চলমান ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপে চার ম্যাচের একটিতেও গোল পাননি পর্তুগিজ সুপারস্টার ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। সবশেষ স্লোভেনিয়ার বিপক্ষে শেষ ষোলোর ম্যাচে পেনাল্টি থেকে লক্ষ্যভেদে ব্যর্থ হওয়ার পর কান্নায় ভেঙে পড়েন সিআরসেভেন। দেখে মনে হচ্ছিল রোনালদোর লড়াইটা যেন নিজের সঙ্গে। রোনালদোর নিষ্প্রভ থাকার ম্যাচে গোলরক্ষক দিয়োগো কস্তার অসাধারণ দৃঢ়তায় স্লোভেনিয়াকে টাইব্রেকারে ৩-০ ব্যবধানে হারিয়ে ইউরোর শেষ আটে পা রাখে পর্তুগাল।
এমন ম্যাচের পর পেনাল্টি মিস নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয় রোনালদোকে। কেননা কোনো কারণে পর্তুগাল ম্যাচটা হারলে সব দায়টা যে গিয়ে তার কাঁধেই বর্তাতো। শুধু পেনাল্টি মিসই নয়, ফ্রি-কিক, এমনকি ওপেন প্লের মতো সুবর্ণ সুযোগ পেয়েও গোল করতে পারেননি তিনি। বারবার ফুঁসে উঠছিলেন নিজের ওপর। অতিরিক্ত সময়ের মাঝপথে তো কেঁদেই দেন।
ম্যাচ শেষে নিজের পেনাল্টি মিস নিয়ে রোনালদো বলেন, বেদনায় শুরু, আনন্দে শেষ। এটাই ফুটবল। মুহূর্ত, অবর্ণনীয় মুহূর্ত। লিড এনে দিতে ডিরেক্ট শটে গোল করতে পারিনি আমি। ইয়ান ওবলাক (স্লোভেনিয়ার গোলরক্ষক) ভালো সেভ দিয়েছে… আমাকে পেনাল্টিটা দেখতে হবে, জানি না আমি ভালো নাকি বাজে শট নিয়েছি। কিন্তু এ বছর একটি পেনাল্টিও মিস করিনি আমি এবং যখন এটির সবচেয়ে প্রয়োজন ছিল তখনই মিস করে ফেললাম। ওবলাক ঠেকিয়ে দিল।
জয়ের কৃতিত্বটা পুরো দলকে দিলেও কস্তাকে আলাদাভাবে প্রশংসা করেছেন রোনালদো। টাইব্রেকারে ৩ টি শট ঠেকিয়ে দিয়ে পর্তুগালকে কোয়ার্টারে নিয়ে যাওয়ার নায়ক যে তিনিই। রোনালদো বলেন, আমি মনে করি পর্তুগালের এই জয় প্রাপ্য। কারণ মাঠে আমাদের কর্তৃত্ব ছিল। স্লোভেনিয়া প্রায় পুরো খেলাটাই রক্ষণে কাটিয়েছে। যা আমাদের গোল পাওয়া কঠিন করে তুলেছে। পুরো দলকে অভিনন্দন জানাতে হবে, তবে বিশেষ করে আমাদের গোলরক্ষক যিনি তিনটি খুব ভালো সেভ করেছেন, তার কথা না বললেই নয়।
পেনাল্টি মিস করে হতাশ হয়ে পড়েছিলেন কিনা রোনালদো; এমন প্রশ্নে সিআরসেভেন বলেন, এটা ফুটবল, যে ব্যর্থ হয় সে-ই চেষ্টা করে। তবে হ্যাঁ, অবশ্যই এটা হতাশার যখন আমরা গোল করতে পারি না। কিন্তু দিনশেষে এটাই ফুটবল। তবে আমি ইতিমধ্যেই এটি (পেনাল্টি মিস) ভুলে গেছি। কারণ শেষ ফলাফলটি আমাদের পক্ষেই ছিল, আমরা জিতেছি। আর এটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তাছাড়া কখনও কখনও পেনাল্টিতে স্কোর করা কঠিন। আমি আমার ক্যারিয়ারে ২০০ এর বেশি পেনাল্টিতে গোল করেছি। ফুটবলকে কখনও কখনও ন্যায্য হতে হয় এবং আজ এটি ন্যায্য ছিল। কারণ আমি মনে করি পর্তুগাল জয়ের যোগ্য ছিল।
ক্যারিয়ারের ৩৯টি বসন্ত পেরিয়ে এখন অন্তিম পর্যায়ে দাঁড়িয়ে আছেন পর্তুগিজ সুপারস্টার। ইউরো চ্যাম্পিয়নশিপ হয় চার বছর পর পর। বয়স বিবেচনায় রোনালদোর পরের ইউরো খেলা নিয়ে কিছুটা সংশয়ে ছিলেন ভক্তরা। তবে, রোনালদো ম্যাচের পর নিজেই জানিয়ে দিলেন এটাই তার শেষ ইউরো। রোনালদো বলেন, কোনো সন্দেহ ছাড়াই এটা আমার শেষ ইউরো কাপ। আমি আবেগাপ্লুত নই। আমি সকল কিছু ছাপিয়ে এগিয়ে যাচ্ছি পূর্ণ উদ্যম নিয়ে। আমি সমর্থক, পরিবার এবং যারা আমাকে ভালোবাসে তাদের দেখে অনুপ্রেরণা পাই।
/আরআইএম
Leave a reply