত হয়। দলটির তখনকার চেহারা এবং বর্তমান রূপ এক নয়। এমনকি ১৯৭১ সাল পর্যন্ত শেখ মুজিবর রহমানের নেতৃত্বে থাকা আওয়ামী লীগের সাথে বর্তমান দলটির মিল নেই। তখন দলটির মধ্যে গণতন্ত্র, সাম্য ও অর্থনৈতিক বৈষম্য দূর করার কথা ছিল। এর জন্য লড়াই-সংগ্রামও করেছে তারা। পরে ১৯৭২ সালে ক্ষমতায় আসার পর দলটি তা ভুলে যায়।
এছাড়া, ১৯৭৫ সালে সব রাজনৈতিক দল বিলুপ্ত করে বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগ ‘বাকশাল’ নামে একক রাজনৈতিক দল গঠনকে তাদের রাজনৈতিক যাত্রার স্ববিরোধী বলে মনে করেন বিএনপি মহাসচিব।
এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, ১৯৭২ সালে দলটি জনগণের ওপর অত্যাচার, নির্যাতন, লুটপাট ও দুর্নীতি করেছে। এর ফলে দুর্ভিক্ষ হয়েছে। পরবর্তীতে তৎকালীন সরকার নিয়ন্ত্রণ করতে না পেরে একদলীয় শাসন ‘বাকশাল’ প্রতিষ্ঠা করে। বাকশাল আওয়ামী লীগের চিন্তা ভাবনার সাথে পুরোপুরি সাংঘর্ষিক। বাকশালের কারণে তখন আওয়ামী লীগও বিলুপ্ত হয়ে গিয়েছিল।
বিএনপি মহাসচিব আরও বলেন, ৭৫ বছর বয়সী আওয়ামী লীগ একসময় গণতন্ত্রে বিশ্বাসী থাকলেও বর্তমানে রাজনৈতিক দলের চরিত্র হারিয়ে দেউলিয়াত্বের পথে। বিরোধী দল ও মত দমনে রাষ্ট্রযন্ত্রকে অপব্যবহার করে একচ্ছত্র কর্তৃত্ববাদ প্রতিষ্ঠা করেছে দলটি।
বিএনপির এই শীর্ষ নেতা বলেন, জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র নিয়ে আসার পর আওয়ামী লীগ নিবন্ধিত হয়ে রাজনীতি শুরু করে। এরপর যখনই ক্ষমতায় এসেছে, তখনই তাদের আগের চরিত্র প্রকাশ পেয়েছে। দুঃশাসন, সন্ত্রাস ও দুর্নীতি করেছে। জনগণের ক্ষমতা কেড়ে নেয়ার চেষ্টা করেছে। প্রত্যেকটি জায়গায় দলীয় লোকজন ঢুকিয়ে দেশকে একটি দলীয় রাষ্ট্রে পরিণত করতে চলেছে আওয়ামী লীগ।
বিএনপি মহাসচিবের মতে, দীর্ঘ রাজনৈতিক পথচলায় অভিজ্ঞ আওয়ামী লীগের জনগণের ভাষা বোঝা উচিত। গণতন্ত্র, সুষ্ঠু নির্বাচন ও মত প্রকাশে বিশ্বাস রাখা উচিত।
বর্তমানে আওয়ামী লীগের সাথে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। জনগণের সাথে সম্পর্ক থাকলে দ্রুত একটি অবাধ নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি তারা বুঝতো বলেও মন্তব্য করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম।
/আরএইচ
Leave a reply