পঞ্চগড় প্রতিনিধি:
পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলা বাংলাবান্ধা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী বিএসএফের বিরুদ্ধে কিরণ (৪৫) নামে এক হিজড়া সম্প্রদায়ের সদস্যকে মারধর করে হাত পা ভেঙে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে।
সোমবার (৮ জুলাই) সকালে আহত কিরণকে বিজিবির মাধ্যমে উদ্ধার করে প্রথমে তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স পরে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার অবস্থার আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রংপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
১১ জনের হিজরার একটি দলের সাথে কিরণও কাজের খোঁজে রাতের আঁধারে ভারতে প্রবেশের চেষ্টা করেছিলেন। ১০ জন স্থানীয় চোরাকারবাড়িদের সহযোগিতায় ভারতে যেতে পারলেও কিরণ বিএসএফের হাতে ধরা পড়ে বলে জানায় সে।
কিরণ জানান, নারায়নগঞ্জ জেলার ফতুল্লায় বাড়ি তার। ওরা ১১ জনের মতোই ১১ সানজিতা নামে এক হিজড়ার নেতৃত্বে ১১ জন কাজের খোঁজে ভারতে যাওয়ার মিশনে নামেন। বাংলাবান্ধা এলাকার কয়েকজন গরু চোরাকারবারির সাথে চুক্তিও করেন তারা। প্রতিজনকে ভারতে পার করে দেয়ার জন্য দিতে হবে ১০ হাজার টাকা করে। রোববার তারা বাংলাবান্ধার একটি বাড়িতে অবস্থান করেন। রাত ১টায় বৃষ্টির মধ্যেই তাকে সীমান্তে নিয়ে যায় চোরাকারবাড়িরা। এ সময় ১০ জন দৌড়ে ভারতে পাড়ি দিতে পারলেও পায়ে সমস্যা থাকায় পড়ে যান কিরণ। তাকে ধরে ফেলে বিএসএফ। পরে পাঁচজন বিএসএফ সদস্য মিলে লাঠি ও রাইফেলের বাট দিয়ে তাকে তিন ঘণ্টা ধরে মারধর করা হয়। একপর্যায়ে তাকে বাংলাদেশি সীমান্তে ফেলে যায় তারা। সোমবার সকাল ১০টায় বিজিবি বাংলাদেশি সীমান্ত থেকে তাকে উদ্ধার করে। পরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে রাব্বির নির্দেশনায় তাকে প্রথমে তেঁতুলিয়া উপজেলা স্বাস্ কমপ্লেক্স ও পরে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানেও তার অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাকে রংপুরে মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে রেফার করা হয়েছে।
কিরণের দাবি, ভারতে কাজের সুযোগ বেশি। রোজগারও বেশি। এ জন্য ১০ জনের সাথে আমিও ভারতে যাওয়ার চেষ্টা করছিলেন। দালালদের ১০ হাজার টাকা দিতে হয়েছে। বিজিবি সদস্যরা আমাকে উদ্ধার করে।
তেঁতুলিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফজলে রাব্বি বলেন, ওই ব্যক্তিকে বিএসএফ মারধর করে হাত পা ভেঙে দিয়েছে। বিজিবির মাধ্যমে তাকে উদ্ধার করে সমাজসেবা অধিদপ্তরের সহযোগিতায় উন্নত চিকিৎসার জন্য রংপুরে পাঠানো হয়েছে।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. রহিমুল ইসলাম বলেন, ওই ব্যক্তিকে তেঁতুলিয়া থেকে এখানে রেফার করা হয়েছে। তারসহাত মুখসহ শরীরের বিভিন্ন স্থানে আঘাতে চিহ্ন রয়েছে। তার হাতে ফ্রাকচার হতে পারে। উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে রংপুরে রেফার করা হয়েছে।
পঞ্চগড় ১৮ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল জিয়াউল হক বলেন, ওই ব্যক্তি অবৈধভাবে ভারতে অনুপ্রবেশ করার চেষ্টা করেছিলেন। বিজিবি বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি ব্যবহস্থা করেছে। অবৈধভাবে সীমানা পেরিয়ে ভারতে প্রবেশের কোনও সুযোগ নেই। আমরা এ ঘটনায় থানায় একটি জিডি করেছি। একই সাথে বিএসএফকে পতাকা বৈঠকের জন্য আহ্বান করা হয়েছে।
/এটিএম
Leave a reply