ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে শুক্রবার লড়েছেন চার প্রার্থী। তারা হলেন- মাসুদ পেজেশকিয়ান, সাঈদ জলিলি, মোহাম্মদ বাকের কালিবাফ ও মোস্তফা পুরমোহাম্মদি। এই চার প্রার্থীর কেউই ৫০ শতাংশের বেশি ভোট পাননি। এর ফলে দ্বিতীয় দফা অর্থাৎ রান-অফে গড়িয়েছে নির্বাচন। আগামী শুক্রবার (৫ জুলাই) অনুষ্ঠিত হবে সেই নির্বাচন। তাতে লড়বেন সর্বোচ্চ ভোট পাওয়া প্রার্থী মাসুদ পেজেশকিয়ান এবং সাঈদ জালিলি।
আগামী শুক্রবার ইরানের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের দ্বিতীয় ধাপের ভোটগ্রহণ শুরু হবে। এর আগে মঙ্গলবার দেশটির অর্থনৈতিক সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে মুখোমুখি হয়েছিলেন প্রথম রাউন্ডে এগিয়ে থাকা জালিলি এবং পেজেশকিয়ান। সেখানে তারা যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমা দেশগুলোর আরোপিত নিষেধাজ্ঞার প্রভাব এবং বিশ্ব শক্তির সঙ্গে পারমাণবিক চুক্তি পুনরুদ্ধারের বিষয়ে নিজ নিজ প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন।
পেজেশকিয়ান একজন কার্ডিয়াক সার্জন। তিনি মনে করেন, পশ্চিমাদের আরোপিত নিষেধাজ্ঞা ইরানের অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করেছে। তিনি গত চার বছরে ৪০ শতাংশ মূল্যস্ফীতি এবং ক্রমবর্ধমান দারিদ্র্যের হার উল্লেখ করেছেন।
তিনি বলেছেন, আমরা এমন একটি সমাজে বাস করি যেখানে অনেকেই রাস্তায় ভিক্ষা করে। তার প্রশাসন ‘অবিলম্বে’ নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার চেষ্টা করার জন্য কাজ করবে এবং অর্থনীতিকে স্থিতিশীল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। এছাড়া তিনি ইরানের পারমাণবিক নিষেধাজ্ঞা কমাতেও কাজ করার অঙ্গীকার করেছেন তিনি।
অন্যদিকে পেজেশকিয়ানের প্রতিদ্বন্দ্বী কট্টরপন্থী সাঈদ জালিলি। তিনি ২০১৫ সালে ইরানের ওই পারমাণবিক চুক্তির বিরোধিতা করেছিলেন। মঙ্গলবার বিতর্কের সময় জালিলি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রকে অবশ্যই আমাদের প্রতিশ্রুতিগুলোকে সম্মান করতে হবে। নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নিতে হবে। এছাড়া পেজেশকিয়ানের পরিকল্পনায় নিষেধাজ্ঞার প্রতি কোনো নিন্দা না থাকায় জালিলি তার সমালোচনা করেছেন।
মঙ্গলবার উভয় প্রার্থীই দেশটির অর্থনীতি এবং পারমাণবিক ইস্যুতে তাদের যুক্তি-তর্ক উপস্থাপন করেছেন। বিশ্লেষকরা মনে করছেন আগামী শুক্রবারের নির্বাচনে এ দুই নেতার কে নির্বাচিত হচ্ছেন তার উপরেই নির্ভর করছে ইরানের ভবিষ্যৎ কূটনৈতিক এবং অর্থনৈতিক পরিকল্পনা।
পেজেশকিয়ান শুক্রবারের নির্বাচনে মোট ভোটের ৪২ শতাংশ ভোট পেয়েছেন। আর তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জলিলি পেয়েছেন ৩৮ শতাংশ ভোট।
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সবচেয়ে বেশি ভোট পাওয়া পেজেশকিয়ান ছিলেন একমাত্র সংস্কারপন্থী প্রার্থী। আর তার বাকী তিন প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন রক্ষণশীল বা কট্টরপন্থী। অর্থাৎ একদিকে ছিলেন সংস্কারপন্থী এক নেতা আর বিপরীতে লড়েছেন রক্ষণশীল তিন নেতা। আল-জাজিরা বলছে, এতে রক্ষণশীল নেতাদের ভোট ভাগ হয়ে গেছে তিন ভাগে।
/এমএইচআর
Leave a reply