রদবদল এনে আন্দোলনে কতটুকু সফল হবে বিএনপি?

|

সাইফুদ্দিন রবিন:

ঈদের আগে হঠাৎ করে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ঢাকা মহানগর উত্তর-দক্ষিণ এবং চট্টগ্রাম ও বরিশাল মহানগরের কমিটি বাতিল করেছে বিএনপি। কেন্দ্রী যুবদলের কমিটি বাতিল, ছাত্রদলের কমিটি পুনর্গঠনের পাশাপাশি রদবদল হয় নির্বাহী কমিটিসহ বিভিন্নপদে। গঠিত হয় বিএনপি চেয়ারপার্সনের ফরেন অ্যাফেয়ার্স অ্যাডভাইজরি কমিটিও।

শুধু কি মেয়াদোর্ত্তীণ বলে এই কমিটিগুলো বাতিল হয়েছে? মহানগরের সাধারণ নেতাকর্মীরা দায় দিচ্ছেন, বিগত কমিটির দায়িত্বশীল নেতাদের ব্যর্থতাকে। আর কেন্দ্রীয় নেতারা ব্যর্থতা মেনে নিলেও বলছেন কমিটি বিলুপ্তির বিষয়টি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া।

বিষয়টি নিয়ে বিএনপির এককর্মী বলেন, ব্যর্থতার কারণেই কমিটি ভেঙে দিয়েছে। নতুন যারা দায়িত্বে এসেছেন তারা দলকে আরও শক্তিশালী করবে এটিই প্রত্যাশা তার। আরেকজন বলেন, মহানগর কমিটি কোনো নেতাকর্মীদের খবর নেয়নি। কর্মীরা কেমন আছে, যারা জেলে গেছে তাদের কী অবস্থা কোনো খবরই রাখেননি তারা।

কমিটি বিলুপ্তি ও রদবদল নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেন, পার্টি কাউকে দায়িত্ব দিলে তিনি সেটি পালন করতে না পারলে দল কি বসে থাকবে? সাংগঠনিক কাজগুলো সব দলেরই অভ্যন্তরীণ বিষয়। কমিটি ভাঙা, নতুন কমিটি দেয়া চলমান প্রক্রিয়া।

রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, দলের স্থায়ী কমিটিকে পাশ কাটিয়ে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের একক সিদ্ধান্তেই কমিটি বাতিল ও রদবদলের সিদ্ধান্ত হয়েছে। যদিও বিএনপি নেতারা সেটি মানতে নারাজ।

এ নিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, পদ বাণিজ্যের একটি গুজব আছে। জানি না এসব কতটুকু সত্য। গণতান্ত্রিক শাসন প্রতিষ্ঠা করতে হলে রাজনৈতিক দলকে হতে হবে স্বচ্ছ, দায়বদ্ধ এবং গণতান্ত্রিক। এই মানদণ্ডগুলো ব্যবহার করলে তো আমাদের দেশে কোনো রাজনৈতিক দলই নেই।

বিএনপি সূত্র জানিয়েছে, আগামী সেপ্টেম্বর-অক্টোবর থেকে নতুন করে সরকারবিরোধী আন্দোলন শুরুর চিন্তা করছে দলটি। এর আগেই দলের সব অঙ্গ ও সহযোগীসংগঠনসহ বিভিন্নপর্যায়ে সাংগঠনিক পুনর্গঠন প্রক্রিয়া শেষ করতে চায় বিএনপি। যদিও সুজন সম্পাদকের মতে, বিলুপ্তির পর বিএনপির সব কমিটি গণতান্ত্রিক উপায়ে না হলে আন্দোলনে সফলতার পরিবর্তে, নেতাকর্মীদের মধ্যে দ্বন্দ্ব আর হতাশাই বাড়বে।

বদিউল আলম মজুমদার বলেন, গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এবং নেতাকর্মীদের মতামতের ভিত্তিতে পরবর্তী নেতা নির্বাচিত করতে হবে। অপরিচ্ছন্ন কাউকে নেতৃত্বে আনা হলে এটি সুফলের চেয়ে কুফলই বয়ে আনবে।

এ অবস্থায় বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির কাউন্সিল নিয়েও আলোচনা হচ্ছে। দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরও বলছেন কাউন্সিলের বিষয়ে দল আন্তরিক। তিনি বলেন, এখানে বিরূপ পরিবেশ চলছে। দলের চেয়ারপারসন কারাগারে আছেন। ভারপ্রাপ্ত সভাপতিও দেশের বাইরে। আমাদের জন্য এখন অবস্থা প্রতিকূল। দলের মধ্যে আলোচনা করা হবে, যখন কাউন্সিল করার পরিবেশ তৈরি হবে, তখনই কাউন্সিল হবে বলে জানান তিনি।

/এনকে


সম্পর্কিত আরও পড়ুন




Leave a reply