ইউরোর মেগা ফাইনাল আজ। জার্মানির বার্লিনে, রাত ১টায় মহাদেশীয় শ্রেষ্ঠত্বের মসনদ দখলের লড়াইয়ে নামবে ইংল্যান্ড ও স্পেন। ফর্ম, পরিসংখ্যান সবকিছুর বিচারে এই ম্যাচে ফেভারিট স্পেন। তবে হ্যারি কেইন, জুড বেলিংহ্যাম, ফোর্ড, সাকার মতো তারকায় ঠাসা ইংলিশ দল। সেরাটা দিতে পারলে, ৫৮ বছর পর বড় কোন ট্রফি জেতার স্বপ্ন পূরন হবে ইংলিশদের।
বার্লিনের অলিম্পিয়া স্টেডিয়াম প্রস্তুত। প্রস্তুত ফাইনালিস্ট স্পেন ও ইংল্যান্ড, সেই সাথে দুই দলের ভক্ত সমর্থক আর সারা বিশ্বের ফুটবল প্রেমিরা। ইউরোপের রাজা হবার লড়াইয় দেখার জন্য মুখিয়ে পুরো ফুটবল বিশ্ব বললে ভুল হবে না।
এবারের ইউরোতে একেরপর এক বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছে স্পেন। টুর্নামেন্ট শুরুর আগে তারুন্য নির্ভর স্পেন দলকে ট্রফি জয়ের জন্য ফেভারিট দাবি করার সংখ্যা খুব একটা ছিলো না বলাই যায়। কিন্তু লামিল ইয়ামাল, ড্যানি ওমলো, নিকো উইলিয়ামসদের দুর্দান্ত পারফরম্যান্সে ক্রোয়েশিয়া, ইতালি, আলবেনিয়া, জর্জিয়া, জার্মানি ও ফেভারিট ফ্রান্সকে হারিয়ে ফাইনালে স্প্যানিশরা। তবে লা-রোহ ফিউরিদের অবিশ্বাস্য এই ক্যাম্পেইনের মূল কারিগর মিডফিল্ডার রদ্রি। আর তাকে যোগ সঙ্গ দিয়েছেন ফ্যাবিয়ান লুইস।
অপরদিকে ৫৮ বছর ধরে বড় কোন শিরোপা জিততে পারেনি ইংল্যান্ড। সেই আক্ষেপ ঘোচাতে মরিয়া ত্রি লায়ন্সরা। ব্যাক টু ব্যাক ইউরোর ফাইনালে ওঠা দলটি শিরোপা জয়ের দাবিদার বলাই যায়। ইংল্যান্ডের মূল শক্তি অভিজ্ঞতা। কেইন, ফোর্ডেন, বেলিংহ্যাম, রাইস, স্টোনস, ওয়াকারের মাতো ফুটবলাররা ক্লাব ফুটবলে এমন চাপের বিগ ম্যাচ খেলে ও জিতে অভ্যস্ত। স্পেনের মতো ইংল্যান্ডের ইউরোর পথচলাটা ততটা দাপুটে ছিলো না। সার্বিয়ার বিপক্ষে গ্রুপ পর্বের প্রথম ম্যাচে জয় পাওয়ার পর ডেনমার্ক ও স্লোভেনিয়ার সাথে ড্র করেছিলো ইংল্যান্ড। এরপর স্লোভাকিয়ার সাথে শেষ মুহুর্তে জয়, সুইজারল্যান্ডের সাথে টাইব্রেকারে পার পাবার পর সেমিতে ইনজুরি সময়ে ডাচতে হারিয়ে ফাইনারে আসে ইংল্যান্ড।
ফাইনাল উপলক্ষে আলাদা বিবৃতি দিয়েছেন দুই কোচ। ইংলিশ কোচ সাউথগেট বলেন, আমি রুপকথায় বিশ্বাস করি না, তবে আমি স্বপ্ন আর কঠোর পরিশ্রমে বিশ্বাস রাখি। শেষ মুহুর্তের গোল, টাইব্রেকারে জয় এসব ভাগ্য নয়, পরিশ্রমের ফল। আমরা গেল ৭-৮ বছর ধরে একটা ট্রফি জেতার জন্য সব ধরনের প্রস্তুতি নিচ্ছি। নিশ্চিত ভাবে শিরোপা জিততে পারলে সেটা গল্পের অসাধারণ এক সমাপ্তি হবে।
ইল্যান্ড স্পেন মুখোমুখি পরিসংখ্যানেও এগিয়ে স্পেন। দুই দলের সবশেষ ১৪ দেখাতে ইংলিশদের ৪ জয়ের বিপরিতে ৭বার জয় পেয়েছে স্প্যানিশরা। আর ড্র হয়েছে ৩ ম্যাচ।
অপরদিকে স্প্যানিশ কোচ দে লা ফুয়েন্তে বলেন, খুব কঠিন একটা ফাইনাল হতে যাচ্ছে। দুই দলই শিরোপার দাবিদার। লড়াই করে ফাইনালে জায়গা অর্জন করেছি আমরা।এই ধরনের হাই ভোল্টেজ ম্যাচে যে দল কম ভুল করবে তারাই ট্রফি জিতবে।
ফাইনাল ম্যাচে নির্ধারিত হতে পারে গোল্ডেন বুট। এখন পর্যন্ত সমান তিনটি করে গোল করার ইংলিশ দলপতি হ্যারি কেইন আর স্পেন স্ট্রাইকার ড্যানি ওমলো গোল করে নিশ্চিত ভাবে ব্যক্তিগত এই অর্জনটা নিজের করে নিতে চাইবেন।
উল্লেখ্য, স্পেনের সামনে জার্মানিকে টপকে এককভাবে সর্বোচ্চ ইউরো জেতার রেকর্ডের হাতছানি। অন্যদিকে শিরোপা খরা কাটানোসহ গতবারের আক্ষেপ মেটানোর উপলক্ষও ইংল্যান্ডের সামনে। সবমিলিয়ে জমজমাট ফাইনালের অপেক্ষায় ফুটবলপ্রেমীরা।
/এমএইচআর
Leave a reply